বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

বেনাপোল বন্দর দিয়ে বাণিজ্য বাড়াবে পদ্মা সেতু

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৬ জুন ২০২২, ১১:৪৯ এএম

শেয়ার করুন:

বেনাপোল বন্দর দিয়ে বাণিজ্য বাড়াবে পদ্মা সেতু
কোলাজ: ঢাকা মেইল

দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আর মাত্র কিছু দিন পরেই উদ্বোধন হতে যাচ্ছে স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এই সেতু উদ্বোধনের পর গতি আসবে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানিতে। ঘটবে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও প্রবৃদ্ধি। বেনাপোল থেকে পণ্যবোঝাই ট্রাক রাজধানীতে পৌঁছাতে পারবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে। যেতে পারবে দেশের বিভিন্ন জেলা উপজেলায়। এতে একদিকে যেমন পরিবহন খরচ কমবে, অন্যদিকে বাজারে কমে আসবে বিভিন্ন পণ্যের দামও। কথাগুলো জানিয়েছেন বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টস অ্যাসেসিয়েশনের সভাপতি শামছুর রহমান। 

দেশের বেশিরভাগ কলকারখানা ও পোশাক শিল্পের কাঁচামাল শতকরা ৮০ ভাগ আমদানি হয় বেনাপোল বন্দর দিয়ে। বন্দর থেকে খালাস করা কাঁচামাল দ্রুত শিল্প কলকারখানায় পৌঁছাতে পারলে কমে যাবে পণ্যের উৎপাদন খরচ। প্রসারিত হবে শিল্প-কলকারখানা। কৃষিজাত পণ্যের বাজার বেশ প্রসারিত হবে। উৎপাদিত পণ্য স্বল্প সময়ে় এবং অল্প খরচে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করে অধিক মুনাফা পাবে এই অঞ্চলের কৃষকরা। বেনাপোল স্থলবন্দরের কার্যকারিতাও বৃদ্ধি পাবে বহুগুণে। এ অঞ্চলের সামগ্রিক যাতায়াত ব্যবস্থা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের আমূল পরিবর্তন হবে। জিডিপি এবং রাজস্ব আয় দুইই বৃদ্ধি পাবে। বর্তমানে বেনাপোল কাস্টমস হাউস থেকে সরকার প্রতিবছর ছয় হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আয় করে থাকে। পদ্মা সেতুর কারণে সরকারের রাজস্ব আয় বেড়ে দাঁড়াবে ১০ হাজার কেটি টাকায়। 


বিজ্ঞাপন


বেনাপোল আামদানি-রফতানিকারক সমিতির সভাপতি মহসিন মিলন জানান, বেনাপোল বন্দর ব্যবহারকারীদের চাওয়া পদ্মা বহুমুখী সেতু চালুর মধ্যে দিয়ে আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ এবং কম সময় লাগায় দেশে অন্যতম বেনাপোল বন্দর ব্যবহারে আমদানি ও রফতানিকারকরা উৎসাহিত হবে। আমদানি ও রফতানিকারকদের অর্থ সাশ্রয় হবে।

ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ জানান, পদ্মা সেতু ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ভূমিকার পাশাপাশি জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। দেশ থেকে রফতানি দ্বিগুণ বাড়বে। শুধু ব্যবসা-বাণিজ্য নয়, সকল দিকেই পদ্মা সেতুর প্রভাব পড়বে। বেনাপোল বন্দর তার গৌরব ফিরে পাবে বলে প্রত্যাশাও করেন তিনি। 

ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ডাইরেক্টর মতিয়ার রহমান বলেন, ঢাকা ছিল এই অঞ্চলের মানুষের জন্য দূর্গম পথ। বেনাপোল থেকে ঢাকায় পৌঁছাতে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা সময় লেগে যেত। শীতের মৌসুমে ঘন কুয়াশার কারণে পদ্মার দু’পাড়ে শত শত যানবাহন এবং হাজার হাজার মানুষের দুর্ভোগ দেখেছি। এ অঞ্চলের মেধাবীরা ঢাকার সঙ্গে উন্নত সড়ক যোগাযোগ না থাকায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ঢাকায় গিয়ে পড়াশুনা করতে পারেনি। সময় মতো পদ্মা পার হতে না পেরে ফেরি ঘাটেই অনেক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। 

বেনাপোল কাস্টমস হাউসের যুগ্ম কমিশনার আব্দুর রশিদ মিয়া জানান, পদ্মা সেতু ছিল দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্ন। সেতুটি নির্মাণ করায় এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য খুলে যাবে। বেনাপোল বন্দর দিয়ে দ্রুত ও কম খরচে পণ্য খালাস করতে পারবেন ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে যাত্রী পারাপার বাড়বে। বর্তমানে বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন ১০ হাজার যাত্রী ভারতে যাতায়াত করছে। পাদ্মা সেতু চালু হলে যাত্রী পারাপার বাড়বে, একই সঙ্গে বাড়বে সরকারের রাজস্ব আয়। 


বিজ্ঞাপন


বেনাপোল কাস্টম হাউসের কমিশনার মো. আজিজুর রহমান জানান, পদ্মা সেতু চালু হচ্ছে এটা খুবই আনন্দের বিষয়। বেনাপোল দিয়ে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়বে দ্বিগুণ। বেনাপোল দিয়ে রেলপথে মালামাল আমদানি বেড়েছে। পদ্মা সেতু দিয়ে পণ্য খলাসের পর দ্রুত সময়ে রেলযোগে পণ্য পৌঁছে যাবে ব্যবসায়ীদের কাছে। ফলে সরকারের রাজস্ব আয়ও বেড়ে দ্বিগুণ হবে।

এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর