সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করা হচ্ছে বলে গণমাধ্যমে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে তাকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করা হচ্ছে- এটা নিয়ে অনেক জায়গায় নিউজ হচ্ছে। একটা দরখাস্ত এসেছে, আপনারা কী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, ‘আমার একটাই উত্তর গুজবে কান দেবেন না। আমি এক কথায় বলে দিলাম, গুজবে কান দেবেন না।’
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে প্রবেশে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর, আর অবসরে যাওয়ার সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৫৯ বছর। তবে মুক্তিযোদ্ধা কোটাধারীদের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম আছে। চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩২ ও অবসরে যাওয়ার বয়স ৬০ বছর নির্ধারণ করা আছে তাদের জন্য।
অনেকদিন ধরেই সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করা নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করছেন চাকরিপ্রত্যাশীরা। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এলে এ নিয়ে আবারও আলোচনা শুরু হয়। এমন অবস্থার মধ্যেই সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়স ৬৫ করার বিষয়ে সম্প্রতি বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন থেকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে একটি চিঠি দেওয়া হয়। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিবের কাছে পাঠিয়ে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
চিঠিতে বলা হয়, সরকারি চাকরিতে প্রবেশ ও অবসরের বয়স এর আগে যথাক্রমে ৩০ ও ৫৯ (মুক্তিযোদ্ধা কোটাধারীর যথাক্রমে ৩২ ও ৬০) বছর করা হয়েছিল। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্যমতে, বাংলাদেশের মানুষের গড় আয়ুষ্কাল বেড়ে বর্তমান ৭২ দশমিক ৩ বছরে দাঁড়িয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকের চাকরির অবসরের বয়সসীমা ৬৫ বছর এবং সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের চাকরির বয়সসীমা ৬৭ বছর। এর আগে যেসব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাদের অনেকের বয়স ৬৭ বছরের ঊর্ধ্বে।
বিজ্ঞাপন
অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, চাকরিতে প্রবেশের বয়স নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানদণ্ড পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিশ্বের ১৬২ দেশে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর, কোনো কোনো দেশে আবার এটি উন্মুক্ত। একই সঙ্গে অবসরের বয়সসীমা বিভিন্ন বিভাগভেদে ৬৫ থেকে ৬৭ বছর এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৭২ বছর। চাকরিতে প্রবেশ ও অবসরের বয়স বাড়ানোর বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে চাকরিপ্রত্যাশী এবং চাকরিরতদের পক্ষে আন্দোলন ও দাবি উত্থাপিত হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মধ্যেই সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করা হচ্ছে বলে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়। ওই চিঠির প্রেক্ষিতে বয়সসীমা উভয়দিক থেকেই বৃদ্ধি হতে পারে বলে কেউ কেউ ধারণা করলেও আজ ৩৫ করার খবরটিকে গুজব বলে উড়িয়ে দেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান।
এমআর