জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি, সমুদ্রের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য ঝুঁকি বৃদ্ধি, কৃষি, অর্থনীতি, প্রাণীসম্পদ ও মৎস্য উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। অন্যদিকে শিল্পের বর্জ্য ফেলে পানি ও মাটি দূষণ করা হচ্ছে। প্লাস্টিক মাটি ও পানি দূষণের পাশাপাশি জলাবদ্ধতা তৈরি করছে। তাই প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ, প্লাস্টিক ব্যবহার ও যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলা রোধ, বৃক্ষরোপণের কাজ নিজ বাসা ও অফিস থেকে শুরু করা এবং স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করার তাগিদ দিয়েছেন পরিবেশবিদরা।
প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধ করুন, পরিবেশ সম্মত বিশ্ব গড়ুন এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বিশ্ব পরিবেশ দিবস-২০২৫ উপলক্ষে সোমবার (২ জুন) অ্যাসোসিয়েশন অব ডেভেলপমেন্ট এজেন্সিজ ইন বাংলাদেশ (এডাব) এবং বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)-এর যৌথ উদ্যোগে এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
এডাবের চেয়ারপারসন আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে ও এডাব পরিচালক একেএম জসীম উদ্দিনের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এডাবের কর্মসূচি পরিচালক কাউসার আলম কনক।
আলোচনায় বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি, সমুদ্রের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার ফলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বৃদ্ধি, স্বাস্থ্য ঝুঁকি বৃদ্ধি, কৃষি, অর্থনীতি, প্রাণীসম্পদ ও মৎস্য উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। শিল্পের বর্জ্য ফেলে পানি ও মাটি দূষণ করছে। প্লাস্টিক মাটি ও পানি দূষণের ধারাবাহিকতায় জলাবদ্ধতা তৈরি করছে। দূষণের মাইক্রোপ্লাস্টিক ও অন্যান্য কেমিক্যাল মানুষ ও প্রাণির শরীরে প্রবেশ করে ক্যান্সারসহ বিভিন্ন জটিল মারণব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে।
তারা আরও বলেন, পরিবেশ রক্ষায় জনসচেতনতার অভাব, কার্যকর আইন প্রয়োগে দুর্বলতা, প্লাস্টিকের বিকল্প পণ্যের মূল্য বেশি ও পরিবহন সহজলভ্য, কোম্পানিগুলোর একক ব্যবহার যোগ্য প্লাস্টিক উৎপাদনে নিয়ম মানা হচ্ছে না।
বক্তারা পরিবেশ রক্ষায়, প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ, প্লাস্টিক ব্যবহার ও যত্রতত্র প্লাস্টিক ফেলা রোধ, বৃক্ষরোপনের কাজ নিজ বাসা ও অফিস থেকে শুরু করা এবং স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে সচেতনতামূলক কার্যক্রম করা ও তাদেরকে এই কাজে সম্পৃক্ত করার তাগিদ দেন।
বিজ্ঞাপন
একইসঙ্গে বেশি করে গাছ লাগানো ও গাছ কাটা বন্ধ করা, ছাদ কৃষিকে উৎসাহিত করা, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা বৃদ্ধি, শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক ভারি বর্জ্য পানিতে না ফেলতে ও ইটিপি প্ল্যান বাস্তবায়নে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ, ভূগর্ভস্থ পানি ব্যবহার কমানো ও কৃষি জমি রক্ষা, প্লাস্টিক রিফিলিং ও পুনর্ব্যবহারের মাধ্যমে আয়বর্ধক উদ্যোগ হাতে নিতে সরকার ও শিল্প প্রতিষ্ঠানকে উৎসাহিত করার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
এছাড়াও স্থানীয় সরকারের প্লাস্টিক রিইউজ, রিসাইকেল ও রিডিউজ কার্যক্রমে তৎপরতা বৃদ্ধি, প্লাস্টিক দূষণের বিরুদ্ধে স্থানীয় পর্যায়ে পুরস্কারভিত্তিক প্রতিযোগিতা আয়োজনের সুপারিশ করেন বক্তারা।
অন্যান্যদের মধ্যে আলোচক হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সভাপতি ড. নূর মোহাম্মদ তালুকদার, ওয়ার্ক ফর বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী, বায়ুমন্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার, কোস্ট ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম প্রমুখ।
বিইউ/এফএ