আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলা পশুরহাটে আসতে শুরু করেছে কোরবানির পশু, বিশেষ করে গরু। এখন হাট জমে ওঠার অপেক্ষা। শনিবার (৩১ মে) পুরোদমে বেচাকেনা শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তার আগেই হাটে আসছে উৎসুক জনতা। অনেকে আগাম গরুর দাম জানার জন্য করছেন ঘোরাফেরা।
শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে সরেজমিন গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
বিজ্ঞাপন
পাবনার সাঁথিয়া থেকে ২১টি গরু নিয়ে এসেছেন জিয়া নামে একজন। সবগুলোই দেশীয়ভাবে পালিত এবং শাহীওয়াল জাতের। তার মতে, হাটে আগে এলে আগে গরু বিক্রি করে চলে যাওয়া যায়। এ কারণে তারা হাট শুরুর একদিন আগেই চলে এসেছেন। এছাড়া আগে এলে হাটে গরু বিক্রির জন্য ভালো জায়গাও পাওয়া যায়।
এই প্রতিবেদকের কথা হয় জিয়ার সঙ্গে। তিনি জানান, তার গরুগুলো বেশ বড়। প্রতিটি গরু তিনি তিন লাখের উপরে বিক্রি করতে চান। কারণ সারা বছর পালন করে হাট পর্যন্ত আনাসহ প্রতিটি গরুর পেছনে তার খরচই হয়েছে প্রায় ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ফলে তিন লাখে বিক্রি না হলে তার লোকসান হবে।
বিজ্ঞাপন
নওগাঁর সাপাহার থেকে এসেছেন রিয়াজুল। তিনিসহ ৪১ জন গরুর বেপারী এ হাটে এসেছেন। সবাই এক তাবুর নিচেই থাকা ও গরু রাখার জায়গা করেছেন।
রিয়াজুল বলছিলেন, সকালে নেমে এখনো বিশ্রাম নিচ্ছি। এবার গরুর বাজার কেমন, কোনো কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না তিনি। শনিবার থেকে হার্ট শুরু হতে পারে বলে মনে করছেন রিয়াজুল। হাট কর্তৃপক্ষ নাকি তাদের এমনটাই জানিয়েছে।
রিয়াজুলেল সঙ্গে আলাপকালেই মাইকে ভেসে আসছিল হার্ট ইজারাদার কর্তৃপক্ষের পক্ষে হাটের নানা নির্দেশনার কথা। তখনো বসিলা হাটে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা ট্রাক ঢুকছিল। ট্রাক থেকে গরুর নামাতে ব্যস্ত ব্যাপারীর লোকজন। কেউ খুঁটিতে গরু বাধছেন, আবার কেউ বাধা গরুকে খাবার দিচ্ছেন। সব মিলে হাট শুরুর আগের দিন বেশ ব্যস্ততায় কাটছে ব্যাপারী এবং তাদের সহযোগীদের।
মোহাম্মদপুর বেড়িবাঁধ লাউতলা থেকে হাটে যাওয়ার সড়কটি অর্ধেক পাকা বাকিটা কাঁচা হাওয়ায় কাদায় ভরে গেছে। এ অবস্থা থাকলে হাটে ক্রেতা কম আসবে বলে মনে করছে অনেকে।
হাট ইজারাদারের লোকজনরাও ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ হাটে আসা বেপারীদের জায়গা দেখিয়ে দিচ্ছে। কেউ আবার সিসি ক্যামেরা লাগাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। হাটে আসা বেপারীরা আজ তাদের গরুর যতœ নিতেই ব্যস্ত। গরুর জন্য খাবার তৈরি, বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে ত্রিপল দিয়ে ঘর তৈরিতে করছেন তারা।
বসিলা হাটে শুক্রবার (৩০ মে) সকাল থেকে এখন পর্যন্ত ৫০০ শতাধিক গরু ঢুকেছে বলে জানান রুবেল নামে এক ইজারাদারের পক্ষের লোক। এ হাট প্রতি বছর আগাম শুরু হয়। তবে এবার ব্যতিক্রম। আগামী ১ জুন থেকে হাট শুরুর জন্য কর্তৃপক্ষের তোড়জোড় আর ব্যস্ততা চলছে।
হাটে গরু দেখে বেড়াচ্ছিলেন অনেকে। তাদের মধ্যে কয়েকজন তরুণের সঙ্গে কথা হয়। বসিলা মেট্রো হাউজিং থেকে আসা জিয়ান নামে এক যুবক জানান, তিনি প্রতি বছর আসেন। এবারও আগাম এসে গরু দেখে যাচ্ছেন। কেমন ধরনের গরু উঠল, তা তিনি তার বাবা-চাচাকে জানাবেন। পরে তারা আসবেন।
জিয়ানও মনে করছেন, আজকে হাটে গরু এলেও বিক্রি হবে না। ফলে আগামীকাল (শনিবার) প্রথম দিন থেকে গরু বিক্রি শুরু হতে পারে।
এমআইকে/এএইচ
