ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র ও সাবেক সংসদ সদস্য সাঈদ খোকনের পরিবারের ৭৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি মাজহারুল ইসলাম ও তার স্ত্রীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এসব আদেশ দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন।
বিজ্ঞাপন
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পৃথক আবেদনে পৃথক আদেশ দেওয়া হয়। দুদকের বিশেষ পিপি মীর আহমেদ আলী সালাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাঈদ খোকনের পরিবার
সাঈদ খোকন, তার মা শাহানা হানিফ, স্ত্রী ফারহানা সাঈদ এবং পরিবারের সদস্য জাবেদ আহমেদ ও ফাতেমা খাতুনের ৭৯টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। দুদকের উপ-পরিচালক মাসুদুর রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন আদালত।
দুদকের আবেদনে বলা হয়, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাবগুলোতে অস্বাভাবিক লেনদেন হয়েছে। সাঈদ খোকন ক্ষমতার অপব্যবহার করে এবং রাজনৈতিক পরিচয়ের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন স্থানে ও বিদেশে বিপুল পরিমাণ সম্পদ অর্জন করেছেন। এসব ব্যাংক হিসাব থেকে অর্থ স্থানান্তর ও উত্তোলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
বিজ্ঞাপন
সাঈদ খোকন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র ছিলেন। তিনি ঢাকা–৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।
এর আগে গত ২৩ ডিসেম্বর সাঈদ খোকন, তার মা শাহানা হানিফ, স্বজন ফারহানা সাঈদ ও জাবেদ আহমেদের বিদেশযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দেন আদালত।
যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি মাজহার ও তার স্ত্রী
দুনীর্তির অভিযোগে যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম ও তার স্ত্রী লায়লা খানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে ছয় তলাবিশিষ্ট তিনটি বাড়ি ও গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরে ডুপ্লেক্স বাড়ির মালিক এই সাবেক ওসি দুর্নীতির মাধ্যমে এসব সম্পদ অর্জন করেছেন বলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির আবেদন করে।
কমিশনের সহকারী পরিচালক বিষাণ ঘোষের আবেদনে বলা হয়, এই দম্পতির বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অবৈধ উপায়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ অর্জনের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তদন্ত চলছে। শুধু তা-ই নয়, স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে মোটা অঙ্কের টাকা জমা রেখেছেন প্রাক্তন এই পুলিশ কর্মকর্তা। ওই দম্পতি দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন। তারা পালিয়ে গেলে তদন্ত ব্যাহত হতে পারে। তাই তাদের বিদেশগমন ঠেকাতে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাজহারুলকে গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ির এপিবিএন বিশেষায়িত প্রশিক্ষণকেন্দ্র থেকে গ্রেফতার করা হয়।
পরে ১৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে মোহাম্মদ আরিফের (১৭) মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। এরপর কয়েকটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
এছাড়া গণঅভ্যুত্থানের সময় কলেজ শিক্ষার্থী ইমাম হাসান তাইমকে হত্যার ঘটনায় আইসিটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
এফএ