মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫, ঢাকা

নগরজুড়ে পরিবহন সংকট, পকেট কাটছে সিএনজি-রাইডশেয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০ জুন ২০২৫, ০১:৩১ পিএম

শেয়ার করুন:

নগরজুড়ে পরিবহন সংকট, পকেট কাটছে সিএনজি-রাইডশেয়ার

ঈদের লম্বা ছুটিতে এখনও ফাঁকা রাজধানী ঢাকা। জমে ওঠেনি আগের চিরচেনা শহর। এবার ছুটি বেশি থাকায় ঢাকায় ফেরারও তাড়াহুড়ো নেই। তবে ধীরেসুস্থে ফিরছে কিছু কিছু মানুষ। এদিকে নগরজুড়ে দেখা দিয়েছে গণপরিবহন সংকট। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে যাত্রীদের পকেট কাটছে একশ্রেণীর অসাধু সিএনজি ও বাইক রাইড শেয়ারকারীরা।

যাত্রীদের অভিযোগ, ২০-২৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থেকেও গাড়ি পাচ্ছেন না। অনেকে বাধ্য হয়ে সিএনজি বা রাইড শেয়ারে যাচ্ছেন গন্তব্যে। কিন্তু এসব পরিবহন হাঁকছে অতিরিক্ত ভাড়া। দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। অন্য সময়ে যে ভাড়া ২০০ টাকা রাখা হতো তা এখন ৪০০ টাকা নিচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


ঈদের পর থেকে রাজধানী এবং আশেপাশের সড়কগুলো বাসের স্বল্পতায় একপ্রকার সংকটাপন্ন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন যাত্রীরা।

মঙ্গলবার (১০ জুন) রাজধানীর চিটাগং রোড, শনিরআখড়া, যাত্রাবাড়ী এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রাজধানীর বিভিন্ন কোম্পানির গণপরিবহন দূরপাল্লার যাত্রী আনা-নেওয়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। কারণ ঈদের ছুটিতে এখনও বেশিরভাগ মানুষ ঢাকায় অবস্থান করছে। 

দয়াগঞ্জের বাসিন্দা মোস্তফা আহমেদ মহাখালীতে একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাবেন। কিন্তু কোনো গাড়ি পাচ্ছেন না। বাধ্য হয়ে ৪৫০ টাকা সিএনজি ভাড়া দিয়ে হাসপাতালে যান তিনি। 


বিজ্ঞাপন


এদিকে ঈদের ছুটি কাটিয়ে ঢাকা ও আশেপাশের এলাকায় কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন অনেকে। যানবাহন সংকটকে পুঁজি করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে বাস, সিএনজি অটোরিকশা ও রাইডশেয়ারিং সেবাদাতারা। এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ যাত্রীরা।

একাধিক যাত্রী অভিযোগ করেছেন, ৫০০ টাকার পথের জন্য তাদের কাছ থেকে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে।

রনি নামের এক যাত্রী ঢাকা মেইলকে বলেন, স্বাভাবিক সময়ে ৩০০ টাকার রাইড এখন ৮০০–১০০০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। তাদের সঙ্গে এখন দর-দামও করা যাচ্ছে না। কারণ বাইকের তুলনায় যাত্রী বেশি। সবাই চাই গন্তব্য পৌঁছাতে।

যাত্রীদের ভোগান্তির কথা জানিয়ে নাসরিন বেগম বলেন, সিএনজি চালককে অনুরোধ করে ৪০০ টাকার পথ ১২০০ টাকায় যেতে রাজি হতে হলো। না গেলে পৌঁছাতেই পারতাম না।

সংশ্লিষ্টরা বলেন, এ ধরনের পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। সরকারের দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর উচিত মনিটরিং বাড়ানো। ভাড়ার নির্দিষ্ট সীমা নির্ধারণ ও প্রয়োগ নিশ্চিত করা। সিএনজি-রাইডশেয়ার অ্যাপের ওপর সরকারি তদারকি জোরদার করা।

কুমিল্লা থেকে আসা লোকমান মিয়া বলেন, বাস থেকে সায়েদাবাদে নেমেছি। মগবাজারে যাওয়ার জন্য সিএনজি খুঁজছি। তারা ভাড়া চাচ্ছে ৫০০ টাকা। যা আগে ১৫০-২০০ টাকা ছিল। অতিরিক্ত ভাড়ার এই অরাজকতা বন্ধ করতে সরকারের পাশাপাশি নাগরিক সচেতনতা ও সহযোগিতার অনুরোধ জানাই।

CNG

ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা, তারপরও মিলছে না বাস

ঈদের পরদিন থেকেই রাজধানীতে ফেরা মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তবে পরিবহন ব্যবস্থা তা সামাল দিতে ব্যর্থ হচ্ছে প্রতিদিনই। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাজীপুর, বাইপাইল, সাভার, জিরানী বাজারসহ ঢাকার আশপাশেরও চিত্র একই।

বাইপাইল থেকে শামসুর রহমান জানান, বাস না পেয়ে অনেকেই বাধ্য হয়ে বেছে নিচ্ছেন সিএনজি ও রাইডশেয়ার। কিন্তু এই সুযোগে তারাও দিচ্ছেন চরম ধোঁকা। অনেক চালক বলছেন, ঈদের পর এটাই মৌসুম, যা পারি তাই নেই।

নাগরিক ভোগান্তি ও অব্যবস্থাপনার বিষয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী ঢাকা মেইলকে বলেন, আমাদের ভাড়া ডিজিটাল হওয়া দরকার। এতে কার্ডের মাধ্যমে ভাড়া পরিশোধ করবে। যাত্রী হয়রানি ও বিড়ম্বনা দূর হবে। 

মেট্রোরেলের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, মেট্রোরেলে ডিজিটাল লেনদেন করা গেলে গণপরিবহন ও লোকাল ট্রান্সপোর্টেও এটা সম্ভব। আমাদেরকে ডিজিটালেই ফিরতে হবে। এতে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাবে।

এমআর/এফএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর