শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ঢাকা

সাদেক খান পরিবারের ৫০ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ, দশজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৫:৫৭ পিএম

শেয়ার করুন:

সাদেক খান পরিবারের ৫০ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ, দশজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

ঢাকা-১৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাদেক খান, তার স্ত্রী ফেরদৌসী খান ও ছেলে ফাহিম সাদেক খানের ৫০টি ব্যাংক হিসাব বা এফডিআর অবরুদ্ধের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। পৃথক আবেদনে সাদেক খান ও তার স্ত্রী ফেরদৌস খানসহ ১০ জনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছেন একই আদালত।

সোমবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে এসব আদেশ দেন। 


বিজ্ঞাপন


আদালত যে ৫০ ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন তার মধ্যে সাদেক খানের ১৮টি, তার স্ত্রীর ৮টি ও ছেলের ২৪টি অ্যাকাউন্ট রয়েছে। ব্যাংক হিসাব বা এফডিআরগুলোতে ১৯ কোটি ৪১ লাখ ৩৩ হাজার টাকা রয়েছে বলে আবেদনে তদন্তকারী কর্মকর্তা উল্লেখ করেছেন।

সাদেক খানের বিষয়ে আবেদনে বলা হয়েছে, সাদেক খান ক্ষমতার অপব্যবহার, ভূমিদস্যুতাসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাতপূর্বক অর্জিত ৭ কোটি ৩০ লাখ ২০ হাজার ৬৬৪ টাকা মূলোর অর্থ আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করে তা নিজ দখলে রেখেছেন। তিনি সংসদ সদস্য থাকাকালীন ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধমূলক অসদাচারণের মাধ্যমে তার নিজ ও তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামীয় ২৯টি ব্যাংক হিসাবে সন্দেহজনকভাবে ৪৬৬ কোটি ৪৭ লাখ ৬২ হাজার টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন করায় দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি তদন্ত্রের স্বার্থে আসামি সাদেক খানের নামে অর্জিত অস্থাবর সম্পদগুলো অবরুদ্ধকরণ আবশ্যক।

সাদেক খানের স্ত্রীর বিষয়ে আবেদন বলা হয়েছে, ফেরদৌসী খান অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ স্বার্থে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য তার স্বামীর ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত-আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ ৫ কোটি ৯৮ লাখ ৩২ হাজার ৫২১ টাকা মূল্যর সম্পদ অর্জন করে তা নিজ দখলে রেখেছেন। তিনি নিজ নামে ১৫১টি ব্যাংক হিসাবে ৩৯ কোটি ৭৭ লাখ ৭০ হাজার ৩২৬ টাকা জমা ও ৩২ কোটি ৫৪ লাখ ৫৮ হাজার টাকা উত্তোলনসহ মোট ৭২ কোটি ৩২ লাখ ২৯ হাজার টাকা অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন করে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে উহার হস্তান্তর, স্থানান্তর করায় তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে আইনে মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তকালে আসামি ফেরদৌসী খান এবং আসামি মো. সাদেক খানের নামে অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন

সাবেক এমপি সাদেক খান ও প্রিন্সের দুর্নীতির অনুসন্ধানে দুদক

সাদেক খানের ছেলে ফাহিম সাদেক খানের বিষয়ে আবেদনে বলা হয়েছে, অসৎ উদ্দেশ্যে নিজ স্বার্থে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য তার পিতার ক্ষমতার অপব্যবহার করে অবৈধ উপায়ে জ্ঞাত-আয়ের উৎসের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ ৬ কোটি ১২ লাখ ৮১ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদ অর্জনপূর্বক তা নিজ দখলে রেখেছেন। তিনি নিজ নামে ৭০টি ব্যাংক হিসাবে ২০ কোটি ৫২ লাখ ৩৫ হাজার ৪০৯ টাকা জমা ও ১৫ কোটি ৬২ লাখ ২ হাজার ৭২৮ টাকা টাকা উত্তোলনের অস্বাভাবিক ও সন্দেহজনক লেনদেন করে প্রাপ্ত অর্থ বা সম্পত্তির অবৈধ উৎস গোপন বা আড়াল করার উদ্দেশ্যে এর হস্তান্তর, স্থানান্তর করায় তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্তকালে আসামি ফাহিম সাদেক খান এবং আসামি মো. সাদেক খানের নামে অস্থাবর সম্পদ অর্জনের তথ্য পাওয়া যায়।

দুদকের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, দুদকের পক্ষ থেকে সাদেক খান, তার স্ত্রীসহ দশজনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করা হয়। এরপর শুনানি নিয়ে আদালত আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।

গত ২৪ আগস্ট রাজধানীর নাখালপাড়া এলাকা থেকে সাদেক খানকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন। তবে তার স্ত্রী সন্তানকে এখানো গ্রেপ্তার করা হয়নি।

ইএ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর