শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

‘নারীর পদায়ন হয়েছে কিন্তু ক্ষমতায়ন হয়নি’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৮ মে ২০২২, ০৫:৪৮ পিএম

শেয়ার করুন:

‘নারীর পদায়ন হয়েছে কিন্তু ক্ষমতায়ন হয়নি’

নারীর শুধু পদায়ন হয়েছে কিন্তু ক্ষমতায়ন হয়নি বলে মনে করেন সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সভাপতি শম্পা বসু। নারীর মজুরিবিহীন গৃহস্থালি কাজের আর্থিকমূল্য নিরূপণ, নারীর কাজের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠাসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার (২৮ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম আয়োজিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।


বিজ্ঞাপন


শম্পা বসু বলেন, গত কয়েক বছরে নারীরা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে বসেছেন ঠিকই, পদায়নও হয়েছে কিন্তু ক্ষমতায়ন হয়নি। নারীরা এখনও তার কর্মস্থলে, সমাজে, পরিবারে নানাভাবে অবহেলিত হচ্ছেন। 

নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত ও নারীকে রাষ্ট্রের অংশ হিসেবে মর্যাদার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, স্বামী পরিত্যক্তা, বয়স্ক ও দুস্থ নারীদের পুনর্বাসন করতে হবে এবং একে রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। সরকারিভাবে গ্রাম-শহরে এলাকাভিত্তিক মানসম্পন্ন ডে-কেয়ার সেন্টার নির্মাণ এবং জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কর্মজীবী নারীদের জন্য হোস্টেল নির্মাণে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে।

মতবিনিময় সভায় বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, নারীর স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কর্মসংস্থান, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, স্বামী পরিত্যক্তা ও দুস্থ নারীদের পুনর্বাসনসহ নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে বাজেটে বরাদ্দ বাড়াতে হবে। নারী-পুরুষের সমানাধিকার প্রতিষ্ঠায় সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

এসময় নারীর গৃহস্থালি কাজের গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, গৃহস্থালির কাজ ছাড়া কোনো পরিবার ও সমাজ কল্পনা করা যায় না। আর গৃহস্থালির কাজের সিংহভাগই করে থাকেন পরিবারের নারী সদস্যরা। 


বিজ্ঞাপন


মনীষা আরও বলেন, গৃহস্থালি কাজ ছাড়া মানুষের শারীরিক, মানসিক, সাংস্কৃতিক জীবন বিকশিত হওয়া তো দূরের কথা, টিকিয়ে রাখাই কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু এ কাজের কোনো স্বীকৃতি নেই, মর্যাদা নেই। এমনকি এ কাজকে তাচ্ছিল্যও করা হয় সবসময়।

মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন গবেষণাপত্র উল্লেখ করে গবেষণা সংস্থা ‘সানেম’র তথ্য অনুযায়ী, গৃহস্থালি কাজের আর্থিকমূল্য হিসাব করা হয় তাহলে তা দাঁড়াবে নারীর ক্ষেত্রে জিডিপির ৩৯ দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং পুরুষের ক্ষেত্রে ৯ শতাংশ। সিপিডির গবেষণায় দেখা গেছে, নারীর কাজের ৭৮ থেকে ৮৭ শতাংশই অর্থনৈতিক হিসাবে আসে না।

বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ, নৈতিক অবস্থান, নারীর অধিকার ও সামাজিক মর্যাদার প্রশ্নে তো বটেই, সামাজিক ন্যায্যতার কারণেও নারীর কাজের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দরকার।

সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সভাপতি শম্পা বসুর সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ডা. মনীষা চক্রবর্তী, অধ্যাপক শারমিন নীলিমা, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরামের সাধারণ সম্পাদক দিলরুবা নুরী প্রমুখ।

এএম/জেবি

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর