শনিবার, ২২ মার্চ, ২০২৫, ঢাকা

পৌরসভা বিলুপ্তির প্রস্তাব করবে সংস্কার কমিশন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:১১ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img
পৌরসভা বিলুপ্তির প্রস্তাব। ছবি: সংগৃহীত

পৌরসভা বিলুপ্তির প্রস্তাব করতে পারেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেছেন, সংসদীয় পদ্ধতিতে সকল নির্বাচনের প্রস্তাব দেব। এই উদ্দেশে আমরা একটা একীভূত আইন করতে চাই। বর্তমান যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পৌরসভারগুলোর আয় নাই, বেশিরভাগের বেতন বাকি আছে। তাই পৌরসভাগুলোকে বিলুপ্ত করার প্রস্তাব করতে পারে সংস্কার কমিশন।

সোমবার (৬ জানুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতাধীন জাতীয় স্থানীয় সরকার ইনস্টিটিউটের (এনআইএলজি) সম্মেলন কক্ষে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, স্থানীয় সরকার নির্বাচন এক একটা, এক এক ধরনের নির্বাচন ব্যবস্থা। আমরা এই ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে চাই। এজন্য আমরা সংসদীয় পদ্ধতিতে সকল নির্বাচন করার প্রস্তাব দেব। এই উদ্দেশ্যে আমরা একটা একীভূত আইন করতে চাই। এছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয় করতে হবে, আমরা এমন প্রস্তাব করব।

এই স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ বলেন, বর্তমান যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে পৌরসভারগুলোর আয় নাই, বেশিরভাগের বেতন বাকি আছে। তাই পৌরসভাগুলোকে বিলুপ্ত করার প্রস্তাব করা হতে পারে। পাশাপাশি জেলা পরিষদগুলোর সাথে জনগণের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এর বাজেট বা প্রজেক্টগুলোর কোনো হিসাব পাওয়া যায় না। তাই একে জনগণের সাথে সম্পৃক্ত করতে জেলা পরিষদের নির্বাচন ব্যবস্থা পরিবর্তন দরকার রয়েছে।

আরও পড়ুন

৩২৩ পৌরসভার মেয়রকে অপসারণ

তোফায়েল বলেন, আমরা চাই জেলার অধীনে যতগুলো উপজেলা আছে, সেই উপজেলাগুলো থেকে মেম্বার নির্বাচিত হবে। এছাড়া একটি জেলা প্লানিং নামে সংস্থা হবে। তারা সকল উন্নয়ন প্ল্যান করবে এবং বাস্তবায়নের দিকটা দেখবে। এভাবে আমরা চিন্তা ভাবনা করছি।


বিজ্ঞাপন


ড. তোফায়েল বলেন, ২০২১ সাল থেকে ২০২৪ পর্যন্ত স্থানীয় সরকারের যত নির্বাচন হয়েছে তাতে খরচ হয়েছে প্রায় ২৩ হাজার কোটি টাকা। সমন্বিতভাবে যদি এই নির্বাচন করা হয়, তাহলে খরচ ৬০০ কোটি টাকার নিচে নামানো সম্ভব। আর সংসদসহ সব নির্বাচন একসাথে করা গেলে মোট খরচ এক হাজার কোটি টাকার মতো হতে পারে। তাই আমাদের প্রস্তাব হবে সংসদ নির্বাচনের সাথে স্থানীয় সরকার নির্বাচন করে ফেলা।

PPP

সংস্কার কমিশন কবে নাগাদ প্রস্তাব জমা দিতে পারে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা অবশ্য কাজ শুরু করেছি পরে। তারপরও ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহের মধ্যে আমরা আমাদের প্রস্তাব সরকারের কাছে দিতে চাই। নির্দিষ্ট করে বললে ২৪ ফেব্রুয়ারি।

আরও পড়ুন

ডিজিটাল হচ্ছে দেশের ৩২৮ পৌরসভা

ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, স্থানীয় কাজে এমপিদের সম্পৃক্ততার বিষয়টা সংবিধান সংস্কার কমিশন দেখছেন। তবে আমাদের ওখানে সাজেশন থাকবে এমপিরা যাতে লোকাল গভর্মেন্টের কোনো কাজে হস্তক্ষেপ না রাখে। স্থানীয় সরকারের আয় বাড়াতে ট্যাক্স কীভাবে লোকাল গভারমেন্টের সাথে সমন্বয় করা যায় সে বিষয়টাও দেখা হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদগুলোকে আরও কার্যকর করতে আমরা জনগণের পরিমাণের ভিত্তিতে ওয়ার্ডগুলোকে ভাগ করার প্রস্তাব করব। এখন লোকাল গভর্মেন্ট বহু ইউনিটে ভাগ করা রয়েছে। ভবিষ্যতে এটাকে ওয়ান ইউনিট করা যায় কি না আমরা সেরকম প্রস্তাব নিয়ে ভাববো। এটা এখনই করা সম্ভব। এটা একটা সুদূরপ্রসারী চিন্তা। সবার জবাবদিহিতা কীভাবে নিশ্চিত করা হবে সেটাও চিন্তা করা হবে। মামলা কমাতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতা বাড়ানো ও সালিস সিস্টেমকে আরও লিগালাইজ করার কথা চিন্তা করা হচ্ছে।

সংস্কার কমিটির প্রধান বলেন, একজন মেম্বার বা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে খরচ অনেক বেড়ে যায়। তাদের অনেক চাঁদা দিতে হয় সমাজ এটা তাদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। আইন এই খরচ বা তাদের কাজের সময় দেখা নাই। কিন্তু সেটা জনগনের মাধ্যমেই নির্ধারণ হয়ে গেছে। এই অবস্থার পরিবর্তন কী হবে সেটা ঠিক করা হবে।

বিইউ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর