উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ক্যাম্পাসে প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের পর সেখানে দ্রুত ছুটে যায় সেনাবাহিনী। কিন্তু আগে থেকেই বাচ্চাদের নেওয়ার জন্য এসেছিলেন অভিভাবকরা।
তাদের মধ্যে থেকে কেউ কেউ উদ্ধার কাজে লেগে পড়েন। কেউ কেউ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আগুনে ঝাঁপ দেন। এরপর আগুন থেকে বের করে নিয়ে আসেন প্রাণপ্রিয় সন্তান সামিয়াকে।
বিজ্ঞাপন
তেমনি এক বাবার সন্ধ্যান পেয়েছে ঢাকা মেইল। নাম আব্দুর রহিম। তিনি টঙ্গী এলাকায় মাছের ব্যবসা করেন। তার দুই ছেলে এক মেয়ে। তিন সন্তানের দুজন লেখাপড়া করে প্রতিষ্ঠানটিতে।
মঙ্গলবার রাতে ঢাকা মেইলের সঙ্গে কথা হচ্ছিল আব্দুর রহিমের। তিনি বলছিলেন, স্কুল ছুটি হওয়ায় তাকে আনতে যাচ্ছিলাম। মেয়ে আমাকে ফোন করে বলে বাবা তুমি আসো। আমি স্কুল থেকে এখনই নামব। আমি ক্যাম্পাসে ঢোকার কিছুক্ষণ পরই বিমানটি মাঠে আঁচড়ে পড়ে এবং আমার মেয়ে যে ভবনটিতে ছিল সেখানে গিয়ে আঘাত করে।
তিনি বলেন, মুহূর্তে আগুন ছড়িয়ে পড়ে সেই ভবনে। দেখছিলাম, মেয়ে দ্বিতীয় তলায় আটকা পড়েছে। বারান্দায় গ্রিলের পাশে দাঁড়িয়ে চিৎকার করছে।
এরপর কী হলো জানতে চাইলে আব্দুর রহিম ঢাকা মেইলকে বলেন, ‘কী করব বুঝতে পারছিলাম না। এরই মধ্যে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ছুটে আসে। তখনও আগুন জ্বলছিল। তাদের নিয়ে দ্বিতীয় তলায় ওঠে যাই। ওঠে দেখি, মেয়ে দ্বিতীয় বারান্দায় আটকা। আগুনে পুঁড়ছে। এরপর জানালার গ্রিল কাটলো তারা। কিন্তু আমার মেয়েকে তো উদ্ধার করতে হবে। আমি নিজেই আগুনে ঝাঁপ দিয়ে ওকে বের করে আনি। এরপর সেখান থেকে মাত্র ২০ মিনিটে আমরা উত্তরার আধুনিক হাসপাতালে নেই। সেখান থেকে বিকেলে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করাই।’
বিজ্ঞাপন
আব্দুর রহিম জানান, তার তিন সন্তানের মধ্যে সামিয়া প্রতিষ্ঠানটির চতুর্থ শ্রেণিতে এবং আরেক ছেলে দশম শ্রেণিতে পড়াশুনা করে। সেই ছেলের স্কুল সেদিন তার মেয়ের আগে ছুটি হয়েছিল। ছেলে বাসায় চলে যায়। মেয়ের স্কুল ছুটি হচ্ছে এই ভেবে বাসা থেকে বের হন তিনি। কিন্তু ক্যাস্পাসটিতে পৌঁছামাত্র তার চোখের সামনেই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
তিনি আরও জানান, সামিয়ার শরীরের ২৫ শতাংশ পুঁড়ে গেছে। কণ্ঠনালীও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তিনি তার সন্তানের সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। তার মতে, সেনাবাহিনী ও ফায়ারের কর্মীরা দ্রুত ছুটে যাওয়ায় অনেককে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
এমআইকে/এএইচ

