সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ত্রিপুরা থেকে ফিরলেন ছয় নারীসহ ১৪ বাংলাদেশি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২০ জুন ২০২৫, ১১:১২ এএম

শেয়ার করুন:

ত্রিপুরা থেকে ফিরলেন ছয় নারীসহ ১৪ বাংলাদেশি

ভারতে অবৈধ অনুপ্রবেশের পর ত্রিপুরা রাজ্যে আটক ছয় নারীসহ ১৪ বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) দুপুর ১টায় ত্রিপুরার আগরতলা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া আন্তর্জাতিক ইমিগ্রেশন চেকপোস্ট হয়ে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেন।


বিজ্ঞাপন


আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাই-কমিশনের মাধ্যমে তাদেরকে নিজ নিজ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রত্যাবাসনের সময় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের মানবপাচার প্রতিরোধ প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের জরুরি সহায়তা হিসেবে খাবার, কাউন্সেলিং সেবা এবং যাতায়াতের খরচ হিসেবে নগদ অর্থ দেওয়া হয়।

এ সময় দুই দেশের সীমান্তে উপস্থিত ছিলেন আগরতলা হাই-কমিশনের কনস্যুলার অ্যাসিস্ট্যান্ট ওমর শরীফ, আখাউড়ার উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জি এম রাশেদুল ইসলাম, ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি আব্দুস সাত্তার, আইসিপি ক্যাম্প কমান্ডার মো. আনোয়ার হোসেন, বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক মাইগ্রেশন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং প্রত্যাবাসিতদের স্বজনরা।

দীর্ঘদিন পর স্বজনদের পেয়ে আখাউড়া স্থলবন্দরের শূন্যরেখায় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এসময় স্বজনেরা তাদের আপনজনদের জড়িয়ে ধরেন। 

ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রামের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান জানান, ত্রিপুরায় অবৈধ প্রবেশের অভিযোগে গত এক-দেড় বছরের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে এই ১৪ বাংলাদেশিকে আটক করা হয়েছিল। স্থানীয় আদালতের নির্দেশে তাদের পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার নরসিংগর কারাগারে পাঠানো হয়। পরে, আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন তাদের নাগরিকত্ব যাচাই শেষে দেশে প্রত্যাবাসনের জন্য ভারত সরকারের অনাপত্তি সনদ গ্রহণ করে।


বিজ্ঞাপন


আগরতলার বাংলাদেশ মিশনের কনস্যুলার অ্যাসিস্ট্যান্ট ওমর শরীফ বলেন, ভারতীয় পুলিশ বিভিন্ন সময় অবৈধ অনুপ্রবেশের জন্য এই ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করে এবং পরে আদালতের নির্দেশে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। সাজা শেষে তারা আজ দেশে ফিরেছেন। দেশে ফেরত আসা সবাই পশ্চিম ত্রিপুরার নরসিংগরের ডিটেনশন সেন্টারে অবস্থান করছিলেন।

তিনি আরও বলেন, ‌আজ আমরা ১৪ বাংলাদেশিকে প্রত্যাবাসন করাতে পেরে সত্যিই আনন্দিত। গত ১৫ মে আমরা ভারত থেকে ১১ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফিরিয়ে এনেছিলাম। নাগরিকত্ব নিশ্চিত হলেই আমরা চেষ্টা করছি বিদেশে আটকে পড়া বাংলাদেশিদেরকে দেশে ফেরত আনার।

দেশে ফেরাদের একজন খুলনার কয়রার মফিজুল ইসলাম জানান, দেশে থাকত রিকশা চালিয়ে ও ইটের ভাটায় কাজ করে সংসার চালিয়েছি। অসুস্থতার কারণে সেই কাজ বাদ দিতে হয়। পরে স্থানীয় এক দালালের মাধ্যমে ভালো কাজের আশ্বাস পেয়ে ২১ মাস বয়সী মেয়ে আঁখি ইসলাম ও স্ত্রী তাহিয়াতুন নেসাকে নিয়ে ২০২৪ সালে ভারতে গিয়েছিলেন তিনি। যাওয়ার পথেই ভারতীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আটক করে তাদের। 

ফিরে আসা অন্য চার নারীরা হলেন চাঁদপুরের আশা মনি, গোপালগঞ্জের লিজা খানম, নড়াইলের লিজা খাতুন ও নারায়ণগঞ্জের পাপিয়া আক্তার। প্রত্যাবাসিত পুরুষদের মধ্যে রয়েছেন ফেনীর মো. ইসমাইল ও হারুন মজুমদার, নেত্রকোনার খালিয়াজুড়ির সঞ্জয় সরকার ও স্বপন সরকার। এছাড়া সুনামগঞ্জের বিপুল দাস, যিশু দাস ও সুষেণ দাশও ভারতের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে দেশে ফিরেছেন আজ। 

আখাউড়া সীমান্তে এই পরিবারগুলোকে গ্রহণের সময় উপস্থিত ব্র্যাকের ডেপুটি ম্যানেজার শায়লা শারমিন জানান, ‘আমরা তাদেরকে দু’দেশের শূন্যরেখায় স্বাগত জানিয়েছি। পরে জরুরি সহায়তা হিসেবে তাদেরকে আমরা খাবার, কাউন্সেলিং সেবা ও যাতায়াতের জন্য অর্থ সহায়তা দিয়েছি। ভবিষ্যতে তাদের সমাজের মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে ব্র্যাকের মাইগ্রেশন প্রোগাম তাদের পাশে থাকবে।’

এমআইকে/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর