শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

মাদক ও কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে মাঠে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৯ জুলাই ২০২৫, ০৩:৪৭ পিএম

শেয়ার করুন:

মাদক ও কিশোর গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে মাঠে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা

রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আদাবরের কিশোর গ্যাং, মাদক ও চাঁদাবাজির মতো অপরাধ প্রবণতার কারণে মারাত্মক বিরুপ প্রভাব ফেলছে স্থানীয় শিক্ষার্থীদের ওপর। বিশেষ করে এসব এলাকায় কিশোর বয়সীদের বিপথগামী হওয়ার হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। যার ভুক্তভোগী স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।

তাই সামাজিক আন্দোলনের অংশ হিসেবে মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে মোহাম্মদপুরের অন্তত ৭০টিরও বেশি স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে ‘সুশিক্ষা ও সহশিক্ষার মাধ্যমে মাদক, সন্ত্রাস ও কিশোর গ্যাং মুক্ত এবং ন্যায়নীতি আদর্শ মোহাম্মদপুর-আদাবর গড়ার প্রত্যয়ে’ প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে মানববন্ধন ও র‌্যালি আয়োজন করেছে।


বিজ্ঞাপন


মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সামাজিক সংগঠন আলফা স্টার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মোহাম্মদপুর ও আদাবরে স্কুল-মাদ্রাসা ও কলেজের সামনে ‘মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে’ মানববন্ধন আয়োজন করা হয়।

‘মাদক নয়, স্বপ্ন চাই’, ‘যে মুখে মা ডাকি, সে মুখে মাদক নয়’, ‘গ্যাং নয়, গড়বো ন্যায়নির্ভর সমাজ’— এমন নানা প্ল্যাকার্ড হাতে শিক্ষার্থীরা প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করে।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একটি র‌্যালি আয়োজন করা হয়। র‌্যালিটি মোহাম্মদপুরের অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ থেকে শুরু হয়ে নুরজাহান রোড, টাউন হল হয়ে তাজমহল রোড এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।

মোহাম্মদপুর-আদাবর সম্মিলিত শিক্ষক সমাজের ব্যানারে আয়োজিত র‌্যালিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক কবি আব্দুল হাই শিকদার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুস সালাম।


বিজ্ঞাপন


প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুগান্তর সম্পাদক আব্দুল হাই শিকদার বলেন, মোহাম্মদপুর  সম্পর্কে একটি খারাপ ধারণা রয়েছে, মোহাম্মদপুর মানেই সন্ত্রাস, খুন, মাদক। মোহাম্মদপুরে এতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকতে কেন এমনটা হয়। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আজ একত্রিত হয়েছে। এই শিক্ষার্থীরাই হাসিনার মতো ফ্যাসিস্টকে বিতারিত করেছে। সেই শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামলে বাংলাদেশ পাল্টে যাবে। আমি মনে করি জুলাই আন্দোলনে আবু সাঈদ প্রাণ দিয়েছিল মানবিক, গণতান্ত্রিক, ন্যায় বিচারের বাংলাদেশের জন্য। আমরা যদি দেশকে ভালোবাসি, দেশের ভালো চাই তাহলে মাদককে ‘না’ বলতে হবে। সন্ত্রাসকে ‘না’ বলতে হবে। অন্যায়কে রুখতে হবে। ন্যায়ের শাসন প্রতিষ্ঠায় আমাদের শিক্ষার্থীরা যে ভূমিকা পালন করছে সেটি অবিস্মরণীয়। এমন ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ুক।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি নেতা ও মোহাম্মদপুরের প্রবীণ রাজনীতিবিদ আবদুস সালাম বলেন, আজকে এটা কোনো রাজনৈতিক অনুষ্ঠান না। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আপনারা জানেন মোহাম্মদপুরের আইনশৃঙ্খলার চরম অবনতি হয়েছে। খারাপ চিত্রের কোনো কথা উঠলেই মোহাম্মপুরের নাম সবার আগে থাকে। মোহাম্মদপুরকে আমরা সন্ত্রাস মুক্ত করতে চাই। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করে মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে। ‘যে মুখে মা ডাকি, সে মুখে মাদক গ্রহণ না করি’, ‘মাদককে না বলি, জীবনকে হ্যাঁ বলি’ সহ নানা স্লোগান হাতে প্লেকার্ড তুলে ধরছেন শিক্ষার্থীরা। এভাবেই আমরা মাদক, সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজ মুক্ত মোহাম্মদপুর গড়ে তুলবো। আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে বাসযোগ্য করে গড়ে তুলবো।

শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. ওয়ালী উল্লাহ বলেন মোহাম্মদপুর আদাবরের শিক্ষক সমাজ ঐক্যবদ্ধ থাকলে মোহাম্মদপুর-আদাবরের সকল অন্যায় দূর হবে।

ব্যতিক্রমী এমন আয়োজনের প্রধান সময়ন্বকারী আলফা স্টার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মো. কামরুল হাসান বলেন, মোহাম্মদপুর-আদাবরের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও রাজনীতিবিদরা একসঙ্গে কাজ করলে সমাজ পরিবর্তন হতে বাধ্য।

বিইউ/এফএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর