রোববার, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

ঢাকায় ৫ ঘণ্টার ভোগান্তি শেষে ঘুরছে গাড়ির চাকা

মোস্তফা ইমরুল কায়েস
প্রকাশিত: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৫ পিএম

শেয়ার করুন:

ঢাকায় ৫ ঘণ্টার ভোগান্তি শেষে ঘুরছে গাড়ির চাকা
আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়ে রাজধানী। ছবি: সংগৃহীত

সরকারি চাকরিতে কোটা প্রথা বাতিলের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সোমবারও (৮ জুলাই) দ্বিতীয় দিনের মতো স্থবির ছিল রাজধানী ঢাকা। পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় পর শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিলেও রাজধানী রাস্তায় রয়ে গেছে এর রেশ। অবরোধের কারণে বিভিন্ন সড়কে আটকা পড়ে শত শত যানবাহন। এতে ভোগান্তিতে পড়েন ঘরে ফেরা ও ঢাকা থেকে বাহির হওয়া লোকজন।

আব্দুল মান্নান রাজধানীর গুলশান এলাকায় সকালে মোটরসাইকেল নিয়ে জরুরি কাজে গিয়েছিলেন। কিন্তু সন্ধ্যা ছয়টায় কাজ শেষে বের হয়ে বিপাকে পড়ে যান। রাজধানীর কদমতলী তার বাসা। ফলে গুলশান থেকে জিনজিরা আসতেই দুই ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে।


বিজ্ঞাপন


তিনি বলছিলেন, টিকাটুলি থেকে যাত্রাবাড়ী পল্টন ও রমনা পুরো এলাকায় যানজট ছিল। ফলে বিকল্প সড়ক ও ফ্লাইওভার ব্যবহার করে বাবুবাজার ব্রিজ হয়ে বাসায় আসতে হলো।

ঢাকায় গিয়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনের কারণে সড়কে যে যানজট তৈরি হয়েছিল তাতে পড়েছিলেন তিনিও। সোমবার রাতে ঢাকা মেইলকে তিনি এভাবেই ভোগান্তির কথা বলছিলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ বিকেল থেকে টানা চার ঘণ্টা দক্ষিণ এলাকায় বিভিন্ন সড়কে যানজট লেগেছিল। তবে সন্ধ্যার পর আন্দোলনকারীরা শাহবাগের দিকে ছুটে যাওয়াতে অনেক সড়ক এখন ক্লিয়ার হতে শুরু করেছে। তবে সেটা ঢাকা থেকে বের হওয়ার সড়কগুলোতে। ঢাকায় যেসব গাড়ি ঢুকছে তার অধিকাংশের এখন স্লো গতি।

শুধু ঢাকা নয়, কোটাবিরোধী আন্দোলনের প্রভাব পড়ে ঢাকার বাইরেও। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ে সড়কে অবরোধ করলে হাজার হাজার গাড়ি আটকা পড়ে। দোকান থেকে পড়ে নারী শিশুরাও। বিকেলে কয়েক ঘণ্টা এসব গাড়ি আটকা ছিল।


বিজ্ঞাপন


59

কুমিল্লা থেকে বিকেল ফেনী থেকে ঢাকায় রওনা হয়েছিলেন আকবর হোসেন নামে এক ব্যক্তি। তিনি তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে ভোগান্তির কথা তুলে ধরেছেন। আকবর আজ রাত আটটায় তার ফেসবুকে লিখেছেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করেছে। হাইওয়েতে আটকে বসে আছি এক ঘণ্টা যাবত।

শুধু আকবর নন, এই মুহূর্তে কুমিল্লা মহাসড়কে হাজার হাজার যানবাহন আটকা পড়েছে। এসব যানবাহনের অধিকাংশের গন্তব্য গুলিস্তান। কিন্তু গুলিস্তানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই মুহূর্তে গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে গাড়ির জট থাকা হানিফ ফ্লাইওভার ব্যবহার করে কুমিল্লা ও পদ্মা সেতু হয়ো আসা গাড়িগুলো আটকে আছে। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে কতক্ষণ সময় লাগবে তা কেউই বলতে পারছে না।

যদিও ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে, সড়ক এখন ক্লিয়ার। কিছুক্ষণের মধ্যে সড়কে আটকে থাকা যানবাহন নিজ নিজ গন্তব্যে চলে যাবে। কিন্তু বাস্তবতা ভিন্ন।

খোঁজ নিয়ে রাত ৮টার সময়ও ফার্মগেট, খামারবাড়ী, কারওয়ানবাজার, শাহবাগ, বাংলামোটর, নিউমার্কেট এবং টিকাটুলি মতিঝিল এলাকায় গাড়ির জটে হাজার হাজার মানুষ আটকে থাকার খবর পাওয়া গেছে। কোটাবিরোধীদের আন্দোলনে নগরীর অন্তত ৫০টি স্পট ব্লক হয়ে গিয়েছিল। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ব্লকের সংখ্যা বাড়ে।

ট্রাফিকের দক্ষিণের যুগ্ম কমিশনার এসএম মেহেদী হাসান ঢাকা মেইলের কাছে দাবি করেন, সড়কে কোনো যানজট নেই।

Andolon22

তবে ভিন্ন কথা জানালেন তেজগাঁও ট্রাফিকের এডিসি কাজী রোমানা নাসরিন ঢাকা মেইলকে বলেন, কোটাবিরোধীরা সড়ক অবরোধ করে রেখেছিল। আমরা তাদের সড়ক থেকে তুলে দিতে সক্ষম হয়েছি। কিছুটা জট আছে। এটা ক্লিয়ার হতে কতক্ষণ সময় লাগতে পারে তা বলা মুশকিল।

ট্রাফিকের মতিঝিল বিভাগের এডিসি তবিবুর রহমান ঢাকা মেইলকে বলেন, এই মুহূর্তে গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে গাড়ির গতি স্লো। সেটা ঢাকায় ঢোকার ক্ষেত্রে আর বের হওয়ার গতি কিছু বাড়ছে। এছাড়া দৈনিক বাংলা মোড় থেকে মতিঝিল যাওয়ার সড়কেও জট আছে। তবে শান্তিনগর ও কাকরাইল মোড় এলাকায় গাড়ি আসছে ও বের হচ্ছে। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এই গতি বাড়ানোর।

এদিকে ট্রাফিকের ওয়ারী বিভাগের ডেমরা জোনের এসি মোস্তাইন বিল্লাহ ফেরদৌস ঢাকা মেইলকে বলেন, বের হচ্ছে গতিতেম কিন্তু ঢাকায় ঢোকার গতিতে কিছুটা স্লো আছে। তবে গুলিস্তান পয়েন্ট গাড়ির চাপ নিলে এটা হতো না। আমরা চেষ্টা করছি।

এমআইকে/জেবি

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর