সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বাংলাদেশে একটি হিন্দু মন্দির ভাঙচুরের দাবি নিয়ে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়লেও, ফ্যাক্ট চেকের মাধ্যমে এটি ভুয়া দাবি হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। আসল ঘটনা হলো—এটি ২০২১ সালের পাকিস্তানের একটি মন্দির ভাঙচুরের ভিডিও, যা ভুলভাবে বাংলাদেশে ঘটেছে বলে প্রচার করা হচ্ছে। একইভাবে, অন্য একটি ভিডিওতে হিন্দু সাধুকে জোর করে মুসলমান বানানোর দাবি করা হলেও, সেটি ছিল একটি মানবিক উদ্যোগের অংশ, যা আবারও ভুলভাবে ছড়ানো হয়েছে।
পাকিস্তানের দ্য ডন সংবাদপত্রে ২০২১ সালের ৫ আগস্ট "Mob ransacks temple after minor boy gets bail in desecration case" শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে উল্লিখিত ভিডিওটি পাকিস্তানের রহিম ইয়ার খান জেলার ভোঙ্গে শহরের মন্দিরে হামলার ভিডিও। ৮ বছর বয়সী এক হিন্দু শিশুকে মাদরাসার লাইব্রেরিতে প্রস্রাব করার কারণে গ্রেফতার করা হয়েছিল, পরে তাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়। এই ঘটনায় স্থানীয় মুসলিম জনতা একটি মন্দিরে হামলা চালায়।
বিজ্ঞাপন
এছাড়া, ২০২১ সালের ৪ আগস্ট পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই-ইনসাফের সাবেক সংসদ সদস্য ড. রমেশ কুমার ভাঙ্কওয়ানির এক্স পোস্টেও ওই ভিডিওটি পাওয়া যায়। তাছাড়া, ৫ আগস্ট পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের এক্স পোস্টে জানানো হয় যে, ভাঙচুরকৃত মন্দিরটি একটি গনেশ মন্দির ছিল এবং তা সংস্কার করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ছড়ানো হয়েছে, যেখানে দাবি করা হয়েছে, হিন্দু ধর্মের এক সাধুকে জোর করে মুসলমান বানানো হয়েছে। রিউমর স্ক্যানারের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এটি কোনো জোরপূর্বক ধর্মান্তকরণের ঘটনা নয়। ভিডিওটি আসলে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো এক অসহায় ব্যক্তিকে পরিষ্কার করার মানবিক উদ্যোগের ভিডিও। ওই ব্যক্তি মুসলিম ধর্মের অনুসারী।
এই ভিডিওটি ২৬ অক্টোবর মাহবুব ক্রিয়েশন ফোর নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয়েছিল। ভিডিওটির ক্যাপশন থেকে জানা যায়, ওই ব্যক্তি এবং তার পরিবার মুসলিম। একই ভিডিও ফেসবুকে একটি পেজেও প্রকাশিত হয়, যেখানে লেখা ছিল— ব্যক্তির দুরাবস্থার কারণে তাকে পরিষ্কার করা হয়েছিল। ওই পেজটি নিয়মিতভাবে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো অসহায় ব্যক্তিদের পরিষ্কার করে এবং এ ধরনের মানবিক কার্যক্রম চালায়।
বিজ্ঞাপন
এছাড়া, ৯ ডিসেম্বর ওই ব্যক্তির একটি লাইভ ভিডিও প্রকাশিত হয়, যেখানে তিনি জানান, তিনি এবং তার পরিবার মুসলিম এবং হিন্দু ধর্মের সাধুকে জোরপূর্বক মুসলিম বানানোর দাবি মিথ্যা। ভারতে তাদের ভিডিও ব্যবহার করে অপ্রচার চালানো হচ্ছে। রিউমার স্ক্যানার বলছে— বাংলাদেশে এসব বিভ্রান্তিকর ভিডিও প্রচার করা হচ্ছে, যা ভুল তথ্য এবং অপপ্রচার ছড়াচ্ছে।
এইউ