রাজধানীর কিছু রুটে কাউন্টার ও টিকিট সিস্টেম চালু করায় সড়কে আজও কিছু কোম্পানির বাস চলছে না। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। সবথেকে ভোগান্তিতে পড়ছেন বিমানবন্দর থেকে বাড্ডা রামপুরা হয়ে যাত্রাবাড়ী ও গুলিস্তান রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা। এই রুটে এখন বিআরটিসি বাসই একমাত্র ভরসা। তাই এসব রুটে বিআরটিসি বাস বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন যাত্রীরা।
সোমবারের (১০ ফেব্রুয়ারি) মতো মতো আজও এসব রুটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও বাসে উঠতে পারছেন না অনেকে। সবথেকে বেশি ভোগান্তি নারী যাত্রীদের। বাসে উঠতে না পেরে অনেকেই পায়ে হেঁটে গন্তব্যে রওয়ানা হচ্ছেন। যাদের সামর্থ্য আছে তারা রিকশা সিএনজি রাইড শেয়ারে গন্তব্যে ছুটছেন।
বিজ্ঞাপন
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টায় রাজধানীর বাড্ডা রামপুরা এলাকায় ঘুরে দেখা যায় প্রতিটি মোড়ে মোড়েই মানুষের জটলা। বিমানবন্দর থেকে যাত্রাবাড়ী রুটে চলাচল করে রাইদা তুরাগ অনাবিল বাস। মাঝেমধ্যে দু-একটা তুরাগ বাস চলতে দেখা গেলে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকেও দেখা মিলেনি রাইদা অনাবিল পরিবহনের।

এছাড়াও বিমানবন্দর থেকে বাড্ডা রামপুরা হয়ে গুলিস্তান রুটে নিয়মিত চলাচল করে ভিক্টর ও আকাশ পরিবহন। এসব বাসেরও দেখা মিলছে না। এই রুটে দু-একটা বিআরটিসি বাস আসলে যাত্রীরা হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। পুরুষরা কোনোরকমে উঠতে পারলেও নারীরা উঠতে পারছেন না।
এই রুটে চলাচলকারী যাত্রী নাসির বলেন, ‘সরকার আমাদের ভালোর জন্যই একটা নিয়ম চালু করেছে। এটা গাড়ির মালিকদের পছন্দ না হওয়ার তারা গাড়ি বন্ধ রেখেছে। আমার মতে এইসব বাসের রুট পারমিট বাতিল করা দরকার।’
বিজ্ঞাপন
আরেক যাত্রী রেদোয়ান বলেন, ‘সুযোগ পাইলে বাস মালিকরা আমাগেরে জিম্মি করে। গণপরিবহন সব সরকারের অধীনে নিয়া বিআরটিসি চালু করলে তাদের উচিৎ শিক্ষা হবে।’
এ বিষয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী ঢাকা মেইলকে বলেন, ঢাকার পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলায় আওতায় আনার জন্য একটা ভালো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যারা এটা মানতে পারছে না, হঠাৎ করেই বাস বন্ধ করো যাত্রীদের জিম্মি করছে তাদেরকে কঠোর আইনের আওতায় আনা উচিৎ।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর তিনটি রুটের বাসে ই-টিকিটিং ও কাউন্টার পদ্ধতি চালু করা হয়। এ পদ্ধতিতে গোলাপি রঙের বাস কাউন্টার থেকে শুধু টিকিটধারী যাত্রীকে তুলবে। সড়ক পরিবহন আইনেও যত্রতত্র যাত্রী তোলা নিষিদ্ধ। এ নিয়ম ভঙ্গের সাজা হিসেবে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অথবা ছয় মাসে কারাদণ্ড রয়েছে।
ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করা ২১টি কোম্পানির বাস একক কোম্পানির অধীন পরিচালনা করার উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। এর আওতায় প্রায় ২ হাজার ৬১০টি বাস চলাচল করবে। বাসগুলোর রং হবে গোলাপি।
সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এসব বাস চলবে কাউন্টার–পদ্ধতিতে। যাত্রীদের নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে টিকিট সংগ্রহ করে বাসে যাতায়াত করতে হবে। নির্দিষ্ট স্থান ছাড়া বাস দাঁড় করানো হবে না। যাত্রী ওঠানামাও করবে নির্দিষ্ট স্থানে। বাসে ওঠানামার জন্য ঢাকার বিভিন্ন অংশে থাকবে প্রায় ১০০টি স্টপেজ। তবে এখনো সব স্টপেজে কাউন্টার বসানোর কাজ এখনো শেষ হয়নি।
টিএই/এমএইচটি

