উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হামলা ও ভাঙচুরের একদিন পর নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে ভারতের ত্রিপুরার আগরতলাতে বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে সবধরনের ভিসা ও কনসুলার সেবা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের প্রথম সচিব ও দূতালয় প্রধান মো. আল আমীন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এই আদেশের কথা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
গতকাল সোমবার বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন প্রাঙ্গণে ঢুকে হামলা চালায় হিন্দুত্ববাদী সংগঠন হিন্দু সংঘর্ষ সমিতিসহ কয়েকটি সংগঠনের সমর্থকেরা। এ সময় বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ছিঁড়ে এতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ। মঙ্গলবার ভারতীয় হাইকমিশনারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়। এছাড়া সারাদেশের মানুষ ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে। ওই হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত সাতজনকে গ্রেফতার করেছে ভারতীয় পুলিশ। এছাড়া তিনজন পুলিশ কর্মীকে সাসপেন্ড এবং ডিএসপি পদমর্যাদার একজন অফিসারকে ‘ক্লোজ’ করা হয়েছে।
সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, প্রাপ্ত বিবরণগুলো প্রমাণ করে পূর্বপরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রধান ফটক ভেঙে বিক্ষোভকারীদের প্রাঙ্গণে আক্রমণ করার সম্মতি দেওয়া হয়েছিল। এই প্রক্রিয়ায়, স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের উপস্থিতিতে তারা জাতীয় পতাকার খুঁটি ভাঙচুর করে, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা এবং সহকারী হাইকমিশনের অভ্যন্তরে সম্পত্তিরও ক্ষতি করে। দুঃখজনকভাবে, প্রাঙ্গণ রক্ষার দায়িত্বে থাকা স্থানীয় পুলিশ সদস্যদের শুরু থেকেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় না থাকতে দেখা গেছে। সহকারী হাইকমিশনের সদস্যরা গভীর নিরাপত্তাহীনতার ভুগছে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
তলব পেয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার
একটি ঘটনাকে কেন্দ্র করে সম্পর্ক আটকে থাকবে না: ভারতীয় হাইকমিশনার
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ সরকার আরও জোর দিয়ে বলতে চায়, বাংলাদেশের একটি কূটনৈতিক মিশনের ওপর এই নৃশংস হামলা এবং বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা ২০২৪ সালের ২৮ নভেম্বর কলকাতায় একই ধরনের সহিংস বিক্ষোভের একটি প্যাটার্ন তৈরি হয়েছে। আগরতলার এই বিশেষ আইনটি কূটনৈতিক মিশনগুলোর অলঙ্ঘনীয়তার লঙ্ঘন, যেমন কূটনৈতিক সম্পর্ক সম্পর্কিত ভিয়েনা কনভেনশন, ১৯৬১ দাবি করে।
এতে আরও বলা হয়, যেহেতু যেকোনো ধরনের অনুপ্রবেশ বা ক্ষতি থেকে কূটনৈতিক মিশনগুলোকে রক্ষা করা স্থানীয় সরকারের দায়িত্ব, তাই বাংলাদেশ সরকার ভারত সরকারকে এই ঘটনা মোকাবিলায় অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত এবং ভারতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশনগুলোর বিরুদ্ধে আরও যেকোনও সহিংসতা রোধ করা এবং কূটনীতিক ও তাদের পরিবারের সুরক্ষারও দাবি জানানো হয়েছে।
জেবি