২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার মামলায় আগামী ২৬ মে আপিল বিভাগে পরবর্তী শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির একটি আপিল বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।
এর আগে, একই দিনে এই মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া সব আসামির খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি শুরু হয়। প্রথম দিনে রাষ্ট্রপক্ষ শুনানিতে অংশ নেয়।
বিজ্ঞাপন
২০২৩ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ২১ আগস্টের ঘটনায় দায়ের করা হত্যা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় সব আসামিকে খালাস দেন। রায়ে বলা হয়, শুধুমাত্র স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ওপর ভিত্তি করে অপর আসামিদের সাজা দেয়া যায় না।
আদালতের ভাষ্য অনুযায়ী, দ্বিতীয় চার্জশিটে আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। সেটি মূলত জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানের জবানবন্দির ওপর নির্ভর করে তৈরি হয়েছিল, যা তিনি পরবর্তীতে প্রত্যাহার করেন। তাই এমন স্বীকারোক্তি, যা পরে প্রত্যাহার করা হয়েছে, সেটিকে প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা যায় না বলে মন্তব্য করে আদালত।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান ও মোহাম্মদ শিশির মনির। তাদের মতে— মামলার উভয় চার্জশিটেই কেবল মুফতি হান্নানের জবানবন্দি ছিল মূলভিত্তি। সেই জবানবন্দি প্রত্যাহার করার পর আর কোনো স্বাধীন প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি।
তাদের যুক্তি ছিল, এমন একটি স্বীকারোক্তিমূলক বক্তব্য, যা আসামি নিজেই প্রত্যাহার করেছে, সেটির ভিত্তিতে অপর আসামিদের সাজা দেওয়া আইনসম্মত নয়।
বিজ্ঞাপন
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকার বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় ২৪ জন নিহত হন। শেখ হাসিনাসহ দলের শীর্ষ নেতারা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। ওই ঘটনার পর দুটি মামলা হয়—একটি হত্যা এবং অপরটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে।
২০১৮ সালে বিচারিক আদালত দুই মামলার রায় ঘোষণা করেন। ওই রায়ে ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড, তার মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু ছিলেন।
এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনকে যাবজ্জীবন এবং আরও ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
রায়ের পর মামলার সকল নথি উচ্চ আদালতে পাঠানো হয়। দণ্ডপ্রাপ্তরা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন। ২০২২ সালে আপিল শুনানি শুরু হলেও বিচারক বেঞ্চ পুনর্গঠনের কারণে তা মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। ফলে নতুন বেঞ্চে আবারও শুনানি শুরু হয়। এখন আপিল বিভাগে রায় পর্যালোচনার প্রক্রিয়া চলছে। পরবর্তী শুনানি হবে ২৬ মে।
এইউ

