বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ঢাকা

ল্যাপটপ কম্পিউটার আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহিত চায় বিসিএস

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৪ জুন ২০২২, ০১:২৮ পিএম

শেয়ার করুন:

ল্যাপটপ কম্পিউটার আমদানিতে ১৫ শতাংশ ভ্যাট অব্যাহিত চায় বিসিএস
ছবি: ঢাকা মেইল

ল্যাপটপ কম্পিউটার আমদানিতে অতিরিক্ত করের ভার স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করবে বলে মন্তব্য করেছে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস)। তাই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে এসব পণ্য আমদানিতে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর থেকে অব্যাহিত প্রদান করার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

মঙ্গলবার (১৪ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে ২০২২-২৩ জাতীয় বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানায় সংগঠনটি।


বিজ্ঞাপন


সংবাদ সম্মেলনে লিথখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির (বিসিএস) সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত সরকার বলেন, বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি দেশে তথ্য-প্রযুক্তি খাতের বিকাশ ও প্রসার, জনগণের মধ্যে ব্যাপকভাবে সচেতনতার সৃষ্টি, এ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সকল ক্ষেত্রের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণ, তথ্য-প্রযুক্তি সহায়ক ও নির্ভর পরিবেশ সৃষ্টি, দেশে আইটি পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্র তৈরি এবং বহির্বিশ্বে এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উজ্জ্বল ভাবমূর্তি সৃষ্টির জন্য বহুবিধ কর্মসূচি প্রণয়ন ও কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমানে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার যে ধারা সূচিত হয়েছে তা অব্যাহত থাকলে আমরা ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশ হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে বলে আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। এরই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নেও প্রযুক্তিখাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ উন্নয়নের সিঁড়ি বেয়ে এগিয়ে যাবে, ২০৪১ সালে সামিল হবে উন্নত বিশ্বের কাতারে। স্বপ্নের সেই বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতিও সরকারের সঙ্গে একাত্ম হয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনায় প্রস্তুত রয়েছে।

ল্যাপটপ কম্পিউটার আমদানিতে মূল্য সংযোজন কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, দেশে স্থানীয় উৎপাদনকে উৎসাহিত করতে ল্যাপটপ কম্পিউটার আমদানিতে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। ল্যাপটপের ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর প্রস্তাবের পাশাপাশি ডলারের দামবৃদ্ধির ফলে মোট ২৫ শতাংশ মূল্য বাড়বে। এক্ষেত্রে কাস্টমস ডিউটি (সিডি), অ্যাডভান্সড ইনকাম ট্যাক্স (এআইটি), অ্যাডভান্স ট্রেড ভ্যাট যুক্ত হয়ে ল্যাপটপের মূল্য প্রায় ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। এক্ষেত্রে যে ল্যাপটপটির মূল্য ছিল ১ লাখ টাকা, ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর যুক্ত হয়ে সে ল্যাপটপের মূল্য হবে প্রায় ১ লাখ ৩১ হাজার ২৫০ টাকা।

বিসিএস সভাপতি বলেন, ল্যাপটপ এখন বিলাসী কোনো পণ্য নয়। সরকারের ৫ বিলিয়ন ডলার উপার্জনের লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে ফ্রিল্যান্সার থেকে শুরু করে আউসোর্সিং যারা করছেন তাদের প্রধান হাতিয়ার ল্যাপটপ। এছাড়াও শিক্ষা উপকরণ হিসেবেও ল্যাপটপ স্বীকৃত। বাংলাদেশে ল্যাপটপ উৎপাদনের প্রযুক্তি কারখানা এখনও স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। মাত্র ১ থেকে ২টি কোম্পানি স্বল্প পরিসরে উৎপাদন শুরু করলেও চাহিদার তুলনায় অপর্যাপ্ত। কেবল মাত্র বাইরে থেকে আনা কম্পোনেন্টস এখানে সংযোজন হচ্ছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় উৎপাদনকে উৎসাহ দিতে আমদানিতে বাড়তি ট্যাক্স বসালে তা আসলে স্থানীয় উৎপাদনের সহায়তার চাইতে ব্যবহারকারীদের জন্য বাড়তি চাপ হয়ে দাঁড়াবে। এর ফলে ভোক্তাদের একটি বড় অংশ তাদের চাহিদা মোতাবেক ল্যাপটপ না কিনতে পেরে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার মিছিলে পিছিয়ে পড়বে।


বিজ্ঞাপন


তিনি আরও বলেন, ল্যাপটপের মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে গ্রে, রিফারবিশড এমনকি লাগেজ পার্টির দৌরাত্ম বৃদ্ধি পাবে। এক্ষেত্রে সরকার বিপুল রাজস্ব হারাবে। ল্যাপটপ এখন শিক্ষার্থীদের মৌলিক চাহিদার অংশ। আর দেশীয় প্রযুক্তি উৎপাদন কারখানাকে উৎসাহিত করতে পরিকল্পনা মাফিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বাংলাদেশে ল্যাপটপ উৎপাদনে অনেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করলেও উৎপাদন শুরু করতে আরও কিছু সময়ের প্রয়োজন। একটি পিসি বা ল্যাপটপ তৈরি করতে প্রায় কয়েক হাজার ছোট ছোট কম্পোনেন্টের প্রয়োজন হয়। যদি ল্যাপটপ কম্পিউটার আমরা এদেশে উৎপাদন করতে যাই, সেক্ষেত্রে প্রতিটি কম্পোনেন্ট এখানে উৎপাদন করতে হবে। আবার রোবোটিক প্ল্যান্ট বসিয়ে উৎপাদন করতে গেলে যে পরিমাণ পণ্য উৎপাদন করতে হবে, তা রফতানি করার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টিতেও আমাদের প্রচেষ্টা চলমান রাখতে হবে। ল্যাপটপের ওপর ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন করকে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অন্তরায় বলে আমরা মনে করি। তাই ল্যাপটপ কম্পিউটারের ওপর অতিরিক্ত করভার স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে ব্যাহত করবে বিবেচনায় নিয়ে এর আমদানিতে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর থেকে অব্যাহিত প্রদান করা হোক।

প্রিন্টার সামগ্রী আমদানিতে মূল্য সংযোজন কর প্রত্যাহার ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর আরোপের প্রস্তাবের ফলে আগামী অর্থবছরে প্রিন্টার, কার্টিজ ও টোনারের দাম বাড়বে। এদেশে প্রিন্টার সামগ্রী উৎপাদনে অনেক প্রতিষ্ঠান কাজ করলেও উৎপাদন শুরু করতে আরও সময়ের প্রয়োজন। তাই ভোক্তাদের স্বার্থ বিবেচনায় ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর প্রত্যাহার করার জন্য দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আইএসপিবি সভাপতি মো. ইমদাদুল হক, বাক্কো সভাপতি ওয়াহিদ শরিফ, বিসিএস সভাপতি কামরুজ্জামান ভূইয়া ও ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার প্রমুখ।

টিএই/এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর