সোমবার, ১৪ জুলাই, ২০২৫, ঢাকা

কুমিল্লায় ৩ জনকে কুপিয়ে হত্যার কারণ জানালো র‍্যাব

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৫ জুলাই ২০২৫, ০৯:৪৪ পিএম

শেয়ার করুন:

কুমিল্লায় ৩ জনকে কুপিয়ে হত্যার কারণ জানালো র‍্যাব

কুমিল্লায় একই পরিবারের তিনজনকে পিটিয়ে হত্যা ও আহত করার ঘটনায় ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। তাদেরকে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে।

শনিবার (৫ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর কাওয়ান বাজারের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার বিস্তারিত জানান র‍্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. ক এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন।


বিজ্ঞাপন


গ্রেফতারকৃতরা হলেন— বাচ্চু মিয়া (৫৫), রবিউল আওয়াল (৫৫), আতিকুর রহমান (৪২), বায়েজ মাস্টার (৪৩), দুলাল (৪৫) ও আকাশ (২৪)। এসময় তাদের কাছ থেকে তাদের কাছ থেকে চারটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিনজনকে গত শুক্রবার (৪ জুলাই) রাজধানীর বনশ্রী থেকে এবং বাকি তিনজনকেও একই রাতে গ্রেফতার করা হয়। এরপর থেকে তারা র‍্যাব হেফাজতেই ছিলেন।

জানা গেছে, গত ৩ জুলাই সকালে কুমিল্লা জেলার বাঙ্গরা বাজারের কড়ইবাড়ি এলাকায় রোকসানা আক্তার রুবি (৫৫), জোনাকী (২৪) এবং রাসেলকে (৩৩) তাদের বাড়ির সামনের রাস্তায় নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এসময় সেখান থেকে তাদের হামলা থেকে পালানোর সময় রুমা (২৭) ও রিক্তাকেও (৩২) কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। পরে নিহত রোকসানার মেয়ে রিক্তা বাদী হয়ে কুমিল্লা জেলার বাঙ্গরা বাজার থানায় ৩৬ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন।

এক প্রশ্নের জবাবে র‍্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. ক এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, সেখানে একটি মব তৈরি করে এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হয়েছে। তবে এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে যারা মব তৈরি করে ইন্ধন দিয়েছে তাদেরকে কিন্তু গ্রেফতার করা হয়েছে। এখনো গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে। 

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, মব তৈরি করে আইন কারও হাতে তুলে নেয়া উচিত না। কারও উচিত হবে না মব তৈরি করে এমন ঘটনা ঘটনো। মবটা যেন তৈরি না হয় এজন্য আমরা সবাইকে মেসেজ দিচ্ছি। কেউ যেন আইন হাতে তুলে না নেয়। তবে সেখানে কোন প্রেক্ষাপটে মবটা তৈরি হয়েছিল তা তদন্তের পর বলা যাবে বলে জানান তিনি।


বিজ্ঞাপন


মোবাইল চোরকে মারধর, মামলা করায় আক্রোশে হামলা করে তিনজনকে হত্যা

র‍্যাব-১১ এর অধিনায়ক লে. ক এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানান, গত ১ জুলাই সকালে রবিউল নামে এক স্কুল শিক্ষকের বাড়ি থেকে হায়দরাবাদ এলাকার অটোরিকশা চালক বোরহানকে আটক করা হয়। পরে ওই বাড়ির লোকজন তাকে বেধড়ক মারধর করেন। পরে খবর পেয়ে ছুটে আসেন তার বাবা। তিনি এসে তাদের কাছে ক্ষমা চান ছেলের ভুলের জন্য কিন্তু তারা তার কথা শোনেনি। পরে এ ঘটনায় বোরহানের বাবা একটি মামলা দায়ের করেন। 

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, ইতোমধ্যে খবর আসে সেই বোরহানকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তাকে সম্ভবত হত্যা করা হয়েছে। এর পরদিন সকালে হত্যাকারীরা বোরহানের বাড়িতে যান। তারা তাদের বাড়িতে থাকা লোকজনকে ডেকে তোলেন। এসময় প্রথমে বেরিয়ে আসে রোকসানা আক্তার রুবি। বাড়ি থেকে বের হলে তার মাথায় রামদা দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করে তারা। পরে নিহত জোনাকী মাকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে এলে তাকেও নির্মমভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। মা ও বোনের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে রাসেল ওই সময় মোটরসাইকেলযোগে তার বাড়ির সামনে উপস্থিত হলে গ্রেফতারকৃতরা মোটরসাইকেলে থাকাবস্থায় নির্মমভাবে তাকেও কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এসময় রিক্তা ও রুমাকেও গুরুতর আহত করেন তারা। এ ঘটনার পর থেকে হামলাকারীরা পলাতক ছিল। তাদেরকে কুমিল্লা জেলার বাঙ্গরা বাজার থানায় হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

এমআইকে/এমএইচটি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর