মঙ্গলবার, ১৪ মে, ২০২৪, ঢাকা

নূরুল হুদা কমিশনের নেওয়া যত প্রকল্প

সাকিব আবদুল্লাহ
প্রকাশিত: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৭:৫৮ এএম

শেয়ার করুন:

নূরুল হুদা কমিশনের নেওয়া যত প্রকল্প
সিইসি নূরুল হুদা ও অন্যান্য কমিশনাররা (ফাইল ছবি)

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি ছিল কে এম নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) শেষ কর্মদিবস। এই কমিশনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলেও তাদের নানামুখী কাজ নিয়ে বিভিন্ন মহলে এখনও চলছে নানা আলোচনা। ভালো-মন্দ দুটিই প্রাধান্য পাচ্ছে সেই আলোচনার টেবিলে। বিদায়ী নির্বাচন কমিশন কতটুকু সফল সেই আলোচনার মধ্যে উঠে এসেছে পাঁচ বছরে হুদা কমিশনের অধীনে নেওয়া প্রকল্পগুলোর কথাও।

২০১৭ সালে দায়িত্ব নেওয়া নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিজের মেয়াদ পূর্ণ করে বিদায় নিয়েছে। মেয়াদের পাঁচ বছরে ছয়টি প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে যুক্ত ছিল হুদা কমিশন। এর মধ্যে চারটি এখনও চলমান। প্রকল্পগুলো হচ্ছে ক. সাপোর্ট টু বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ইলেকশন ২০১৮/২০১৯, খ. ইসি সচিবালয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি (এসসিডিইসিএস), গ. আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেমস ফর ইনহ্যান্স একসেস টু সার্ভিসেস(আইডিএ) ঘ. ইভিএম ব্যবহার ঙ. সাপোর্ট টু বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ইলেকশন ২০১৮/২০১৯ (২য় পর্যায়) চ. আইডিএ (২য় পর্যায়)।


বিজ্ঞাপন


ছয়টির মধ্যে এখনও কাজ চলছে এসসিডিইসিএস, আইডিয়া প্রকল্প প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায় এবং ইভিএম ব্যবহারের প্রকল্প।

নির্বাচন কমিশন প্রতিবেদন ২০১৭-২০২২ ঘেঁটে দেখা গেছে, ৩০ কোটি ৬২ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ের এসসিডিইসিএসের মেয়াদ ধরা হয়েছে জুলাই ২০১৮ থেকে জুন ২০২২ পর্যন্ত। এটি প্রশিক্ষণনির্ভর প্রকল্প, বেশিরভাগ ব্যয় বৈদেশিক প্রশিক্ষণেই হওয়ার কথা। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতির কারণে এখনও বৈদেশিক প্রশিক্ষণ আয়োজন করতে পারেনি ইসি। সূত্রে জানা গেছে, এবছর সেগুলো আয়োজন করা হতে পারে।

আইডিএ প্রথম পর্যায়ের প্রকল্প শেষ হচ্ছে এবছরের জুনে। এর আওতায় অক্টোবর ২০১৫ থেকে স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র পারসোনালাইজেশন ও বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অক্টোবর ২০১৫ থেকে সেপ্টেম্বর ২০২১ পর্যন্ত ৭৭.৩০ মিলিয়ন স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র উৎপাদন, ৬৭.৯০ মিলিয়ন স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র পারসোনালাইজেশন এবং ৬৬.৭০ মিলিয়ন স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র দেশব্যাপী বিতরণ করা হয়েছে।

আইডিএ দ্বিতীয় পর্যায়ের মেয়াদ ধরা হয়েছে ডিসেম্বর ২০২০ থেকে নভেম্বর ২০২৫ সাল পর্যন্ত। এতে ১৮০০ কোটি ব্যয় করা হবে৷ এ প্রকল্পের মাধ্যমে এনআইডি ডাটাবেজকে সম্প্রসারিত করে একটি আধুনিক, যুগোপযোগী, সুরক্ষিত ও আদর্শ ডেটাবেজে রূপান্তরের মাধ্যমে দেশের সব নাগরিককে ইউনিক আইডির আওতায় নিয়ে আসা, নাগরিক সেবায় স্বচ্ছতা আনা ও ২০৩০ সালের মধ্যে সব নাগরিককে বৈধ জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান এবং স্বচ্ছ ও নির্ভুল ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন করা হবে।


বিজ্ঞাপন


ইসির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ইভিএম প্রকল্পে দেড় লাখ মেশিন কেনা হয়েছে। সেগুলো বিভিন্ন নির্বাচনে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত জাতীয় সংসদের ছয়টি আসন এবং নয়টি উপনির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া, পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচন, ১২৭টি পৌরসভা নির্বাচন, ১৮টি উপজেলা নির্বাচন এবং ৬৮টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ইভিএমের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হয়েছে।

শুরুতে উল্লিখিত ক এবং ঙ প্রকল্প ছিল জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে আলোচনা সভা ও কর্মশালার আয়োজন করা। দুটি পর্যায়ে এগুলো করা হয়।

গত সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) নির্বাচন ভবনের লেক ভিউ চত্বরে বিদায়ী সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা জানান, বিদায়ী নির্বাচন কমিশনের (ইসি) মেয়াদকালে জাতীয় সংসদসহ বিভিন্ন পর্যায়ে মোট ছয় হাজার ৬৯০টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন, জাতীয় সংসদ, জাতীয় সংসদের উপ-নির্বাচন এবং সব স্থানীয় সরকার পরিষদের সাধারণ ও উপ-নির্বাচন।

পাঁচ বছর মেয়াদের শেষ দিন শেষ দিনের ব্রিফিংয়ে কে এম নূরুল হুদা জানিয়ে গেলেন, সব রাজনৈতিক দলকে তারা হয়ত সন্তুষ্ট করতে পারেননি, তবে কোনো অভিযোগে তিনি বিব্রত নন মোটেও। পৌনে দুই ঘণ্টার সংবাদ সম্মেলনে নানা বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন বিদায়ী সিইসি।

এদিকে, নতুন সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনার কারা হবেন, তাদের নামের প্রস্তাব সবার কাছে চেয়েছিল সার্চ কমিটি; সেই কাজ চলমান রয়েছে। ইতিমধ্যে কমিটিতে আসা ৩২২টি নাম ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এর থেকে ১০ জনের নামের তালিকা রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশের জন্য পাঠাবে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি। ওই তালিকা থেকে অনধিক পাঁচজনকে বেছে নিয়ে রাষ্ট্রপতি গঠন করবেন ত্রয়োদশ নির্বাচন কমিশন। তাদের মধ্যে একজন হবেন সিইসি, বাকিরা নির্বাচন কমিশনার। আর তাদের ওপরই থাকবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের ভার।

এসএ/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর