শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

৩৫ বছরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় উঠে আসবে, আশাবাদী সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৯ জুন ২০২২, ০৪:১৬ পিএম

শেয়ার করুন:

৩৫ বছরে পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় উঠে আসবে, আশাবাদী সরকার

সরকার আশা করছে যে- ‘ভালোভাবে হিসেব করা’ একটি টোল হারের মাধ্যমে আগামী ৩৫ বছরের মধ্যে পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় পুনরুদ্ধার করা সম্ভব হবে। আজ রোববার (১৯ জুন) কর্মকর্তরা এ কথা বলেন। 

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ)’র এক কর্মকর্তা বলেন, ‘টোলের হার একটি গণনা পদ্ধতিতে নির্ধারণ করা হয়েছে- যাতে করে আগামী ৩৫ বছরের মধ্যে দেশের বৃহত্তম সেতুটির নির্মাণ ব্যয় পুনরুদ্ধার করা যায়।’ 


বিজ্ঞাপন


তিনি বলেন, সেতুটি অভ্যন্তরীণ অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে, বিদেশী ঋণ বা যে কোনও ধরণের অনুদান বাতিল করে, অর্থ মন্ত্রণালয় বিবিএকে ৩০ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে- যা ‘আমাদের ৩৫ বছরের মধ্যে এক শতাংশ সুদের হারে পরিশোধ করতে হবে।’

‘আমাদের ১৪০ ত্রৈমাসিক কিস্তিতে ঋণের এক শতাংশ করে পরিশোধ করতে হবে’ উল্লেখ করে এই কর্মকর্তা বলেন, ভ্যাট, ট্যাক্স, সেতুর ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি মাঝে মাঝে নদী শাসনের বিষয়গুলো বিবেচনা করে টোলের হার নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিবিএ’র একটি বিবৃতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মেগা-কাঠামোর নকশা প্রণয়নের সময় নেওয়া ২১১ কোটি টাকা ঋণের বিপরীতে বাড়তি ৩৪০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হবে। 

এতে বলা হয়, সেতু ব্যবহারকারী যানবাহন অপারেটরদের তারা ফেরিতে যে ভাড়া দিতেন, তার চেয়ে গড়ে ৫০ শতাংশ বেশী দিতে হবে।


বিজ্ঞাপন


বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) মাওয়া এবং জাজিরার মধ্যে ফেরিতে যানবাহন পারাপারে ২০২০ সালের নভেম্বরে ৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা আয় করেছে, বিবিএ এটিকে অন্যতম ভিত্তি ধরে মাসে ৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা টোল আদায়ের আশা করছে। 

পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘তবে এটি আপাতত একটি প্রাথমিক অনুমান এবং ৩৫ বছরে নির্মাণ ও পরবর্তী রক্ষণাবেক্ষণের খরচ বোঝার জন্য এই পরিমাণ যথেষ্ট নয়।’

তিনি আরো বলেন, যানবাহন চলাচল বাড়বে এবং অগামী বছরগুলোতে সময়ে সময়ে টোলের হার পুননির্ধারণ করা হবে, যেমনটি বঙ্গবন্ধু সেতুর ক্ষেত্রে হয়েছে।

বিবিএ কর্মকর্তারা জানান, নির্ধারিত সময়ের আগেই বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সেতুর নির্মান ব্যয় পুনরুদ্ধার হয়েছে।
২০১০ সালে একটি প্রকল্প পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের বিশদ অর্থনৈতিক ও আর্থিক হিসাব অনুযায়ী- আগামী বছরগুলোতে সেতুতে মাসিক টোল আদায় হবে ১৩৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা এবং বছরে আয় হবে ১ হাজার ৬০৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। 

অর্থ বিভাগ এবং বিবিএ’র মধ্যে চুক্তির অধীনে ৩৫ বছরের ঋণ পরিশোধের কিস্তি হিসেবে, সেতুতে যানবাহন চলাচলের প্রথম বছরে ৫৯৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে- যা বছরে বেড়ে দাঁড়াবে ১ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা।

সরকার গত ১৭ মে পদ্মা সেতুর জন্য টোলের হার নির্ধারণ করে একটি গেজেট বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে, সেতুটি ২৫ জুন যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয়া হবে।

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী একটি মোটর সাইকেলের টোল হার ১০০ টাকা, কার এবং জীপের জন্য ৭৫০ টাকা, পিকআপ ভ্যানের জন্য ১ হাজার ২০০ টাকা, মাইক্রোবাসের জন্য ১ হাজার ৩০০ টাকা, ছোট বাস (৩১ আসনের) ১ হাজার ৪০০ টাকা, একটি মাঝারি বাস ২ হাজার টাকা, বড় বাস (৩-অ্যাক্সেল) ২ হাজার ৪০০টাকা।

ছোট ট্রাকের (৫টন পর্যন্ত) জন্য ১ হাজার ৬০০ টাকা, মাঝারি ট্রাকের (৫ টন থেকে ৮টন) ২ হাজার ১০০ টাকা, মাঝারি ট্রাক (৮ থেকে ১১টন) ২ হাজার ৮০০ টাকা, ট্রাক (৩-অ্যাক্সেল) ৫ হাজার ৫০০টাকা এবং একটি ট্রেলারের (৪-অ্যাক্সেল) জন্য ৬ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। 

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, চার অ্যাক্সেলের উপরে প্রতিটি ট্রেলারে প্রতিটি অতিরিক্ত অ্যাক্সেলের জন্য ৬ হাজার টাকার সঙ্গে ১ হাজার ৫০০ টাকা যোগ হবে। 

একেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর