বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫, ঢাকা

এবারও ঠেকানো গেল না আতশবাজি-পটকা, ঘটল অগ্নিকাণ্ডও

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:৩৭ এএম

শেয়ার করুন:

এবারও ঠেকানো গেল না আতশবাজি-পটকা, ঘটল অগ্নিকাণ্ডও
ছবি: সংগৃহীত

ইংরেজি বর্ষবরণে প্রতি বছরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নানা বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। তবে শেষ পর্যন্ত সেগুলো বাস্তবায়ন হয় খুব কমই। এবারও বর্ষবরণ ঘিরে নানা বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। আতশবাজি করা যাবে না, পটকা ফোটানো যাবে না বলে নির্দেশনা এসেছিল উচ্চ আদালত থেকেও। তবে শেষ পর্যন্ত নির্দেশনা উপেক্ষা করেই যথারীতি চলেছে আতশবাজি ও পটকা ফোটানো। এতে অতিষ্ঠ হয়েছে নগরবাসী। কয়েকটি স্থানে যথারীতি ঘটেছে অগ্নিকাণ্ডও। দগ্ধ হয়েছে দুই শিশু। 

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত ১২টার কাঁটা ছোঁয়ার আগেই রাজধানী ঢাকার প্রতিটি এলাকায় শুরু হয় আতশবাজি ও পটকা ফোটানো। পুরান ঢাকায় এর মাত্রা ছিল অসহনীয়। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানেও আতশবাজি ও পটকার মাধ্যমে উদযাপিত হয়েছে নববর্ষ।


বিজ্ঞাপন


আতশবাজির কারণে আগুনের ঘটনা ঘটেছে রাজধানীর মিরপুর, ধানমন্ডি ল্যাবএইডের পেছনে, মিরপুরে ডাস্টবিনের ময়লায় ও ধানমন্ডিতে একটি দোকানে। তবে ফায়ার সার্ভিসের তৎপরতায় এসব আগুন দ্রুতই নিভিয়ে ফেলা হয়। ফলে বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি।

ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাফি আল ফারুক জানান, রাতে সংবাদ আসে মিরপুর ১১ নম্বর এলাকায় একটি ডাস্টবিনের ময়লায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। পরে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে রওয়ানা হলে খবর আসে আগুন নিভে যায়। অন্যদিকে রাত ১২টা ৫৩ মিনিটে আমাদের কাছে সংবাদ আসে রাজধানীর ধানমন্ডি ল্যাবএইডের পেছনে একটি দোকানে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আমাদের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে যায়।

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট সূত্রে জানা যায়, ফানুস ও আতশবাজি পোড়ানোর কারণে দুই শিশু দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক (আরএস) ডা. শাওন বিন রহমান জানান, ইংরেজি নতুন বর্ষবরণে পটকা ফোটানোর কারণে দুই শিশু দগ্ধ হয়ে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছে। এদের মধ্যে একজনের নাম ফারহান (৮)। তার শরীরের ১৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া আরেক শিশুকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। 

Atos


বিজ্ঞাপন


এদিকে থার্টি ফার্স্ট নাইট ও ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে ঢাকা মহানগর এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনজীবন স্বাভাবিক রক্ষার স্বার্থে ১১ দফা নির্দেশনা সম্বলিত গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে ফানুস ওড়ানো ও পটকা-আতশবাজি ফোটানো নিষিদ্ধ।

তবে রাত ১২টা বাজার আগেই সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করার উদযাপনে নামে পুরো ঢাকা নগরী। আকাশে ফানুস ওড়ানো হয় এবং পটকা-আতশবাজি ফুটিয়ে বিদায় জানানো হলো ২০২৪ সালকে।

রাজধানীর প্রায় প্রতিটি এলাকাতেই আতশবাজি ও পটকা ফোটানো হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এসবের শব্দে শিশু ও রোগীদের প্রচণ্ড কষ্ট হয় বলে জানান অনেকেই।

এবার উচ্চ আদালত একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আতশবাজি বন্ধে নির্দেশনা দেয়। পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছিল। পরে ঢাকা মহানগর এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও জনজীবন স্বাভাবিক রক্ষায় ১১ দফা নির্দেশনা দেয় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)।  কিন্তু এসব বন্ধে কঠোর কোনো পদক্ষেপ নজরে পড়েনি।

শব্দদূষণ রোধে প্রথমবারের মতো এবার পরিবেশ অধিদফতরের ম্যাজিস্ট্রেট থাকার কথা। যদিও এখন পর্যন্ত এসবে জড়িত কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার তথ্য পাওয়া যায়নি।

জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর