শুক্রবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্কে নতুন দিগন্ত: বাণিজ্য ও কূটনীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৯ পিএম

শেয়ার করুন:

ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্কে নতুন দিগন্ত: বাণিজ্য ও কূটনীতি

দীর্ঘ এক দশকের অপেক্ষার পর, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্ক নতুন মোড় নিতে যাচ্ছে। একসময় উত্তপ্ত ও দূরত্বপূর্ণ সম্পর্কের মাঝখানে, একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হতে চলেছে। ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ছিল ঠান্ডা, তবে এবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় আসছেন, যা একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্বের সূচনা। এই সফরের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে যে নতুন দৃষ্টিভঙ্গির সৃষ্টি হবে, তা নিয়ে চর্চা চলছে। বিশেষ করে এই সফর এবং এর পরবর্তী পদক্ষেপগুলো দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতি এবং সম্ভাব্য সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।

এদিকে, পাকিস্তান থেকে এক শক্তিশালী ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল সম্প্রতি বাংলাদেশ সফর করেছে। তারা বাংলাদেশের ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের সঙ্গে বৈঠক করেছে এবং সম্পর্ক জোরদারের জন্য একাধিক পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করেছে। এরই মধ্যে, বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইকবাল হুসেইন ঘোষণা করেছেন যে, দুই দেশের মধ্যে সরাসরি বিমান চলাচল আবার শুরু হবে, যা বাণিজ্য, পর্যটন, শিক্ষা ও অন্যান্য খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে।


বিজ্ঞাপন


পাকিস্তানি ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশে কৃষি, শিক্ষা, পর্যটন, সিরামিকসহ নানা খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এতে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিক উন্মোচিত হওয়ার আশা তৈরি হয়েছে।

তবে, এই ইতিবাচক পরিবর্তন সত্ত্বেও, বাংলাদেশের এবং পাকিস্তানের সম্পর্কের এক বড় বাধা রয়েছে, যা ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং পরবর্তী ঘটনাবলী। পাকিস্তান এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৭১ সালে সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য ক্ষমা চায়নি। সেই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের সময় জব্দ করা বাংলাদেশের সম্পদও পাকিস্তান ফেরত দেয়নি। এই বিষয়গুলো এখনও অমীমাংসিত রয়ে গেছে, যা দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তাছাড়া, ১৯৭৪ সালের বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান ত্রিদেশীয় চুক্তির বাস্তবায়ন হয়নি, এবং পাকিস্তান যেসব যুদ্ধাপরাধীকে বিচার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা বাস্তবায়নেও তারা গড়িমসি করছে।

বাংলাদেশ পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির জন্য এই পুরনো বিষয়গুলো সমাধানের দাবি জানিয়ে আসছে। সম্প্রতি, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে কায়রোতে বৈঠক করেছেন এবং পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার জন্য ঐতিহাসিক বিষয়গুলো সুরাহার কথা বলেছেন।


বিজ্ঞাপন


এদিকে, পাকিস্তান থেকে আসা ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল এবং সরাসরি ফ্লাইট চালু হওয়ার সিদ্ধান্ত, একদিকে যেমন দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করবে, তেমনি ১৯৭১ সালের বিষয়গুলো নিরসন না হলে পুরো প্রক্রিয়ায় বাধা তৈরি হতে পারে।

এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর