যেকোনো দুর্যোগ ও দুর্বিপাকে প্রথম সাড়াদানকারী সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল।
রোববার (৪ মে) সকালে প্রতিষ্ঠানটির সদর দফতরে আয়োজিত ইন্টারন্যাশনাল ফায়ারফাইটার’স ডে-২০২৫ উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
অনুষ্ঠানে সারাদেশ থেকে নির্বাচিত বিভিন্ন পদবির ৪৫ জন কর্মকর্তা ও ফায়ারফাইটারকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী, পরিচালক (প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন) লে. কর্নেল এম এ আজাদ আনোয়ার, উপ পরিচালকসহ বিভিন্ন পদবির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী। এরপর অপারেশনাল কাজে নিহত বিশ্বের সকল ফায়ারফাইটারদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
সূচনা বক্তব্যের পর সারাদেশ থেকে অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজে পারদর্শিতা ও সাহসিকতা প্রদর্শনের জন্য নির্বাচিত বিভিন্ন পদবির ৪৫ জন কর্মকর্তা ও ফায়ারফাইটারকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে সনদপত্র, সম্মাননা ক্রেস্ট ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়। সম্মাননা প্রাপ্তদের মধ্য থেকে ঠাকুরগাঁও জেলার ইন্সপেক্টর মো. মোজাম্মেল হক তার প্রতিক্রিয়ায় এই প্রথম ফায়ার সার্ভিসের নিজস্ব উদ্যোগে এমন সম্মাননা প্রদান করায় মহাপরিচালকের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
এরপর প্রধান অতিথি অপারেশনাল কাজে নিহত বিশ্বের সকল ফায়ারফাইটারকে স্মরণের মাধ্যমে তার ভাষণ শুরু করেন। বিশেষ করে বাংলাদেশে বিএম কন্টেইনার ডিপো দুর্ঘটনায় শহীদ ১৩ অগ্নিবীরসহ ফায়ার সার্ভিসে অপারেশনাল কাজে নিহত ৪৮ জন অগ্নিযোদ্ধাকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করেন। তিনি এসব ঘটনায় আহতদের আশু আরোগ্য কামনা করেন। এরপর তিনি ফায়ার সার্ভিসে যোগদানের পর থেকে গৃহীত সকল উন্নয়নমূলক উদ্যোগ ও সম্পাদিত কার্যক্রম বর্ণনা করেন।
বিজ্ঞাপন
সম্মাননা প্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে মহাপরিচালক বলেন, আপনারা দগ্ধ ভবনে প্রবেশ করেন; সড়ক ও নৌযান দুর্ঘটনায় ছুটে যান; ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে জীবনের স্পন্দন খুঁজে আনেন। আর এর মাধ্যমে আপনারা অর্জন করেছেন সকলের আস্থা ও ভালোবাসা। আপনাদের এই ত্যাগ ও অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য ইন্টারন্যাশনাল ফায়ারফাইটার্স ডে উপলক্ষে এ অধিদফতর থেকে আজকে আমরা সম্মাননা জানাচ্ছি। এই সম্মাননা প্রদানের ধারা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল বিদ্যমান সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়ে সকলের উদ্দেশে বলেন, সকল ধরনের অপারেশনে আমাদের ফায়ারফাইটারগণ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা ভবিষ্যতে যেকোনো দুর্যোগ ও দুর্বিপাক সফলভাবে মোকাবিলা করতে সক্ষম হব বলে আশা করি। আপনাদের প্রজ্ঞা, দক্ষতা ও মানবিকতার প্রতি ভালোবাসা এই অধিদফতরের প্রতিটি অপারেশনাল কাজকে করেছে সফল। আমি আশা করি ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মো. মোজাম্মেল হক সভাপতির বক্তব্যে বলেন, এ সম্মাননা সকল ফায়ারফাইটারদের মনোবল উজ্জীবিত করতে এবং অপারেশনাল কাজকে আরও বেগবান করতে সহায়ক হবে।
উল্লেখ্য, সারাদেশ থেকে সকল কর্মকর্তা অনলাইনে সংযুক্ত থেকে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। বাদ জোহর ফায়ার সার্ভিসের সকল মসজিদে প্রয়াত ফায়ারফাইটারদের উদ্দেশে দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশে এ বছরই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে ছোট পরিসরে ইন্টারন্যাশনাল ফায়ারফাইটার্স ডে উদযাপন করা হলো।
এমআইকে/এফএ