মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২৪, ঢাকা

এবার ‘সাদিক এগ্রো’ বয়কটের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২ জুন ২০২৪, ০২:০৩ পিএম

শেয়ার করুন:

এবার ‘সাদিক এগ্রো’ বয়কটের ডাক

বংশ মর্যাদার দোহাই দিয়ে কোটি টাকার ঘরে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে গরুর দাম। বাদ যায়নি ছাগলও। ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে একটি ছাগল। এভাবেই কোরবানির বাজারে যেন বিলাসিতার ছাপ আঁকতে চাইছে দেশের সবচেয়ে বড় এগ্রো ফার্ম হিসেবে পরিচিত সাদিক এগ্রো। 

প্রতিষ্ঠান প্রধানের সাম্প্রতিক কথাবার্তা ও গরুর দাম নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে সমালোচনা। এরইমধ্যে সাদিক এগ্রোকে বয়কটের ডাকও দেওয়া হয়েছে। 


বিজ্ঞাপন


ঘটনার সূত্রপাত কোটি টাকা মূল্যের গরু নিয়ে। মার্কিন প্রজাতির এক গরুকে বংশ মর্যাদায় এগিয়ে রেখে তার দাম হাঁকা হয়েছে এক কোটি টাকা। গরুর গলায় দেওয়া হয়েছে সোনার চেইন। গরু কিনলে ক্রেতা পাবেন সেই চেইনটি। কোরবানির বাজারে এ ধরণের ঘটনা একেবারেই বিরল।

উচ্চ বংশের গরু বলে দাম বেশি, বিক্রেতার এমন মন্তব্যের কড়া সমালোচনা হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। 

এরপর সাদিক এগ্রো সামনে নিয়ে আসে একটি ছাগল। দেশের সবচেয়ে বড় আকারের ছাগল আখ্যা দিয়ে সেটার দাম হাঁকা হয় ১৫ লাখ টাকা। রাজধানীর ধানমণ্ডি এলাকার একজন ক্রেতা সে দামেই ছাগলটি কিনে নেন। এনিয়েও হয় সমালোচনা।

6


বিজ্ঞাপন


২০১৬ সাল থেকে দেশে ব্রাহামা জাতের গরু আমদানি নিষিদ্ধ। তবে সে নিয়ম যেন সাদিক এগ্রোর জন্য নয়। প্রতি বছরই প্রতিষ্ঠানটির খামারে দেখা যায় বিশাল দেহী ব্রাহামা। এবার ৩টি ব্রাহামা জাতের গরু ২ কোটি ৬০ লাখ টাকায় বিক্রি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। যা প্রতিষ্ঠান প্রধান মো. ইমরান হোসেন নিজেই জানিয়েছেন। 

কেউ কেউ সাদিক এগ্রোর মালিক মো. ইমরান হোসেনের গরুর বংশ মর্যাদা নিয়ে আলোচনার প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিকমাধ্যমে নানা পোস্ট করছেন। কেউ আবার ব্যঙ্গ করেও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।

গরু নিয়ে এমন কথাকে ব্যঙ্গ করে একজন লিখেছেন, গরু কিনতে গেলাম সাদিক এগ্রোতে। সাদিক সাহেব একটা গরু দেখিয়ে দাম হাঁকালো ২০ লাখ। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এত দাম কেন এই গরু তো ৩ লাখের বেশি হবার কথা না। বললো এটা খুব উঁচু বংশের গরু। আমি হাসি দিয়ে বললাম— এটা আবার কেমন উঁচু বংশ? এরপর সাদিক সাহেব ডিরেক্ট অপমান করে বললেন, এটা এত উঁচু বংশের যে এই গরু যদি মুখ ফুটে কথা বলতে জানতো তাহলে আপনার মতো ছোট লোকের সাথে কথাই বলতো না!

ওই পোস্টে ইনান আহমেদ খান নামে একজন মন্তব্য করেন। লিখেন, এই লোকের কারণে মধ্যবিত্তের গরু কেনা মুশকিল হয়ে যাবে। একই প্রোডাক্টে দামে বেহুদা ভেরাইটি আসা উচিত না। এখন সবাই দাম বাড়িয়ে দেবে।

জিনাত রেহানা নামে আরেকজন মন্তব্যে লিখেন, ইনি ওনার গরুকে সোনা, রুপা, হিরার খাবার খাওয়ায়।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সামাজিক প্লাটফর্ম হিসেবে পরিচিত উই আর বাংলাদেশ (ওয়াব) পেজে এ নিয়ে আলোচনা দেখা গেছে।

8

সম্প্রতি পেজটিতে এক পোস্টে লেখা হয়, একটি গরু ১ কোটি ২ কোটি টাকা দিয়ে ক্রয়/বিক্রয় করে কে বা কারা? তাদের আয়ের উৎসটা একটু তদন্ত করা উচিত। সাদিক এগ্রো নিয়ে আপনাদের মতামত জানান কমেন্ট বক্সে। এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে  সবার আওয়াজ তোলা উচিত।

ওই পোস্টের মন্তব্যে মুহাম্মদ বোরহান উদ্দিন নামে একজন লিখেন, বাংলাদেশে গরুর দাম চড়া হবার পেছনে এদের শক্তিশালী হাত কাজ করছে। এদের ফার্মে দেশি গরু ঢুকলে সেটাও প্রিমিয়াম কাউ হয়ে যায়। প্রান্তিক খামারিদের বাঁচাতে হলে এদের লাগাম টানা সময়ের দাবি!

মুহাম্মদ জাহিদ নামে অপর একজন মন্তব্যে লিখেছেন, সাদিক এগ্রোর মালিক যা কিছুই করছে সবই ক্ষমতাসীন দলের পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমেই করছে। এখানে সরকার, প্রশাসন, ভোক্তা অধিদফতর, কারোই তেমন কিছু করার নেই। দেশে বৃহৎ পরিসরে ঘটা যেকোনো অস্বাভাবিক কার্যকলাপের মাঝে ক্ষমতাসীন দলের কারো না কারো হস্তক্ষেপ আছেই, থাকবেই। সহজভাবে বলতে গেলে, দুর্নীতি চারদিকেই হচ্ছে। কিন্তু কোন কোন ক্ষেত্রে কিভাবে কিভাবে হচ্ছে, সেটার সব কিছু জানার বা বুঝার মতো ক্ষমতা আমাদের মতো সাধারণ সব মানুষদের নেই।

এদিকে সাসিক এগ্রোর এমন কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানাতে দেখা গেছে নেটিজেনদের। ‘বয়কট সাদিক এগ্রো’ নামে হ্যাসট্যাগও বানানো হয়েছে। 

এ বিষয়ে সাদিক এগ্রোর মালিক মো. ইমরান হোসেনের সঙ্গে কথা বলতে ফোন করা হলেও তিনি কল ধরেননি। 

কারই/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর