মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যার অন্যতম সন্দেহভাজন সুমন সিকদার ওরফে মুসাকে গ্রেফতার করেছে ওমান পুলিশ। তাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে এনসিবির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও পুলিশের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মহিউল ইসলাম শুক্রবার (৩ জুন) সাংবাদিকদের এই তথ্য নিশ্চিত করেন।
বিজ্ঞাপন
আলোচিত টিপু হত্যাকাণ্ডের মামলার তদন্তে মুসার নাম আসার পর তাকে ধরতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চেয়েছিল বাংলাদেশ পুলিশ। তবে ওমানের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দি বিনিময় চুক্তি নেই। দুই দেশের সম্পর্ক ও বিভিন্ন চুক্তির ভিত্তিতে মুসাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে কাজ চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।
পুলিশ কর্মকর্তা মহিউল ইসলাম জানান, মুসাকে ফিরিয়ে আনতে ওমানের সঙ্গে যোগাযোগ হচ্ছে। পাশাপাশি পুলিশের একটি দল পাঠানোর বিষয়েও ভাবছে পুলিশ সদর দফতর।
গত ২৪ মার্চ রাত ১০টার দিকে রাজধানীর শাহজাহানপুরের আমতলা এলাকায় গাড়িতে থাকা অবস্থায় মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক টিপুকে এলোপাতাড়ি গুলিতে খুন করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় কলেজছাত্রী প্রীতিও মারা যান। পরদিন টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি মামলা করেন।
এই মামলায় বগুড়া থেকে শ্যুটার মাসুম মোহাম্মদ ওরফে আকাশকে গ্রেফতার করে ডিবি। পরে আরফান উল্লাহ দামাল নামে আরও একজনকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার করা হয়। এ ঘটনায় মতিঝিল থানার ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুকসহ চারজনকে গ্রেফতারের কথা জানায় র্যাব।
বিজ্ঞাপন
এই ঘটনা তদন্তে র্যাব মুসার সম্পৃক্ততা খুঁজে পায়। তিনি মূলত রাজনীতি ও অপরাধজগতের মধ্যে যোগসূত্র হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। ঢাকা ও দুবাইয়ের অপরাধজগতের মধ্যে সংযোগের সমন্বয় করতেন তিনি। হত্যাকাণ্ডের ১২ দিন আগেই মুসা দুবাই চলে যান। সেখান থেকেই মূলত হত্যা পরিকল্পনা এবং যাবতীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বিদেশে পলাতক পুরস্কার ঘোষিত ২৩ শীর্ষ সন্ত্রাসীর অন্যতম দুই সহোদর প্রকাশ-বিকাশের সহযোগী হিসেবে অপরাধ জগতে পা রাখেন মুসা। দুর্ধর্ষ হওয়ার কারণে অল্প দিনেই মুসাকে কিলার বাহিনীতে কাজে লাগায় বিকাশ।
মিরপুরের একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাবন্দি হন মুসা। বোছা বাবু হত্যা মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে যান মতিঝিলের ওমর ফারুক। কারাভ্যন্তরেই মুসার সঙ্গে পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা হয় ফারুকের।
ফারুক জামিনে বের হওয়ার পর মুসাও জামিন পান। তবে জামিনে বের হয়ে মুসা আর মিরপুর এলাকায় ফেরেননি। ওমর ফারুক ও বিকাশের আরেক বন্ধু হাসানের শেল্টারে এজিবি কলোনি এলাকায় যাতায়াত করেন। এজিবি কলোনি ও শাহজাহানপুর এলাকার ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসা থেকে মাসিক হারে টাকা পেতেন মুসা।
২০১৬ সালে মুসার নেতৃত্বেই মুসার ভাই সালেহ বোছা বাবুকে হত্যা করে। বাবু হত্যা মামলায় মুসা গ্রেফতারও হয়। পরে জামিনে বেরিয়ে আসে। এবারও এই মুসাই মাসুম ওরফে আকাশকে টিপু হত্যায় কাজে লাগায়। নিজের ভাই সালেহকেও কাজে লাগায় হত্যাকাণ্ডে।
জেবি