কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবি আদায় করার আন্দোলনে শিক্ষার্থীসহ জীবন দেওয়া মানুষদের নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আবেগাআপ্লুত হয়ে পড়লেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার নেতৃত্বাধীন সরকারের এক মাস পূর্তিতে রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) ড. মুহাম্মদ ইউনূস মতবিনিময় করেছেন আন্দোলনের সংগঠক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। এ সময় হতাহতদের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি, কাঁদতেও দেখা যায় তাকে।
তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার সরকারি কার্যালয় শাপলায় বেলা ১১টা থেকে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। যা চলে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত।
বিজ্ঞাপন
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, দেখছি আর ভাবছি- কী একটা স্বপ্ন আমাদের সবার সামনে, তোমাদের সামনে, জাতির সামনে তোমরা নিয়ে এসেছো। প্রথমেই যারা শহীদ হয়েছে, তাদের স্মরণ করি। যারা শহীদ হয়েছে, তারা চলে গেছে। তোমাদের দিকে তাকাচ্ছিলাম আর ভাবছিলাম- তোমরাও শহীদ হয়ে যেতে পারতে।
তিনি আরও বলেন, আজ যারা আমাদের সঙ্গে বসতে পারতো, সেই সুযোগ তাদের দেওয়া হয়নি। আমরা এপাড়ের আর ওপাড়ের মানুষ হয়ে গেছি। দুর্ঘটনাচক্রে, নিশ্চিতভাবে বলার উপায় ছিল না- তুমি এখানে থাকবে, তুমি ওখানে থাকবে। কেউ হয়তো এক ঘণ্টা আগে রওনা হয়েছে, কেউ হয়তো এক ঘণ্টা পরে রওনা হওয়ায়...।
আহতদের দেখতে হাসপাতালে যাওয়ার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘যখন হাসপাতালে তাদের দেখার জন্য যাই, তাকাতে কষ্ট হয়। একটা ছেলে, একটা মেয়ে এইরকমভাবে কীভাবে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এই দিকে পা চলে গেছে, ওইদিকে... এ কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন ড. ইউনূস।
বিজ্ঞাপন
সভায় উপস্থিত ছিলেন বৈষ্যম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠনক ও উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়াসহ কয়েকজন উপদেষ্টা।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট সরকারপ্রধানের পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এরপর গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার দায়িত্ব নেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
এরপর থেকে তিনি দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, পত্রিকার সম্পাদক, ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময় করেছেন।
বিইউ/এএস