সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

এনআইডি ইস্যুতে সরকারের কাছে জোরালো অবস্থান তুলে ধরা হবে: সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬ মার্চ ২০২৫, ০৩:৪৪ পিএম

শেয়ার করুন:

এনআইডি ইস্যুতে সরকার কাছে জোরালো অবস্থান তুলে ধরা হবে: সিইসি
স্মারকলিপি দেওয়ার পর নির্বাচন ভবনে সিইসি’র দফতরের সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন।

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সেবা নির্বাচন কমিশনে (ইসি) রাখতে সরকারের কাছে জোরালো অবস্থান তুলে ধরার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। এদিকে কমিশনের দৃশ্যমান পদক্ষেপের জন্য সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে সংস্থাটির কর্মকর্তারা।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ)  বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে (সিইসি) স্মারকলিপি দেওয়ার পর নির্বাচন ভবনে সিইসি’র দফতরের সামনে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মো. মনির হোসেন। এর আগে সিইসি’র রুমের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন ইসির কর্মকর্তারা।


বিজ্ঞাপন


প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন বলেন, এনআইডি কার্যক্রম নির্বাচন কমিশন থেকে সরিয়ে নেওয়া সরকারি সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে বলে আমি শুনিনি। আলাপ আলোচনা হয়েছে৷ কীভাবে হতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা লিখিতভাবে সরকারকে জানাবো যে এটা ইসির অধীনে থাকা উচিত। জরুরি ভিত্তিতে জানাবো সরকারকে।

উপদেষ্টা পরিষদে সিদ্ধান্ত হয়েছে এটা থাকবে না; কোনো দুরভিসন্ধি আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কোনো দুরভিসন্ধি আছে কিনা আমি জানিনা। সরকার হয়তো মনে করছে একটা জায়গা থেকে সার্ভিসটা দেবে। নির্বাচন কমিশনের অধীনেই সেটা হবে এমনটা শুনেছিলাম আমি।

এনআইডি চলে গেলে ভোটার তালিকায় সমস্যা হবে কিনা জানতে চাইলে সিইসি বলেন, হবে। এনআইডিটা ভোটার তালিকার বাই প্রোডাক্ট। এটা তো আগে ছিল না। আস্তে আস্তে যখন ডেভেলপ হলো তখন না এটা হলো। ১৭ বছর ধরে এখানে শ্রম, ঘাম দিয়েছে এখানকার লোকজন। এরাই তো ডেভেলপ করে এই পর্যন্ত এনেছে। নিজেদের কাজের অতিরিক্ত কাজ হিসেবে তারা এটা করেছে। এটা তো একটা নেটওয়ার্ক সারাদেশে ডেভেলপ হয়েছে, এক্সপার্ট ডেভেলপ হয়েছে। সার্বিক বিষয়গুলো নিশ্চই সরকার বিবেচনায় নেবে বলে আমি বিশ্বাস করি। কমিউনিকেশনের একটা গ্যাপ থাকতে পারে হয়তো। আমাদের লিখিত মতামত পাওয়ার পর নিশ্চয় গ্যাপ থাকবে না আশা করি। সরকার তো অনেক ওপরের ব্যাপার।  আমরা সাংবিধানিক বডি। আইন যদি সরকার পরিবর্তন করে ফেলে আমাদের আইন মানতে হয়। কিন্তু আইন বানানোর প্রক্রিয়ার মধ্যে আমরা আমাদের মতামত জোরালোভাবে তুলে ধরবো। যেখানে যেখানে মতামত দেওয়ার দরকার, দেবো। আমাদের পুরো কমিশন এটা চায়।

কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তগ্রহণকারী নই এটা বুঝতে হবে। আমি নির্বাচন কমিশনের প্রতিনিধিত্ব করি। আমি ইসির পক্ষে কথা বলতে পারি, ইসির পক্ষে সরকারের কাছে অবস্থান তৈরি করতে পারি। এইটুকু আমি জোরালোভাবেই করবো।

বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক মোহাম্মদ মনির হোসেন সাত দিনের আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, আমরা স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। এ সরকারের সঙ্গে ওনার কথা হয়েছে। আগামী বুধবারের মধ্যে কার্যকরী পদক্ষেপ দেখতে চাই আর তা না হলে বৃহস্পতিবার থেকে ইসি সচিবালয়সহ মাঠ পর্যায়ের সকল কর্মকর্তারা সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন। এরপর কোনো অগ্রগতি না দেখতে পেলে  কঠোর আন্দোলনে যাবো।

নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান কর্মকর্তাদের বলেন, নির্বাচন কমিশন আমাদের সঙ্গে আছে। আমরা সামনে যেতে চাই। এনআইডি নিয়ে যে সিদ্ধান্ত হয়েছে তা অতিদ্রুত বাতিল করতে হবে; আগের কমিশন আমাদের সঙ্গে ছিলো না। এ কমিশন আমাদের সঙ্গে থাকবে।

জানা গেছে, জন্ম নিবন্ধন, এনআইডি ও পাসপোর্ট সেবা নিয়ে দুর্ভোগ ও জটিলতা নিরসনে স্বতন্ত্র কমিশন প্রতিষ্ঠায় ‘সিভিল রেজিস্ট্রেশন (কমিশন), ২০২৫’ নামে একটি অধ্যাদেশ করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয় সরকার, সুরক্ষা সেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের মতামতও গ্রহণ করছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। অতিরিক্ত সচিব পযায়ের এ বৈঠকে ইসি সচিবালয়ের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া আইনের খসড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষাপূর্বক মতামত প্রদান সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির প্রথম সভা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এমএইচ/এফএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর