বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪, ঢাকা

‘পরিকল্পিত পদক্ষেপ নিলে কঠিন কাজও সমাধান করা যায়’

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২২ মে ২০২২, ০১:৪৭ পিএম

শেয়ার করুন:

‘পরিকল্পিত পদক্ষেপ নিলে কঠিন কাজও সমাধান করা যায়’
শেখ হাসিনা (ফাইল ছবি)

পরিকল্পিত পদক্ষেপ নিলে যেকোনো কঠিন কাজও সমাধান করা যায় বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রোববার (২২ মে) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ডেল্টা গভর্ন্যান্স কাউন্সিলের  সভায় এমন মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।


বিজ্ঞাপন


সভায় মৎস্য ও খনিজসম্পদসহ সমুদ্রে থাকা সব সম্পদ কাজে লাগাতে সমুদ্র গবেষণা বাড়ানোর নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শত বছরের পরিকল্পনা বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে চেয়ারপারসন করে এই কাউন্সিল গঠন করা হয়। ১২ সদস্যের এই কাউন্সিল গঠন করে গত বছরের ১ জুলাই গেজেট প্রকাশ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

ডেল্টা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে একটি নীতিমালা তৈরির কথা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ডেল্টা প্ল্যানটা যদি আমরা ভালোভাবে একটা গাইডলাইন তৈরি করে প্ল্যান ভালোভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি, আর যেহেতু এটা ২১০০ সাল পর্যন্ত, তাই সময়ের সঙ্গে এটা পরিবর্তন, পরিবর্ধন, সংশোধন করতে হবে। সেইভাবেই কিন্তু আমাদের সব প্ল্যান হাতে নিতে হবে, নিয়ে আমরা কাজ করতে পারব। ডেল্টা প্ল্যানের লক্ষ্যে পরিবেশ রক্ষা করে উন্নত পরিকল্পিত পদক্ষেপ নিলে যেকোনো কঠিন কাজ করা সহজ হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার এই ব-দ্বীপের জনগণকে নিরাপদ করতে এবং জনগণকে উন্নত জীবন দিতে ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ গ্রহণ করেছে। দেশের অর্জিত বিশাল সমুদ্র এলাকা ডেল্টা প্ল্যানে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।


বিজ্ঞাপন


সভায় সরকারপ্রধান বলেন, যমুনা সেতুর দৈর্ঘ্য কমানো হয়েছিল, যেটা পদ্মা সেতুর ক্ষেত্রে করা হয়নি। যে কারণে পদ্মা সেতু দীর্ঘ হয়েছে। কিন্তু এখানে নদীর বাফার জোনও রক্ষা করা হয়েছে। ব-দ্বীপ রক্ষা ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উন্নত জীবন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন এমন মন্তব্য করে পরিবেশ রক্ষায় পরিকল্পিত শিল্পায়নের পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সমুদ্রকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি আমাদের ডেল্টা প্ল্যানের সঙ্গে আজকের যে বিশাল সমুদ্ররাশি আমরা পেয়েছি, এই সম্পদটা আমাদের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে কাজে লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে আমরা ব্লু ইকোনমি ঘোষণা দিয়েছি। অর্থাৎ সুনীল অর্থনীতি, সমুদ্রসম্পদকে আমাদের দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানো। কিছু কিছু কাজ কিন্তু শুরু হয়েছে খুব সীমিত আকারে।

সমুদ্রসম্পদ কাজে লাগাতে একটি পরিকল্পনা গ্রহণের নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, সমুদ্রসম্পদ নিয়ে আমাদের একটা পরিকল্পনা থাকা উচিত। সেখানে আমরা কতটুকু কী কী করতে পারি। সেখানে আমরা তেল-গ্যাস উত্তোলন অর্থাৎ সামুদ্রিক যে সম্পদ, যেগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগে, খাদ্য নিরাপত্তায় কাজে লাগতে পারে বিভিন্নভাবে, বিশাল মৎস্য ভাণ্ডার এখানে। তিনি বলেন, এই সম্পদ আমরা হেলায় হারাতে পারি না। এটা অর্থনৈতিক অঙ্গনে কীভাবে কাজে লাগাবো এটা আমাদের দেখা দরকার।

শেখ হাসিনা বলেন, আরেকটি বিষয় হলো বঙ্গোপসাগরের সবচেয়ে গুরুত্বটা হলো যে আদিকাল থেকে এখান দিয়ে সারা বিশ্বের ব্যবসা-বাণিজ্য চলে। দুই পাশে দুটো মহাসাগর। এক মহাসাগর থেকে আরেকটায় যেতে গেলে এই বঙ্গোপসাগরের ওপর দিয়েই কিন্তু চলাচল হয়। সেদিক থেকে বঙ্গোপসাগরের গুরুত্ব কিন্তু অনেক বেশি। কাজেই এ রকম একটা গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ আমরা কীভাবে আমাদের অর্থনৈতিক কাজে ব্যবহার করতে পারি সেটাও আমাদের চিন্তা করতে হবে।

বঙ্গোপসাগরকে দূষণমুক্ত রাখার নির্দেশনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন দূষণ তো সব দেশেই। সাউথ সি-তে এমন অবস্থা যে সেখানে পানি পাওয়া যায় না। শুধু তেলের ফ্যানা, আমি নিজে সেখানে গিয়ে দেখে এসেছি। হাতে তুলেও নিয়েছিলাম। নেদারল্যান্ডসে থাকতে আমি গিয়েছিলাম। কাজেই আমাদের উপমহাদেশে যেন আমাদের বঙ্গোপোসাগর যেন সে রকম দূষণ না হয় সেদিকে আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। এটা যেমন পলিউশন মুক্ত রাখতে হবে। পাশাপাশি এই সম্পদটা আমরা কীভাবে কাজে লাগাবো সেটাও আমাদের চিন্তা করতে হবে। দেশের নদীগুলোকেও দূষণ থেকে রক্ষা করার নির্দেশ দেন সরকার প্রধান।

যত্রতত্র শিল্প কারখানা যেন না হয় সেজন্য সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে বলে জানান তিনি। এক্ষেত্রে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। নদী-খালগুলো সচল রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন সরকার প্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের এটা মাথায় রাখতে হবে আমাদের নদীমাতৃক বাংলাদেশ। নদীগুলো হচ্ছে একটা মানুষের শরীরে যেমন শিরা-উপশিরা, ঠিক নদীগুলোও আমাদের দেশের জন্য শিরা-উপশিরা।

অন্যান্যের মধ্যে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, প্রধানমন্ত্রীর এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।

ডব্লিউএইচ/জেবি

 

 

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর