বাংলাদেশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসন থেকে মুক্ত রাখতে ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আলেম-ওলামারা। শুক্রবার (২৫ জুলাই) বায়তুল মোকাররম মসজিদ এলাকায় একটি গণমিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশকে পশ্চিমের তাবেদার রাষ্ট্র বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে– এমন অভিযোগ তুলে ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের নিন্দাও জানানো হয়েছে ওই গণমিছিল থেকে।
বিজ্ঞাপন
এদিন বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট থেকে বের হয়ে গণমিছিলটি শাপলা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন জৈনপুরী দরবার শরীফের পীর ড. এনায়েত উল্লাহ আব্বাসী।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘বাংলাদেশকে পরিকল্পিতভাবে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। ভারতীয় আধিপত্যবাদ ও মার্কিন আগ্রাসন থেকে দেশকে মুক্ত রাখতে প্রয়োজনে আমরা ‘মার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। প্রয়োজনে আরেকটি বিপ্লব হবে বাংলাদেশে।’
দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র বন্ধ ও দেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের প্রতিবাদে ‘ইন্তিফাদা বাংলাদেশ’-এর ব্যানারে এই গণমিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে অন্য বক্তারা বলেন, শহীদের রক্ত মাড়িয়ে ক্ষমতার মসনদ দখল করা ইন্টেরিম জুলাইয়ের স্পিরিটকে ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থান ছিল ভারতীয় দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে এক রক্তাক্ত প্রতিরোধ। বাংলাদেশের জনগণ আর কোনো রাষ্ট্রের তাবেদার হতে চায় না। অথচ আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, দেশকে পরিকল্পিতভাবে মার্কিন বলয়ে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।’
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে বক্তারা জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কার্যালয় স্থাপনের তীব্র বিরোধিতা করেন। বিরোধিতার বেশ কয়েকটি কারণও তুলে ধরেন। সেগুলো হলো-
১। এই কার্যালয় বিশ্বের কোথাও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। ইসরায়েল এবং ভারত সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন করে। কিন্তু এসব দেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের কোনো কার্যালয় নেই।
২। যেসব দেশে এই কার্যালয় আছে, তারা মূলত যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ। এই কার্যালয় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করবে।
৩। পার্বত্য অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী আদিবাসী সন্ত্রাসীদেরকে মানবাধিকারের নামে এ কার্যালয় সমর্থন দেবে, যা দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ।
৪। এ কার্যালয় সমকামিতা প্রচার ও প্রসারে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত, যা এদেশের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের পরিপন্থী।
৫। পার্বত্য চট্টগ্রাম ও আরাকান কেন্দ্রিক আমেরিকান স্বার্থকে রক্ষা করবে এ কার্যালয়।
মাওলানা মীর ইদরীসের সভাপতিত্বে ও মাওলানা শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন ডা. শামসুল আরেফিন শক্তি, আহমদ রফিক, মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান গুনভীম আসিফ আদনান, মাওলানা ফখরুল ইসলাম, মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদ, আবু ত্বহা আদনান প্রমুখ।
বিইউ/এএইচ

