মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

দাবার বোর্ড জব্দ করা নিয়ে দ্বন্দ্বে খুন হন কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮ জুলাই ২০২৪, ০১:৫৮ পিএম

শেয়ার করুন:

দাবার বোর্ড জব্দ করা নিয়ে দ্বন্দ্বে খুন হন কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী

রাজধানীর ঢাকা কমার্স কলেজের জুবায়ের নামে এক শিক্ষার্থীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার একজনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তার নাম রাজিন ইকবাল। তিনি জুবায়ের হত্যার মূলহোতা বলে জানিয়েছেন এলিট ফোর্সটি। ক্লাসে দাবা খেলার বোর্ড বাজেয়াপ্ত করার বিষয়ে দ্বন্দ্বের জেরে রাজিন জুবায়েরকে হত্যা করে বলে জানিয়েছে র‌্যাব।

গতকাল রোববার বিকেলে হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর এলাকায় অভিযান রাজিনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। সোমবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব-৪ এর সিও লে. ক. আব্দুর রহমান।


বিজ্ঞাপন


ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, এই ঘটনায় অভিযান চালিয়ে রাজিনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূলত ক্লাসে দাবা খেলার বোর্ড বাজেয়াপ্ত করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে জুবায়েরের ওপর ক্ষিপ্ত ছিল রাজিন। দাবার বোর্ড ফিরে পেতে রাজিন নিজেকে নিয়মিত ছাত্র দাবি করে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছিল। কিন্তু তাতে জুবায়ের বাধ সাধে। এতে রাজিন ক্ষিপ্ত হয়ে ডেকে নিয়ে জুবায়েরকে কুপিয়ে হত্যা করে। গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাজিন তা স্বীকার করেছেন।

গত শনিবার সন্ধ্যায় শাহআলীর ঢাকা কমার্স কলেজের পার্শ্ববর্তী চারতলা ভবনের তৃতীয় তলায় একটি ভাড়া বাসায় কলেজশিক্ষার্থী জুবায়েরের মরদেহ পায় এলাকাবাসী। পরে পুলিশ উদ্ধার করে তা মর্গে পাঠায়।

এ ঘটনায় মামলা হলে আসামি রাজিনকে ধরতে মাঠে নামে র‌্যাব। সদর দফতর গোয়েন্দা শাখার সহযোগিতায় র‌্যাব-৪ ও র‌্যাব-৯ রাজিনকে ধরতে মাঠে নামে। পরে তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় এলিট ফোর্সটি।

Dhaka-2
হত্যাকাণ্ডের শিকার ঢাকা কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী জুবায়ের।

হত্যাকাণ্ডের শিকার জুবায়ের ঢাকা কমার্স কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। এছাড়া জুবায়ের ক্লাস ক্যাপ্টেনেরও দায়িত্ব পালন করতেন।

গত জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে রাজিনের কাছ থেকে কলেজের শিক্ষক একটি দাবা বোর্ড পেয়ে পরে সেটি নিয়ে যায়। পরে নিজেকে নিয়মিত শিক্ষার্থী উল্লেখ করে দাবা বোর্ডটি পেতে কলেজের উপদেষ্টা বরাবর আবেদন করেন রাজিন। কিন্তু ক্লাস ক্যাপ্টেন জুবায়ের আবেদনে নিয়মিত শিক্ষার্থী উল্লেখ করা নিয়ে আপত্তি জানালে দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে ধস্তাধস্তিও হয়। পরে কলেজের শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় বিষয়টির মীমাংসা করা হয় এবং অভিভাবকদের কাছে বিষয়টি অবহিত ও সতর্ক করা হয়।

এ ঘটনার জেরে রাজিনের মনে ক্ষোভ সৃষ্টি হলে তিনি জুবায়েরকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকেন।

জুবায়েরকে হত্যা করা হয় যেভাবে

পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত শনিবার দুপুরে জুবায়েরকে কমার্স কলেজের পার্শ্ববর্তী নিজ ভাড়া বাসায় কৌশলে ডেকে নেন রাজিন। বিকেলে জুবায়ের সেখানে পৌঁছলে তাদের মধ্য পূর্বের বিষয়টি নিয়ে পুনরায় বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে রাজিন ধারালো বটি দিয়ে জুবায়েরকে কুপিয়ে হত্যা করে।

পরে রাজিন বিষয়টি বাবাকে জানালে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছান এবং স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জানার আগেই রাজিনকে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন। শেষে মরদেহ সম্পর্কে স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ অবগত হলে রাজিনের বাবা কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে বাবা-ছেলে দুজনই নির্দিষ্ট একটি স্থানে মিলিত হয়।

রাজিনের বাবা মাইক্রোবাসযোগে ছেলেকে নিয়ে হবিগঞ্জে পালিয়ে গিয়ে নিকটাত্মীয়ের বাড়িতে রাজিনকে রেখে নিজেও আত্মগোপনে চলে যায়।

এমআইকে/এমআর

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর