প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ আশা প্রকাশ করে বলেছেন, ২০২৫ সালেই দেশের বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ হতে সম্পূর্ণরূপে প্রভাবমুক্ত হয়ে প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতার সুফল ভোগ করবে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এমন তথ্য জানিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, তার ঘোষিত রোডম্যাপ বাস্তবায়নে গৃহীত পদক্ষেপসমূহের মাধ্যমে ২০২৫ সাল হবে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের জন্য ‘নবযাত্রার একটি বছর’। ২০২৫ সালেই বাংলাদেশের বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ হতে সম্পূর্ণরূপে প্রভাবমুক্ত হয়ে প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতার সুফল ভোগ করবে এবং রাষ্ট্রের একটি স্বাধীন অঙ্গ হিসেবে জনগণের সেবায় নিয়োজিত হওয়ার মাধ্যমে ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে সক্ষম হবে।
দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ ২০২৪ সালের ১১ আগস্ট শপথ গ্রহণ করেন। তিনি প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের হারানো আস্থা ফিরিয়ে আনার প্রয়াস হিসেবে বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন।
গত ২১ সেপ্টেম্বর ঘোষিত রোডম্যাপে দেশের বিচার বিভাগের অর্থপূর্ণ সংস্কার নিশ্চিতকল্পে বিভিন্ন স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ঘোষিত হয়। ওইসব পরিকল্পনাসমূহ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে স্বাধীন কাউন্সিল গঠন, অধস্তন আদালতের বিচারকগণের বদলি ও পদায়ন নীতিমালা প্রণয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে।
ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ মামলা চূড়ান্তভাবে নিষ্পত্তি হওয়ার প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল পুনর্গঠিত হয়েছে এবং সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল বর্তমানে পূর্ণ গতিতে তার কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
বিজ্ঞাপন
এছাড়া যতদ্রুত সম্ভব বিচার বিভাগ থেকে সকল প্রকার দুর্নীতি বিলোপের মাধ্যমে বিচারপ্রার্থীর জন্য স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতামূলক বিচার প্রাপ্তি নিশ্চিতকল্পে ইতোমধ্যে প্রধান বিচারপতি বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। বিশেষ করে সুপ্রিম কোর্টের সেবার মানোন্নয়নে প্রধান বিচারপতি ১২ দফা নির্দেশনা প্রদান করেছেন এবং ২০২৪ সালের মধ্যেই উক্ত ১২ দফা নির্দেশনার যথাসম্ভব বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রতি মাসে প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে মনিটরিং সভা নিয়মিতভাবে আয়োজন করা হচ্ছে।
সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের আদালতসমূহে সেবার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক একটি হেল্পলাইন ফোন নাম্বার চালু করা হয়েছে। যে হেল্পলাইনে কল করে সেবাগ্রহীতা প্রয়োজনীয় তথ্যসেবা গ্রহণ করতে পারবেন কিংবা যেকোনো অনিয়ম সম্পর্কে সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে পারবেন। এক্ষেত্রে প্রাপ্ত অভিযোগসমূহ সম্পর্কে তদন্ত পরিচালনাপূর্বক সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকেন।
আরও পড়ুন
স্বতন্ত্র বিচার বিভাগ ও বিচারক নিয়োগে কাউন্সিল গঠন দ্বারপ্রান্তে
২০২৫ সালের মধ্যে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ ঘোষিত রোডম্যাপের সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিচারসেবাকে জনগণের দোড়গোড়ায় পৌঁছানোর জন্য নানামুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে আগামী ২ জানুয়ারি হতে হাইকোর্ট বিভাগের কোম্পানি সংক্রান্ত একটি বেঞ্চে সম্পূর্ণ কাগজমুক্ত বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা শুরু করা হবে। পর্যায়ক্রমে সুপ্রিম কোর্টের অন্যান্য বেঞ্চসমূহে কাগজমুক্ত কার্যক্রম পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদে দেশের জেলা আদালতসমূহে সম্পূর্ণ কাগজমুক্ত বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলে প্রধান বিচারপতি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
এআইএম/এফএ

