মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

জলাবদ্ধতা নিরসনে আশকোনাসহ সব জলাশয় ভরাট বন্ধ চায় আইপিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২২ মে ২০২২, ০৮:৪৬ পিএম

শেয়ার করুন:

জলাবদ্ধতা নিরসনে আশকোনাসহ সব জলাশয় ভরাট বন্ধ চায় আইপিডি
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা মহানগরীর মহাপরিকল্পনা, বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা, নগর উন্নয়ন আইন, জলাধার সংরক্ষণ আইন ও পরিবেশ সংক্রান্ত আইনকে অমান্য করে রাজধানীর আশকোনায় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) কর্তৃক জলাশয় ভরাটের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)।

রোববার (২২ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই প্রতিবাদ জানায় প্রতিষ্ঠানটি।


বিজ্ঞাপন


এতে জলাশয় ভরাটের ক্ষেত্রে প্রভাবশালী মহল কিংবা বেসরকারি উদ্যোগে গড়ে উঠা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কিংবা প্রকল্পের নাম শোনা যায় উল্লেখ করে আইপিডি জানায়, সরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক এই ধরনের জলাশয়-জলাধার ভরাটের অন্যায়, অন্যায্য ও অবৈধ উদ্যোগ যখন রাজধানী শহরে সকল নগর কর্তৃপক্ষসমূহের উপস্থিতিতে দিবালোকেই হয়, তখন টেকসই ও বাসযোগ্য নগর গড়তে ব্যর্থ হয়।

ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে কার্যকর সমাধান তৈরি না করার কারণ জানিয়ে আইপিডি বলেছে, ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা প্রতিপালনে ব্যর্থ হলে এবং জলাশয়-জলাধার রক্ষায় আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা না করতে পারলে ঢাকাকে কোনভাবেই বাঁচানো যাবে না।

আসন্ন বর্ষা মৌসুমে ভারী বর্ষণে জলাবদ্ধতার শঙ্কায় নগরবাসী শঙ্কিত জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে বিভিন্ন ধরনের প্রকল্প নেওয়া হলেও জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার কার্যকারিতা অনেকাংশে নির্ভর করে জলাশয়-জলাধারসমূহের পানি ধারণক্ষমতার ওপর।

এতে আরও বলা হয়, একটি নগর এলাকায় ১২-১৫ ভাগ জলাশয় এলাকা থাকা দরকার হলেও ঢাকার জলাশয়-জলাধার এলাকা আশঙ্কাজনকভাবে কমছে। ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় চিহ্নিত জলাশয়-জলাধার নির্বিচার দখলের শিকার হচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের দাবি, রাজধানীর অভ্যন্তরে বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় চিহ্নিত আশকোনা এলাকার এই জলাশয় বেশ কিছুদিন ধরে নির্বিচারে ভরাট হলেও তা বন্ধে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি), ঢাকা জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদফতরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহ তেমন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, যা অত্যন্ত উদ্বেগের।

বিবৃতিতে বলা হয়, ইতোপূর্বে রাজধানীর কুড়িলে জলাধার ভরাট করে ফাইভ স্টার হোটেল নির্মাণের অনুমতি দেয় বাংলাদেশ রেলওয়ে, যা পরবর্তীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়রের উদ্যোগে এবং হাইকোর্টের আদেশে স্থগিত করা হয়। ওই ঘটনাগুলোতে প্রতীয়মান হয় যে, রাজধানীর জলাশয়-জলাধার রক্ষার ব্যাপারে সরকারের নির্দেশনাই সরকারি বিভিন্ন সংস্থা যথাযথভাবে প্রতিপালন করছে না। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

এতে আরও বলা হয়, রাজধানীর মহাপরিকল্পনার এলাকাভুক্ত যে কোনো ধরনের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন উদ্যোগে ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনার প্রতিপালন এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ভূমি ব্যবহার পরিবর্তনের জন্য টাউন ইমপ্রুভমেন্ট আইন, ১৯৫৩ অনুযায়ী রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নেওয়ার যে বিধান আছে, তা কেন বিভিন্ন সরকারি সংস্থা কর্তৃক বারবার লঙ্ঘিত হচ্ছে, সরকারের তার নির্মোহ বিশ্লেষণ করা দরকার। সেই সঙ্গে রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থাসমূহ কেন এই ধরনের জলাশয়-জলাধার ভরাটের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছে না, সেই কারণগুলোও উদঘাটিত হওয়া দরকার।

বিবৃতিতে আইপিডির পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, আশকোনার এই জলাশয় ছাড়াও ঢাকার আশপাশের আমিনবাজার-আশুলিয়াসহ অনেক এলাকার জলাশয়-জলাধার নির্বিচারে ভরাট হচ্ছে। এ জন্য ঢাকাকে জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা করতে হলে সকল ধরনের জলাশয়-জলাধার ভরাটের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি দোষীদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

ডিএইচডি/আইএইচ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর