ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। এই সাক্ষাৎ বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়ন, মানবাধিকার এবং পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়গুলোকে কেন্দ্র করে অনুষ্ঠিত হয়।
ড. ইউনূস বৃহস্পতিবার (১২ জুন) ব্রিটেনের রাজার সঙ্গে একান্ত সাক্ষাতের জন্য পৌঁছালে তিনি তাকে স্বাগত জানান। পরে প্রায় আধা ঘণ্টা তারা বৈঠক করেন।
বিজ্ঞাপন
অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে এই বৈঠকে অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়ন খাতে বিভিন্ন প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তৃতীয় চার্লস এই সাক্ষাতে বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছেন এবং ইউনূসের কাজের প্রশংসা করেছেন।
উন্নয়ন ও পরিবেশ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব
অধ্যাপক ইউনূস সাক্ষাতে তৃতীয় চার্লসকে বাংলাদেশের সামাজিক উদ্যোগগুলো, বিশেষত গ্রামীণ ব্যাংক এবং ক্ষুদ্রঋণ প্রোগ্রামের সাফল্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়ে বলেন, ‘‘আমরা ক্ষুদ্রঋণকে একটি শক্তিশালী উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে দরিদ্র মানুষের জীবনমান উন্নয়ন করছি।’’
এছাড়া, অধ্যাপক ইউনূস রাজা তৃতীয় চার্লসকে পরিবেশ সংরক্ষণ এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বাংলাদেশের উদ্যোগ সম্পর্কে অবহিত করেন এবং এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
বিজ্ঞাপন
রাজা তৃতীয় চার্লসের প্রতিক্রিয়া
রাজা তৃতীয় চার্লস এই সাক্ষাৎ নিয়ে বলেন, ‘‘বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আমার গভীর শ্রদ্ধা রয়েছে এবং তাদের সংগ্রাম ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ড আমাকে অনেক অনুপ্রাণিত করে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিপর্যয়ের মত বিষয়গুলো মোকাবেলা করার জন্য আমাদের একত্রে কাজ করা অত্যন্ত জরুরি।’’
এছাড়া, তিনি বাংলাদেশে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পে ব্রিটেনের সহায়তার বিষয়েও আলোচনা করেন এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে ব্রিটিশ সরকারের প্রস্তুতির কথা জানান।
বিষয়গুলো নিয়ে ভবিষ্যৎ সহযোগিতার আশাবাদ
এই সাক্ষাৎ বাংলাদেশ এবং ব্রিটেনের মধ্যে নতুন সহযোগিতা ও সম্পর্কের সেতুবন্ধন তৈরি করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিশেষত, তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে আলোচনা শেষে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রকল্প ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার জন্য বাংলাদেশ এবং ব্রিটেনের যৌথ উদ্যোগের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
এছাড়া, অধ্যাপক ইউনূস ও তৃতীয় চার্লসের মধ্যে আলোচনা আরও নতুন আন্তর্জাতিক উদ্যোগ, বিশেষত সামাজিক ব্যবসা এবং পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে বিশেষ মনোযোগ কেন্দ্রীভূত হওয়ার আশা প্রকাশ করেছে।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও তৃতীয় চার্লসের এই সাক্ষাৎ ভবিষ্যতে বাংলাদেশের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক শক্তিশালী করার একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হবে।
ইএ

