বাংলাদেশে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
মঙ্গলবার (৩১ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ডিক্যাব আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে এমন মনোভাবের কথা জানান মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। তবে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু করতে জনগণকেই এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করেন রাষ্ট্রদূত।
বিজ্ঞাপন
আগামী বছর অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে পিটার হাস বলেন, ‘সম্প্রতি আমি আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠানের গুরুত্বের কথা বলছি, যেন বাংলাদেশের জনগণ অবাধে তাদের নেতা নির্বাচন করতে পারে।’
তিনি বলেন, 'এমন পরিস্থিতি তৈরি করতে কীভাবে কাজ করবে সেই সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের ওপর নির্ভর করে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ও নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
পিটার হাস বলেন, 'অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশের জনগণ, গণমাধ্যম ও সুশীল সমাজের কাজ।'
৫০ বছরে দুই দেশের সম্পর্ক কতটা উন্নত হয়েছে অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্যে তা মনে করিয়ে দেন পিটার ডি হাস।
বিজ্ঞাপন
বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের বিষয়ে মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, আগামী ৫০ বছরে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র কাজ করে যাবে, যেভাবে গত ৫০ বছর কাজ করে গেছে।
সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে র্যাবের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা, বাংলাদেশে নির্বাচন ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে মার্কিনিদের দৃষ্টিভঙ্গির প্রসঙ্গের বিষয়গুলো উঠে এসেছিল।
নির্বাচন নিয়ে পিটার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায়। আর তার ক্ষেত্রটা জনগণকেই প্রস্তুত করতে হবে।
'মানবাধিকার ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় ছাড় নয়'
মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ভয়-ভীতিহীন সাংবাদিকতা সম্পর্কে সবসময় উৎসাহ দিয়ে থাকে। বাংলাদেশেও সেটি চায় যুক্তরাষ্ট্র।
পিটার হাস বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রে রয়েছে মানবাধিকার সমুন্নত রাখা। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এসব ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের সাম্প্রতিক সমীক্ষার উদাহরণ টেনে রাষ্ট্রদূত বলেন, অবাধ গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র যে ঠিক পথে আছে, তা কিন্তু নয়; রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারসের সাম্প্রতিক সমীক্ষা অনুযায়ী ১৮২টি দেশের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান ৪২তম। অর্থাৎ শীর্ষ তালিকার কাছাকাছি যুক্তরাষ্ট্র নেই। তাই যুক্তরাষ্ট্রের পরিস্থিতির উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে। একই সমীক্ষায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৬২তম।
বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন পিটার হাস। এছাড়া র্যাব পুনর্গঠন হলে নিষেধাজ্ঞা উঠতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন পিটার হাস।
ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিকাব) আয়োজিত অনুষ্ঠানে সংগঠনটির সভাপতি রেজাউল করিম লোটাস ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এ কে এম মঈনউদ্দীন বক্তব্য দেন।
বিইউ/এমআর

