সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

জুলাই বিপ্লব সাংবাদিক মূল্যায়নের সুযোগ করে দিয়েছে: মাহমুদুর রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০:২৩ পিএম

শেয়ার করুন:

জুলাই বিপ্লব সাংবাদিক মূল্যায়নের সুযোগ করে দিয়েছে: মাহমুদুর রহমান

দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেছেন, দেশের কয়েকটি বড় বড় পত্রিকার দিকে খেয়াল করলে দেখা যায় বাংলাদেশের পারিপার্শ্বিকতায় বিশিষ্টজন হতে হলে ভারতপন্থী ও ইসলাম বিদ্বেষী হতে হবে। ৫ আগস্টের জুলাই বিপ্লব আমাদের দেশের ইসলামপ্রিয় লেখক, সাংবাদিক ও সাহিত্যিকদের মূল্যায়নের সুযোগ করে দিয়েছে।

রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে দেশের প্রথিতযশা তিন সম্পাদককে দেয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ১২তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ এ সংবর্ধনা আয়োজন করে।


বিজ্ঞাপন


সংবর্ধনাপ্রাপ্ত তিন সম্পাদক হলেন— দৈনিক নয়া দিগন্তের সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দীন, দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদ, দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। 

অনুষ্ঠানে মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের অন্যতম সদস্য অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুর রব। 

জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রধান রফিকুজ্জামানের স্বাগত বক্তৃতার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম।

অনুষ্ঠানে আমার দেশ সম্পাদক বলেন, নব্বই শতাংশ মুসলমানের দেশ হওয়া সত্ত্বেও এ দেশের ইসলামপ্রিয় লেখক ও সাংবাদিকরা তাদের মেধার মূল্যায়ন পান না। এক্ষেত্রে ওআইসিরও কোনো ভূমিকা নেই। মুসলিম লেখকরাও পশ্চিমা বিশ্বের দেওয়া পুলিৎজার কিংবা নোবেল পুরস্কারের দিকে তাকিয়ে আছেন তাদের মেধার মূল্যায়নের জন্য। এটাই মুসলিম বিশ্বের ব্যর্থতা। এ কারণে আমাদের আবুল আসাদ ও আলমগীর মহিউদ্দীনের মতো প্রথিতযশা সাংবাদিক ও সম্পাদকরা মূল্যায়ন পান না। 


বিজ্ঞাপন


তিনি বলেন, ৫ আগস্টের পরে এই বৃত্ত ভাঙার সুযোগ তৈরি হয়েছে আমাদের জন্য। আমি মনে করি মানারাত ইউনিভার্সিটি সেই বৃত্ত ভাঙার চেষ্টা করছে আজকে সম্পাদকবৃন্দকে সংবর্ধনা দেয়ার মধ্য দিয়ে।

11

বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাস জানতে হলে সম্পাদকদের এই লড়াই জানতে হবে বলে উল্লেখ করে মাহমুদুর রহমান বলেন, ১/১১ এর সময় একটা ভারতের দালাল সরকার ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে মানুষের মধ্যে একটা ভুল ধারণা ছিল যে সেই সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে এসেছিল। কিন্তু আমি তাদের ষড়যন্ত্র বুঝতে পেরে নয়া দিগন্তে সম্পাদকীয় পাতায় লিখতে শুরু করি। এ জন্য ডিজিএফআইয়ের হুমকি ধমকির মুখেও পড়তে হয়েছিল নয়া দিগন্ত কর্তৃপক্ষকে। তারা হুমকি উপেক্ষা আমার লেখা ছাপিয়েছিল। 

তিনি দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদকে বাংলাদেশের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, তিনি শুধুমাত্র ইসলামপ্রিয় মানুষ হওয়ার কারণে মেধার সঠিক মূল্যায়ন পাননি।

অনুষ্ঠানে দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদ বলেন, আমাদের দেশে যে অসত্য বা হলুদ সাংবাদিকতার কথা বলা হয় এ জন্য দায়ী সাংবাদিকরা নন। এ জন্য দায়ী যারা সাংবাদিকদের খাটান বা আরও ওপরে যারা আছেন তারা।
 
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির বক্তৃতায় অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, আজকে সংবর্ধনা দেয়া দেশের প্রথিতযশা তিন গুণী সম্পাদকের মাঝে তিনটি বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান। এ জন্য আমরা তাদেরকে সংবর্ধনা দিতে পেরে কৃতজ্ঞ। 

সভাপতিত্বের বক্তৃতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবদুর রব সংবর্ধনাপ্রাপ্ত তিন সম্পাদককে জীবন্ত কিংবদন্তি উল্লেখ করে বলেন, তাদেরকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেয়ার বা বলার নেই। তারা বাংলাদেশ তথা এশিয়ার সাংবাদিকতার ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছেন। আগামী দিনে তারা তাদের কলমকে শানিত করে আরও উচ্চকিত কণ্ঠে জাতিকে পথ দেখাবেন আশা করছি। 

এর আগে তিন সম্পাদকের হাতে সংবর্ধনা ক্রেস্ট তুলে দেন প্রধান অতিথি ও অনুষ্ঠানের সভাপতি। এ সময় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে কেক কাটেন অতিথিবৃন্দ। দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে আশুলিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাসের সেমিনার হলে জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে সেমিনার ও মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হবে।

/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর