ঈদের বাকি আর মাত্র দুই তিন দিন। বেড়েছে ঘরে ফেরা মানুষের ব্যস্ততা। সকাল থেকে রাজধানীর বাস টার্মিনালগুলোতে উপচেপড়া ভিড়। তবে টিকিট নিয়ে তেমন কোনো ভোগান্তি পোহাতে হয়নি তাদের। যদিও স্বল্প দূরত্বের বাসগুলোতে বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
শুক্রবার (২৮ মার্চ) দুপুরে গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এই তথ্য জানা গেছে।
বিজ্ঞাপন
প্রতি বছর আরিচা-পাটুরিয়া ঘাট পর্যন্ত বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ পাওয়া যায়। এবারও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। বিশেষ করে সেলফি পরিবহনের বিরুদ্ধে বরাবরের মতোই বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
যাত্রীরা অভিযোগ করছেন, গাবতলী থেকে পাটুরিয়া ফেরিঘাটে ১৫০ টাকা ভাড়া। কিন্তু সেলফি পরিবহনের গাড়িতে বর্তমানে সেই ভাড়া নেওয়া হচ্ছে ৩০০ টাকা। ফলে বাড়তি ভাড়ায় গন্তব্যে যেতে হচ্ছে যাত্রীদের।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অন্য বাসগুলোতে একই দূরত্বে ২০০ টাকা ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। অন্য লোকাল সার্ভিসের চেয়ে সেলফি পরিবহনের গাড়িতে ভাড়া বেশি নেওয়ার কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে- এই বাস বিরতিহীনভাবে চলাচল করে এবং ফিরতি পথে গাড়ি খালি থাকে।
টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, গাবতলী থেকে পাটুরিয়া ফেরিঘাটগামী লোকাল বাস সার্ভিস সেলফি পরিবহন যাত্রী প্রতি ৩০০ টাকা করে ভাড়া নিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট শ্রমিকরা হাঁকডাক ছেড়ে ডেকে ডেকে যাত্রী তুলছেন।
বিজ্ঞাপন
কুষ্টিয়া যাওয়ার জন্য সেলফি বাসে চড়েছেন রিয়াদ। তার গন্তব্য গাবতলী থেকে পাটুরিয়া ফেরিঘাট। এরপর ফেরি পার হয়ে ওপারের লোকালে চেপে পৌঁছাবেন গন্তব্যে। তিনি বলছিলেন, সব সময় ঘাট পর্যন্ত ১৫০ টাকায় যাই। কিন্তু এবারই প্রথম আমাকে ৩০০ টাকায় যেতে হচ্ছে। কী আর করা! ভাড়া বেশি লাগলেও যেতে তো হবে।
রাজবাড়ী যাবেন নিয়ামুল হক। তিনিও উঠেছেন সেই বাসে। বেশি ভাড়া দিয়ে কোন সেলফি পরিবহনে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, অন্যান্য লোকাল বাসগুলো সারা রাস্তায় যাত্রী নেবে। সব জায়গায় থাকমে। আর সেলফি পরিবহনের গাড়ি যাত্রী ফুল হয়ে গেলে আর কোথাও দাঁড়াবে না। টাইমে চলে সেলফি। ঠিক সময়ে ঘাটে নামিয়ে দেবে।
তবে ভাড়া বেশি নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করে সেলফি গাড়ির টিকিট বিক্রেতা পরিবহন শ্রমিক জানান, আসার সময় আমাদের গাড়ি ফাঁকা আসছে। কোনো যাত্রী থাকছে না। ফলে আমাদের বেশি ভাড়া নিতে হচ্ছে। তাছাড়া আমাদের পোষাবে ক্যামনে!
এদিকে অন্য লোকাল সার্ভিস বিশ্বাস এন্টারপ্রাইজের গাড়ির চালকের সহকারী নুরুল ইসরাম বলেন, ঘাটের ভাড়া ২০০ টাকা। ওদিক থেকে গাড়ি আসার সময় আবার যাত্রী আনলে গড়ে ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু এখন আসার সময় কোনো যাত্রী পাওয়া যায় না। ঈদের সময় ভাড়া কম নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে গাবতলী টার্মিনালে দায়িত্বরত বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) ভিজিলেন্স টিমের সহকারী পরিচালক রবিউল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেব। বর্তমানে আমাদের একটি টিম অভিযান চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিছুক্ষণের মধ্যে অভিযান শুরু হবে।
এমআইকে/জেবি