রোববার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫, ঢাকা

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধানকে অপসারণে আমলাদের আল্টিমেটাম

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:২২ পিএম

শেয়ার করুন:

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধানকে অপসারণে আমলাদের আল্টিমেটাম

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীকে অপসারণের দাবিতে উত্তাল হয়েছে প্রশাসন ক্যাডার। জনপ্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা এবং তাদের সংগঠনগুলোর নেতারা এখন তার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেমেছেন এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাকে অপসারণের আল্টিমেটাম দিয়েছেন।

মুয়ীদ চৌধুরী সম্প্রতি উপসচিব ও যুগ্ম সচিব পদে পদোন্নতি পরীক্ষার মাধ্যমে দেওয়ার এবং প্রশাসন ক্যাডারের ৫০ শতাংশ কর্মকর্তাকে উপ-সচিব পদে পদোন্নতির জন্য সুপারিশ করেন। এই সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা তার পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার হয়ে ওঠেন। তার দাবি— এই পদোন্নতি নীতি তাদের স্বার্থের প্রতি অবিচার এবং সমতা নিশ্চিত করতে হবে।


বিজ্ঞাপন


বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে আয়োজিত প্রতিবাদ সভায় প্রশাসন ক্যাডারের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। সেখানে তারা বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস চালু করার দাবি জানান এবং উপ-সচিব পদে শুধুমাত্র প্রশাসন ক্যাডার থেকে পদোন্নতি দেওয়ার আহ্বান জানান।

বর্তমান বিধিমালা অনুযায়ী, উপ-সচিব পদে পদোন্নতি পাওয়ার জন্য ৭৫ শতাংশ কর্মকর্তাই প্রশাসন ক্যাডার থেকে নির্বাচিত হন, বাকি ২৫ শতাংশ অন্যান্য ক্যাডার থেকে। কিন্তু নতুন সুপারিশে ৫০ শতাংশ কর্মকর্তাকে অন্য ক্যাডার থেকে নিয়ে আসার প্রস্তাব দেওয়ায়, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা ব্যাপকভাবে প্রতিবাদ জানান।

বিসিএস (প্রশাসন) কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সভাপতি এ বি এম আব্দুস সাত্তার বলেন, আমরা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরীকে অপসারণের দাবি জানাচ্ছি।

তিনি অভিযোগ করেন, আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে সুবিধাভোগী এবং তার পদত্যাগ করা প্রয়োজন। নতুবা প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা জানেন কীভাবে তার অপসারণের ব্যবস্থা করতে হয়।


বিজ্ঞাপন


এ সময়, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেন কামালও একই দাবি জানান এবং কমিশনের প্রধানকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আপনি তো পরীক্ষা দিয়ে পদোন্নতি নেননি। আপনি অবিলম্বে সংস্কার কমিশন থেকে পদত্যাগ করুন। এছাড়া তিনি কমিশনের পুনর্গঠন এবং প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ন্যায্য পদোন্নতির দাবিও জানান।

বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. মো. আনোয়ার উল্লাহ্ প্রশাসন ক্যাডারের বিরুদ্ধে কোনো পরিবর্তন বা কোটা আরোপ করার বিরুদ্ধে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, আমরা এক আছি, এক থাকব। প্রশাসন ক্যাডারের উপর কোনো সার্জারি করতে দেব না। কোনো অযাচিত সুপারিশ হলে কঠিন কর্মসূচি দেওয়া হবে।

সভায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ তার বক্তব্যে বলেন, এই কমিশনের প্রতিবেদন কোনো কাজে আসবে না। এটি শুধু অপ্রয়োজনীয় হবে এবং কোনো কাজে আসবে না। তিনি সকল কর্মকর্তাকে ঐক্যবদ্ধ থাকার পরামর্শ দেন।

এদিকে, সভায় উপস্থিত কর্মকর্তারা বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস চালু করার পাশাপাশি, উপসচিব পদে ১০০ শতাংশ প্রশাসন ক্যাডার থেকে পদোন্নতি দেওয়ার দাবি জানান।

এটি ছিল প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের প্রথম ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ সভা, যা বিসিএস (প্রশাসন) কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড এবং বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে আয়োজন করে। সভায় প্রশাসন ক্যাডারের বর্তমান ও সাবেক কয়েকশ কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন, এবং বিভিন্ন জেলার ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা (ইউএনও) অনলাইনে অংশ নেন।

বিইউ/এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর