বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশি পণ্যের ওপরও যুক্তরাষ্ট্র যে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেছে সেটা প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দফতরেও সরকারের পক্ষ থেকে পৃথক চিঠি পাঠানো হবে।
রোববার (৬ এপ্রিল) বিকেলে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
বিজ্ঞাপন
প্রেস সচিব জানান, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দুটি চিঠি প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে পাঠানো হবে।
বৈঠক সম্পর্কে প্রেস সচিব বলেন, প্রতিনিয়ত তাদের (যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি) সঙ্গে আমরা কথা বলছি। তাদের মধ্যে ঢাকায় তাদের দূতাবাসের কর্মকর্তা ছাড়াও ইউএসটিআরের কর্মকর্তারা রয়েছেন। আমাদের যেটা ডিসিশন, আমরা দুটি চিঠি দেব। দুটিই আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যাবে। একটা চিঠি যাবে আমাদের প্রধান উপদেষ্টার তরফ থেকে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে। আরেকটা চিঠি যাবে আমাদের বাণিজ্য উপদেষ্টার তরফ থেকে ইউএসটিআরের কাছে।
চিঠির বিষয়বস্তু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, চিঠিতে কী কী থাকবে, কী ধরনের ভাষা ব্যবহার করা হবে সেটা নিয়েই আজকে আলোচনা হয়েছে। আজকে চারজন উপদেষ্টা ছিলেন, একজন হাইলি রিপ্রেজেন্টার ছিলেন, একজন স্পেশাল অ্যাম্বাসেডর, আমাদের প্রায় দশজনের মতো সেক্রেটারি ছিলেন, যারা বড় ব্যবসায়ী তাদের মধ্য থেকে চারজন প্রতিনিধি ছিলেন। সবার সঙ্গে কথা হয়েছে। আলোচনার পরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে- ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দুটি চিঠি যাবে।
গত বুধবার (৩ এপ্রিল) স্থানীয় সময় বিকেলে হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে এক সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্য দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশি পণ্যের ওপর শুল্কের হার বাড়িয়ে ৩৭ শতাংশ ধার্য করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
বিজ্ঞাপন
এদিন ন্যূনতম ১০ শতাংশ হারে নতুন ট্যারিফ পরিকল্পনা ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। আগে দেশটিতে বাংলাদেশের পণ্যে শুল্কের হার ছিল গড়ে ১৫ শতাংশ।

অতিরিক্ত শুল্কের কারণে দেশের রফতানি বাজার বিশেষ করে পোশাক খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলে ধারণা করছেন অর্থনীতিবিদরা। বিষয়টি নিয়ে নানা মহলে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সরকারপ্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস গতকাল এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেছেন।
সেখানে বাংলাদেশি পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের পর অন্তত ৩০টির বেশি মার্কিন পণ্যের আমদানি শুল্ক পর্যালোচনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) অন্তত ১০টি এবং বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) প্রায় ২০টি পণ্যের শুল্ক-কর পুনর্বিবেচনার জন্য সুপারিশ করেছে।
এদিকে শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগে ভালো কিছু হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এর ফলে অর্থনীতিতে যে প্রভাব পড়বে তা সামাল দেওয়া কঠিন হবে না বলেও জানান তিনি।
রোববার (৬ এপ্রিল) সচিবালয়ে নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক আরোপের ফলে অর্থনীতিতে যে প্রভাব পড়বে তা সামাল দেওয়া কঠিন হবে না। এটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের সঙ্গে নেগোসিয়েশনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ভালো কিছু হবে বলে আশাবাদী।
জেবি