ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার চিকিৎসার জন্য গত ১২ মে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কলকাতায় যান। পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের পুলিশের এখন পর্যন্ত দেওয়া তথ্যমতে পরদিন ১৩ মে তিনি খুন হন। কিন্তু এমপি আনারের মরদেহ বা মরদেহের খণ্ডিত কোনো অংশ এখন পর্যন্ত উদ্ধার করা যায়নি। টানা কয়েকদিন তল্লাশির পরও মেলেনি কিছুই।
ফলে প্রশ্ন উঠেছে— যদি এমপি আনোয়ারুল আজীম আনারের লাশ না পাওয়া যায় তাহলে কী হবে? ডেথ সার্টিফিকেট বা মৃত্যু সনদই বা কবে মিলবে?
বিজ্ঞাপন
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নর্থইস্ট নিউজ রোববার (২৬ মে) এক প্রতিবেদনে এই বিষয়গুলো তুলে ধরেছে।
এতে বলা হয়েছে, কলকাতায় ‘খুন হওয়া’ আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারের লাশ হয়তো আর কখনোই খুঁজে পাওয়া যাবে না। তাকে হত্যার পর তার লাশ টুকরো টুকরো করে গত ১৩ মে থেকে ১৫ মে বিভিন্ন স্থানে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এর ফলে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) এবং বাংলাদেশ পুলিশের গোয়েন্দা শাখার জন্য তাৎক্ষণিক যে সমস্যা তৈরি করবে তা হচ্ছে— আনারের মৃত্যুতে কোনো ধরনের ডেথ সার্টিফিকেট বা মৃত্যু সনদ জারি করা যাবে না। আর তেমনটি হলে ঝিনাইদহ-৪ আসনে উপনির্বাচন অন্তত সাত বছরের জন্য অসম্ভব হয়ে যাবে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন-উর রশিদ রোববার কলকাতায় তার আগের কথাই পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, হত্যার পর আনারের লাশ টুকরো টুকরো করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এমপি আনারের লাশ বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পাওয়া না গেলে ময়নাতদন্ত করা যাবে না, যার অর্থ হলো তার আত্মীয়দের কাছে মৃত্যু সনদ হস্তান্তর করা যাবে না। এছাড়া লাশ বা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ পাওয়া না গেলে ডেথ সার্টিফিকেট বা মৃত্যু সনদ দেওয়ার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সিআইডিকে কমপক্ষে সাত বছর অপেক্ষা করতে হবে।
এ বিষয়ে কলকাতার প্রবীণ আইনজীবী নবকুমার ঘোষ বলেন, মৃত কোনো ব্যক্তির লাশ পাওয়া না গেলে মৃত্যু সনদ জারি করতে সাত বছর সময় লাগতে পারে। এটাই প্রতিষ্ঠিত আইন। সাত বছরের অপেক্ষা বাধ্যতামূলক। লাশ নেই, মৃত্যু সনদও নেই।
অ্যাডভোকেট নবকুমার ঘোষ বলছেন, এরপর উচ্চ আদালত প্রশাসনের একজন শীর্ষ কর্মকর্তার মাধ্যমে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিতে পারে। সেই তদন্ত শেষ হলে, উচ্চ আদালত আদেশ জারি করতে পারেন যা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মৃত্যু সনদের সমতুল্য হবে।
নবকুমার ঘোষ আরও বলেন, এরপর ভারতের জাতীয় সংবাদপত্র এবং দূরদর্শন চ্যানেলগুলোতে বিজ্ঞাপন জারি করতে হবে। সেখানে ঘোষণা করা হবে, আনারকে আর কখনোই পাওয়া যাবে না।

