শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

প্রতিবন্ধী ভাতা দুই হাজার টাকা করার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১৩ জুন ২০২২, ০১:৪৩ পিএম

শেয়ার করুন:

প্রতিবন্ধী ভাতা দুই হাজার টাকা করার দাবি

বাজেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাসিক ভাতা জনপ্রতি ন্যূনতম ২০০০ (দুই হাজার) টাকায় উন্নীত করাসহ ১০ দফা দাবি জানিয়েছে জয়ের পথে প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংস্থা নরসিংদী ডিপিওডি। সেই সঙ্গে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক প্রতিবন্ধী সেবা নিশ্চিতের দাবি জানানো হয়।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় এমন দাবি জানান তারা।


বিজ্ঞাপন


‘জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অবস্থান’ শিরোনামে আয়োজিত বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বলা হয়, বাজেটে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় বরাদ্দ অপরিবর্তিত। গত চার বছর ধরে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সংখ্যা এবং বাজেট অপরিবর্তিত রয়েছে যা প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে সম্পদে পরিণত করতে বাধাগ্রস্ত করবে। চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ খুবই অপ্রতুল। প্রতিবন্ধিতা খাতে যে বরাদ্দ করা হয়েছে তা সামাজিক নিরাপত্তা খাতের মাত্র ২.৫২ শতাংশ এবং মোট বাজেটের ০.৪২ শতাংশ।

আলোচকরা বলেন, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বাজেট বরাদ্দ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় কেন্দ্রিক। সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমের ১১৫টি খাতের মধ্যে ১০টিতে প্রতিবন্ধিতা খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে যার ৮টি সমাজকল্যাণ, একটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও একটি যৌথভাবে মহিলা, শিশু এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অন্তর্ভুক্ত। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ধারণায় মন্ত্রণালয়ভিত্তিক বাজেট বরাদ্দ খুবই প্রয়োজন। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের দক্ষতা উন্নয়ন ও আত্ম কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কোনো উদ্যোগ বাজেটে নেই। বাজেটে প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সনদ, জাতীয় আইন, নীতিমালা, কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রতিফলন নেই।

আলোচকরা বলেন, সেরিব্রাল পালসি, অটিজম বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন বুদ্ধি প্রতিবন্ধী, মানসিক প্রতিবন্ধী, ডাউন সিনড্রোম, মেরুর অদ্ভুতে আঘাতপ্রাপ্ত ব্যক্তি যাদের সার্বক্ষণিক কেয়ারগিভাবের প্রয়োজন হয় তাদের কেয়ারগিভারের জন্য ভাতা কার্যক্রম চালুর দাবি পুনর্বিবেচনা করা।

অন্য দাবির মধ্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের শিক্ষার আওতায় আনতে ও ঝরে পড়া রোধ করতে শতভাগ প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে শিক্ষা উপবৃত্তির আওতায় আনা প্রয়োজন বলে মনে করেন আয়োজনকরা। এজন্য উপকারভোগীর সংখ্যা বাজেটে কমপক্ষে দ্বিগুণ করার দাবি জানানো হয়। কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্যও আলাদা উপবৃত্তি চালুর দাবি করা হয়।


বিজ্ঞাপন


আলোচকরা বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা কার্যক্রমে বেশ কিছু খাত আছে দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান কেন্দ্রিক। এ সকল কার্যক্রমের বরাদ্দকৃত বাজেট থেকে একটি অংশ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থানে ব্যয় করার দাবি জানাচ্ছি। শিক্ষা, কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য সেবায় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিতে ভৌত অবকাঠামো ও তথ্যগত প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করতে বাজেট বরাদ্দের দাবি করা হয়।  সাধারণ স্বাস্থ্য সেবা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের উপযোগী করা। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য বিশেষায়িত স্বাস্থ্য সেবা প্রদান করতে বাজেট বরাদ্দ করা।

অন্য দাবির মধ্যে রয়েছে,  বাজেটে শ্রবণ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কানে শোনার যন্ত্রে ব্যবহৃত ব্যাটারির ওপর শুল্ক কর হ্রাস এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের বিশেষায়িত হুইলচেয়ার আমদানিতে VAT ও AIT সম্পূর্ণ বিলোপ করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা আরও সহায়ক উপকরণ ব্যবহার করে, যেমন- ট্রাই-সাইকেল, স্কুটার, হিয়ারিং এইড বহনযোগ্য র‌্যাম্প, কৃত্রিম অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ও অঙ্গসহায়ক উপকরণ, স্পিচ টু টেক্সট, টেক্সট টু স্পিচ, এক্সেসিবল মোবাইল অ্যাপস, কী-বোর্ড, লার্জ প্রিন্ট ম্যাটেরিয়াল, স্ক্রীন রিডিং সফটওয়ার ওপর শুল্কমুক্ত সুবিধা প্রদানের দাবি জানানো হয়। প্রতিবন্ধী মানুষের সঞ্চয়পত্র, এফডিআর, ডিপিএস এর ওপর সকল প্রকার ভ্যাট-ট্যাক্স ও সার চার্জ প্রত্যাহার করা। প্রতিবন্ধী মানুষদের জন্য উপযোগী পাওয়ার র‍্যাম্প বা ম্যানুয়াল র‍্যাম্পযুক্ত বাস আমদানিতে এবং তৈরির ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের ওপর শুল্ক প্রত্যাহার, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে মন্ত্রণালয়ভিত্তিক বাজেট বরাদ্দ, প্রতিবন্ধিতা বিষয়ক জাতীয় কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে বাজেটে যথাযথ বরাদ্দ রাখার দাবি জানানো হয়।

উল্লেখ্য, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ঘোষিত বাজেটে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাসিক ভাতা ৭৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকা বৃদ্ধি করে ৮৫০ টাকা ও উপকারভোগীর সংখ্যা ৩ লক্ষ ৫৭ হাজারে বৃদ্ধি করে ২৩ লক্ষ ৬৫ হাজার করা হয়েছে। এবার এই খাতে বরাদ্দ ৬০৯.১৮ কোটি টাকা বৃদ্ধি করা হয়েছে। 

ডিএইচডি/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর