‘ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ির আন্ডারগ্রাউন্ডে আয়নাঘরের সন্ধান মিলেছে, পাওয়া গেছে মানুষের মাথার চুল —আরও কত কী!’; শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে এমন খবর ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ নিয়ে অনেকেই বিভিন্ন কথা বলছেন, স্ট্যাটাস দিচ্ছেন ও বিষয়টি সত্য হলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অভিযানের পরামর্শ দিচ্ছেন। বিষয়টি আলোচনায় যখন তুঙ্গে, তখন এর সত্যতা যাচাইয়ে সরেজমিন যায় ঢাকা মেইল টিম।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বঙ্গবন্ধুর বাড়ির সামনে যাওয়া পর সেখানে উৎসুক জনতার ভিড় দেখা যায়। তখন কেউ একজন বলছিলেন, ‘বাড়ির নিচে আয়নাঘর পাওয়া গেছে!’ এরপর ঢাকা মেইলের এই প্রতিবেদক সোজা চলে যান ভাঙ্গা বাড়ির নিচতলায়। তবে সেখানে গিয়ে বর্ণিত ‘আয়নাঘর’ বা এ সংশ্লিষ্ট তেমন কিছু দেখা যায়নি।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে দেখা গেছে, আগুনে পুড়ে যাওয়া কিছু জিনিসপত্র সেখানে মিলেছে। ওই সময় ভাঙ্গা ভবনের নিচের ওই স্থান থেকে কয়েকজন কিছু জিনিসপত্র খুঁজছে। ভেঙ্গে পড়া ভবনের রড কাটতে ব্যস্ত ছিলেন কিছু লোকজন। কেউ আবার লিফট খুলে নেওয়ার পর বাকী অংশগুলো খুলছেন। লাইব্রেরী হিসেবে ব্যবহারের জন্য পূর্বদিকে থাকা লাল রঙের ইটের ভবনটির নিচতলায়ও তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। সেখানে শুধু আগুনে পুড়ে যাওয়া বিভিন্ন জিনিসের স্তূপ।
পূর্ব পাশে থাকা নির্মাণাধীন একটি বহুতল ভবনে যেতেই দেখা গেল, কয়েকজন নারী-পুরুষ ভবনটির পূর্ব কোনার ঢালু অংশ দিয়ে উঠছে। তাদের কাছে যেতেই বোঝা গেল সেটি বেজমেন্ট। তাদের কথায় বিষয়টি আরও পরিষ্কার হলো। তারা বলছিলেন, এটি বেজমেন্ট। গাড়ি পার্কিং করার জন্য তৈরি করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
আয়নাঘর প্রসঙ্গে সেখানে উপস্থিত জনতার কাছে জানতে চাইলে তাদের মধ্যে একজন জানান, ‘নিচে কিচ্ছু নাই। সব গুজব। আমরা গিয়েছিলাম, অন্ধকার আর পানি। পানি ছাড়া কিছুই নাই।’
এরপর বেজমেন্টে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন ব্যক্তি শুকনো মেঝেতে হাঁটছেন। আরও কয়েকজন তার নিচে থাকা আরেকটি বেজমেন্ট থেকে ওঠে আসছেন।
এসময় তারা জানালেন, এই শুকনো পার্কিংয়ের নিচেও আরও দুটি পার্কিং করার মতো বেজমেন্ট রয়েছে। সেগুলোর একটি পর্যন্ত তারা গিয়েছেন। তবে পানি থাকায় আরেকটি পর্যন্ত নামতে পারেননি।
রায়েরবাজার থেকে আসা নাজমুল নামে এক যুবক জানান, তিনি পার্কিংয়ের দ্বিতীয় তলা পর্যন্ত গিয়েছেন কিন্তু পানি ছাড়া কিছুই দেখতে পাননি।
ধানমন্ডি থানার ওসি আলিম মাসুদ ঢাকা মেইলকে বলেন, আমরা বিষয়টি জেনেছি। এ ধরনের কোনো কিছুর সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এসময় আবছা অন্ধকারে সেখান থেকে ফেরত আসার মুহূর্তে এক যুবকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল কী দেখতে পেলেন। জবাবে সেই যুবক বলেন, ‘ভাই কিছুই নাই। মূলত এটা কার পার্কিং।’
এমআইকে/এমএইচ/এমএইচটি