বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৪, ঢাকা

এমপি আনার হত্যার তদন্তে ভিন্ন মাত্রা

ঢাকা মেইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১ জুন ২০২৪, ০৮:০৪ পিএম

শেয়ার করুন:

এমপি আনার হত্যার তদন্তে ভিন্ন মাত্রা
ছবি: সংগৃহীত

কলকাতায় বাংলাদেশি সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে ‘বিশেষ তদন্ত দল’ গঠন করেছে ভারতের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। একজন আইজির নেতৃত্বে গঠিত ওই স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টিমে (এসআইটি) তিনজন ডিআইজিসহ রয়েছেন ১০-১২ জন কর্মকর্তা। 

ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এসআইটি আনার হত্যার ঘটনায় বিস্তারিত তদন্ত করবে। তারা দ্রুততার সঙ্গে প্রযুক্তিগত তথ্যপ্রমাণ ও ফরেনসিক রিপোর্ট সংগ্রহের কাজটি নিশ্চিত করবে। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত আখতারুজ্জামান শাহিনকে ধরতে ঢাকার পুলিশ ও ইন্টারপোলের সঙ্গে সমন্বয় করবে তারা।


বিজ্ঞাপন


হত্যার ঘটনাটি সামনে আসার পর থেকে ঢাকা ও কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে— কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জীভা গার্ডেন নামে একটি ফ্ল্যাটে এমপি আনারকে হত্যা করা হয়। এরপর ঢাকা থেকে দিল্লি হয়ে কাঠমান্ডু, সেখান থেকে দুবাই হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান প্রধান অভিযুক্ত শাহিন।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শাহিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকলেও তার সহযোগী সিয়াম হোসেন নেপালে আত্মগোপনে রয়েছেন। তদন্তের জন্য সিআইডির বিশেষ তদন্ত দলটি শিগগির নেপালেও যাবে।

এদিকে এমপি আনার হত্যার তদন্তে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি দলটি নেপালের কাঠমান্ডুতে পৌঁছেছেন। যাওয়ার আগে হারুন বলেছিলেন— ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্যের হত্যাকাণ্ডের কয়েকজন আসামি কাঠমান্ডুতে গিয়েছিল। তাদের মধ্যে কেউ চলে গেছে, কেউ থাকতে পারে। সেই বিশ্বাসে আমরা সেখানে যাচ্ছি। ইন্টারপোলকেও আমরা চিঠি দিয়েছি, ইন্টারপোলের মাধ্যমে আমরা কাঠমান্ডু পুলিশকেও জানিয়েছি। 

আরও পড়ুন
নেপালে সিয়াম আটকের ব্যাপারে জানেন না ডিবির হারুন

আনন্দবাজার পত্রিকার এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আনার হত্যার ঘটনা তদন্তে সিআইডির একটি বিশেষ তদন্ত দল গঠন হয়েছে। দলটি ইতোমধ্যে নেপাল সীমান্তে পৌঁছে গেছে। তারা সিয়ামকে ধরার বা হাতে পাওয়ার চেষ্টা করছে। তদন্তকারীদের একটি অংশের দাবি— বাংলাদেশ পুলিশও সিয়ামকে নিজেদের হেফাজতে নিতে চাইছে। দু’পক্ষই চেষ্টা করায় ওই প্রক্রিয়া কিছুটা ধাক্কা খাচ্ছে।

এর আগে ভারত ও বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা জানিয়েছিল, এমপি আনারকে হত্যা করা হয়েছে। যদিও তার লাশের হদিস দিতে পারছিলেন না উভয় দেশের পুলিশ। পরে ডিবির প্রতিনিধি দল জানায়, সঞ্জীভা গার্ডেনসের সেপটিক ট্যাংক থেকে কয়েক কেজি মাংসের টুকরা উদ্ধার করা হয়েছে। সেগুলোর সঙ্গে আনারের স্বজনদের ডিএনএ পরীক্ষার বিষয়টি এখন প্রক্রিয়াধীন।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কলকাতা সিআইডি এমপি আনার ও শিলাস্তি রহমানের মধ্যে হওয়া কথাবার্তার রেকর্ড পেয়েছে। তাদের ধারণা— হত্যার পর আনারের ফোন থেকে যে ব্যক্তি হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ চালাচালি করেছিলেন, তিনিই সিয়াম হোসেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সিআইডির কাছে আরও কিছু তথ্য রয়েছে, চলতি বছরের প্রথম দিকে শাহীনের সহযোগী হিসেবে আরেক নারী কলকাতায় এসেছিলেন। সেই নারীকে খুঁজে বের করতে ঢাকার পুলিশকে অনুরোধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সিআইডি। শিলাস্তির সঙ্গে ওই নারী মেসেজ আদান-প্রদান করেছে বলে তাদের কাছে তথ্য রয়েছে।

উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ-৪ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য আনার কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। গত ১১ মে তিনি চিকিৎসার জন্য ভারতে যান। প্রথমে কলকাতার বরাহনগরে তার বন্ধু স্বর্ণ ব্যবসায়ী গোপাল বিশ্বাসের বাড়িতে ওঠেন। কিন্তু সেখান থেকে বেরিয়ে নিখোঁজ হন। এরপর স্থানীয় থানায় জিডি করেন গোপাল বিশ্বাস। তদন্ত শুরু হয় দুই দেশে। ২২ মে সকালে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে খবর আসে— নিউটাউনের এক বাড়িতে খুন হয়েছেন এমপি আনার। এরপরেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ভারতের পুলিশের বরাত দিয়ে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

এইউ

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর