বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৪, ঢাকা

গুলিতে হারিয়েছেন ১৪টি দাঁত, অভাব-অনটনে দিশেহারা রঞ্জু

কাজী রফিক
প্রকাশিত: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৫ পিএম

শেয়ার করুন:

গুলিতে হারিয়েছেন ১৪টি দাঁত, অভাব-অনটনে দিশেহারা রঞ্জু
আন্দোলনে পানি-শরবত খাওয়াতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন রঞ্জু। ছবি: ঢাকা মেইল

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যোগ দিয়ে ২০ জুলাই গুলিবিদ্ধ হন মোহাম্মদ ইমাম হাসান রঞ্জু। ভুক্তভোগীর বয়ান অনুসারে, দুইজনকে ভেদ করে গুলি এসে তার দাঁতে আঘাত করে। এতে ১৪টি দাঁত পড়ে যায়৷ ক্ষতিগ্রস্ত হয় ঠোঁট ও জিহ্বা।

সেই আন্দোলন ইতোমধ্যে পূর্ণতা পেয়েছে৷ পতন হয়েছে সরকারের। দায়িত্ব নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার৷ কিন্তু আঘাত ঘোচেনি রঞ্জুর। অন্যের সহযোগিতায় চিকিৎসা ব্যবস্থা হলেও কর্মহীন হয়ে পড়া পরিবার ভুগছে আর্থিক অনটনে।


বিজ্ঞাপন


রঞ্জু ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের মাঝে শরবত বিতরণ করেছিলেন। সে চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছিল বেশ আলোচিত। এমনকি আন্দোলন শেষে নগরজুড়ে যে দেয়াল চিত্র আঁকা হয়েছে, সেখানেও তার শরবত বিতরণের চিত্র ফুটে উঠেছে।

আরও পড়ুন

মাথায় হাতুড়ির আঘাতে অচল গাড়িচালক রফিকের জীবন

ঢাকা মেইলের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা জানিয়েছেন রাজধানীর বনশ্রী এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ ইমাম হাসান রঞ্জু। পেশায় সিসিটিভি ক্যামেরা বিক্রেতা৷

নিজের পেশার বর্ণনা দিয়ে রঞ্জু বলেন, 'আমি অনলাইনে-অফলাইনে সিসি ক্যামেরার অর্ডার নিই৷ সেগুলো কাস্টমারের বাসায় গিয়ে সেট করে দিই। এখন আমি ঠিকভাবে কথাই বলতে পারি না। কাস্টমারের সঙ্গে যোগাযোগ করব কীভাবে? আমার ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ।'


বিজ্ঞাপন


Ronju2

২০ জুলাইয়ের বর্ণনা দেন রঞ্জু। বলেন, 'গুলি একটা করছে। আমার সামনে দুইজন ছিল। তাদের গায়ে লেগে এসে আমার মুখে লাগছে। পুরো আঘাতটা লাগছে দাঁতে৷ ১৪টা দাঁত পড়ে গেছে। ১২টা দাঁত আগে উঠাইছি। আজ (২ সেপ্টেম্বর) আরও দুইটা উঠাবো। চিকিৎসার খরচ স্যার বহন করতেছেন। কিন্তু আমার পরিবার চালানো এখন কঠিন হয়ে গেছে।'

আরও পড়ুন

সাড়ে তিনশ গুলি গায়ে নিয়ে কাতরাচ্ছেন মুফতি ফিরোজ

রঞ্জু বলেন, 'আমার স্ত্রী আছে। এক সন্তান আছে। আমার ছেলেটাকে আবার প্রতি মাসে রক্ত দিতে হয়। সে থ্যালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত। কিছুই করতে পারছি না। আর্থিকভাবে খুবই খারাপ অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। ১৪টা দাঁত লাগানো, আমার জন্য মুখের কথা না। এই সামর্থ্য আমার নাই।'

শুধু দাঁত নয়, গুলিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে রঞ্জুর কান, জিহ্বা। সপ্তাহে প্রায় ১২০০ টাকার ওষুধ খেতে হচ্ছে তাকে। সেই অর্থ জোগান দেওয়া তার জন্য বেশ কষ্টসাধ্য বিষয় বলে জানান রঞ্জু। আগামী আরও তিন থেকে চার মাস কর্মহীন থাকতে হতে পারে এই ভুক্তভোগীকে৷ এই সময়ে তার সংসার চালানোর জন্য সমাজের সামর্থ্যবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন এই যুবক।

কারই/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর