দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তাদের নাম-পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণা করছিল একটি চক্র। কখনো দুদকের পরিচালক, কখনো আবার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিক সেজে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছিল টাকা। অবশেষে র্যাব ও পুলিশের যৌথ অভিযানে গ্রেফতার হয়েছে চক্রটির মূলহোতা সেলিমসহ পাঁচজন।
দুদকের নিজস্ব অনুসন্ধানের ভিত্তিতে এই প্রতারক চক্রের খোঁজ মেলে। সর্বশেষ গ্রেফতার করা হয়েছে সোহাগ পাটোয়ারী নামের এক ব্যক্তিকে। এর আগের দিন চক্রের চার সদস্যকে আটক করা হয়। দুদকের এক পরিচালক (পুলিশ সুপার পদমর্যাদা) এর নেতৃত্বে গঠিত পাঁচ সদস্যের একটি অনুসন্ধান দল অভিযানে সহায়তা করে।
বিজ্ঞাপন
গত ২৪ জুন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহর একটি ফেসবুক পোস্টের সূত্র ধরে দুদক এই তদন্ত শুরু করে। অনুসন্ধানে উঠে আসে, অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন ধরে দুদকসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে হোয়াটসঅ্যাপ ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া পরিচয়ে সাধারণ মানুষকে প্রতারণা করছিল।
গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন— মো. সেলিম (৪০), মো. তরিকুল ইসলাম (৪০), মো. আতিক (৩৮), মো. আব্দুল হাই সোহাগ (৩৫) এবং সোহাগ পাটোয়ারী (৪০)। তারা সবাই ঢাকার মুগদা থানাধীন দক্ষিণ মান্ডা এলাকায় বসবাস করতেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ নোয়াখালী, বাগেরহাট ও লক্ষ্মীপুর জেলার স্থায়ী বাসিন্দা।
গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে জব্দ করা হয় একটি সনি ডিজিটাল এইচডি ক্যামেরা, বুম মাইক, সেলফি স্টিক, দুটি পাসপোর্ট, সমকাল পত্রিকার নামে একটি ভুয়া আইডি কার্ড, ‘সমকাল’, ‘এশিয়ান টিভি’ ও ‘এফসি টিভি’ লেখা ভিজিটিং কার্ড, সোনালী ব্যাংকের চেক বই, ছয়টি মোবাইল ফোন ও ২৩টি সিমকার্ড।
দুদক সূত্র জানায়, আসামিরা জিজ্ঞাসাবাদে দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার কথা স্বীকার করেছেন। তারা নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে বিভিন্ন কর্মকর্তার নাম ও ছবি ব্যবহার করে প্রতারণা করতেন। নানা সুবিধা পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল অর্থ।
বিজ্ঞাপন
ঘটনার বিষয়ে রমনা মডেল থানায় ২৯ জুন একটি মামলা (নম্বর–২১) করা হয়েছে। দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন বলেন, “মামলাটি আমরা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। এই চক্রের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত থাকলে, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এমআই/ইএ