বুধবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

উচ্ছেদের পরদিনই ফের দখলে ফুটপাত

‘আজ উডাবে কাল আবার বইমু’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৪০ পিএম

শেয়ার করুন:

‘আজ উডাবে কাল আবার বইমু’

বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইন্সটিটিউটসহ জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন (পঙ্গু হাসপাতাল) এলাকায় গত মঙ্গলবার উচ্ছেদ অভিযান চালায় যৌথবাহিনী। এর একদিন যেতে না যেতেই আবারও ফুটপাতের অধিকাংশ জায়গা দখলে নিয়েছেন হকাররা। ফুটপাতে পুনরায় দোকানপাট বসায় সাধারণ মানুষের চলাচলে নানা সমস্যা সৃষ্টি করছে।

তবে হকারদের দাবি, তারা দীর্ঘদিন ধরে এই ফুটপাতে ব্যবসা করে আসছে এবং এই ছোট ব্যবসা দিয়ে তাদের পরিবার চলে।


বিজ্ঞাপন


বাংলাদেশ শিশু হাসপাতালের সামনে বসা হকার আব্দুস সবুর লোটাস বলেন, "আজ উডাবে কাল আবার বইমু। এসব রাস্তা ময়লা-অবর্জনায় ভরে গেলে দোকানপাট তুলে পরিষ্কার করার অভিযান হয়, এরপর আবার আমরা বসি। পুলিশের উচ্ছেদের আগে এসব দোকান তুলে দিত, কিন্তু এবার সেনাবাহিনী কেন এসব করছে, তা বুঝতে পারছি না। আমাদের সংসার চলে না দোকান না করলে।’

Dhaka-3

হাসপাতালের রোগী ও তাদের স্বজনরা জানান, ফুটপাতের দখল অব্যাহত থাকলে জরুরি সময়ে হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশে ব্যাপক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, পঙ্গু হাসপাতালের সামনে থেকে শিশু মেলা পর্যন্ত ফুটপাতের পুরো অংশজুড়ে হকাররা দোকান খুলে বসেছে। এতে হাসপাতালে আসা লোকজনের চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


এছাড়া জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের সামনের ফুটপাতের দোকানগুলোর ব্যবসা আগের মতোই চলছে।

প্রতিদিন গড়ে ১০০ থেকে ২০০ টাকা ভাড়া আদায়

পঙ্গু হাসপাতালের সামনে থেকে শিশু মেলা পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশের প্রায় ২শ অবৈধ দোকান রয়েছে। প্রতিদিন এসব দোকান থেকে গড়ে ১০০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত ভাড়া আদায় করে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা। ফলে উচ্ছেদ করা হলেও এক অদৃশ্য শক্তির মাধ্যমে তারা আবার ফুটপাত দখল করে নেয়।

Dhaka-4

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক দোকানি বলেন, ‘এসব উচ্ছেদে আমরা ভয় পাই না। কারণ আজ উচ্ছেদ করলে কাল আবার ব্যবসা করতে পারমু। আমরা নিয়মিত ভাড়া দেই।’

শিশু হাসপাতালের সামনের ডাব বিক্রেতা বলেন, ‘আমরা একটা দোকান থেকে তিনটা পরিবার চলে। হুট করে চলে যেতে বললেই আমরা যাব কীভাবে? আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই জায়গায় ব্যবসা করে আসছি।’

পঙ্গু হাসপাতালের সামনে আনিসুর রহমান নামে এক রোগীর স্বজন বলেন, ‘আমার চাচার অবস্থা খুবই সিরিয়াস। দৌড়াদৌড়ি করে হাসপাতালের বাইরে থেকে ওষুধ ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে আসতে হচ্ছে। কিন্তু ফুটপাতের পুরো অংশ হকারের দখলে। ফলে চাইলেও দ্রুত হাঁটা যায় না।’

Dhaka-5

শিশু হাসপাতালের সামনে জালার উদ্দিন নামে একজনের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, ‘আমার ছোট ছেলে অসুস্থ। তাই এখানে দ্রুত নিয়ে আসি। কিন্তু হাসপাতালে ঢোকার পথে হাকারদের উৎপাতে একদম ভিড় লেগে আছে। ফলে একটু স্বস্তি নিয়ে যাওয়া-আসা করা যাচ্ছে না।’

এ বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এএসএল/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর