শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫, ঢাকা

ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ ও লাইটিং পণ্যে দেশীয় কোম্পানির আধিপত্য

ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ১৮ মে ২০২৪, ০৯:৩২ পিএম

শেয়ার করুন:

loading/img

বাংলাদেশের বাজারে ‘ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ ও লাইটিং পণ্যে’র ক্ষেত্রে দেশীয় কোম্পানিগুলোই আধিপত্য বিস্তার করে আছে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।

‘ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ ও লাইটিং পণ্যে’র ওপর সম্প্রতি ‘মার্কেটিং ওয়াচ বাংলাদেশ’ (এমডব্লিউবি) দেশব্যাপী একটি গবেষণা পরিচালনা করেছে। শনিবার (১৮ মে) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগে এক সংবাদ সম্মেলনে এই গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরা হয়।


বিজ্ঞাপন


গবেষণার ফলাফল ও দিকনির্দেশনা তুলে ধরেন মার্কেটিং বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ও ‘এমডব্লিউবি’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান ও অধ্যাপক ড. নাজমুল হোসাইন। এসময় উপস্থিত ছিলেন মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এবিএম শহীদুল ইসলাম।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গবেষণার আওতায় আনা পণ্যগুলো ছিল— সুইচ, সকেট, হোল্ডার, মাল্টি-প্লাগ, সার্কিট ব্রেকার, মিটার এবং বিভিন্ন হালকা পণ্য যেমন- এলইডি লাক্স, এলইডি টিউব, এলইডি প্যানেল, ব্র্যাকেট এলইডি, জিএলএস, এনার্জি এফিশিয়েন্সি বাল্ব, ইমার্জেন্সি লাইটিং অপশনস।

গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে, এটি একটি বড় ও অপার সম্ভাবনাময় শিল্প। বর্তমানে দেশজুড়ে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার খুচরা বিক্রেতা এবং ২৫০০ উদ্যোক্তাসহ মোট ৫ লাখেরও বেশি মানুষ এই শিল্পের সাথে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সম্পৃক্ত। দুই ক্যাটাগরির পণ্যের সম্মিলিত বাজার আকার প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ পণ্যের বাজার ৩,৩০০ কোটি টাকার মতো এবং লাইটিং পণ্যের বাজার ২,৭০০ টাকার মতো।

উভয় পণ্যের বাজার গত দুই দশক ধরে অব্যাহতভাবে বেড়েই চলেছে। ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ ও লাইটিং পণ্যের গড় প্রবৃদ্ধির হার যথাক্রমে প্রায় ১০%, ও ১৩%। আগামী দিনগুলোতে এই প্রবৃদ্ধির হার অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এই খাতটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় বড় খাত হিসাবে আবির্ভূত হবে।


বিজ্ঞাপন


তবে এই দুই ধরনের পণ্যের মোট মার্কেট শেয়ারের প্রায় অর্ধেক নন ব্যান্ডেড অর্থাৎ নিম্নমানের নকল ও অনুমোদনবিহীন পণ্য দখল করে আছে।

গবেষণায় দেখা যায়, দেশীয় কোম্পানিগুলোর মধ্যে সুপারস্টার গ্রুপ উভয় প্রকার পণ্যের ক্ষেত্রে বাজারে শীর্ষস্থান দখল করে আছে। গবেষণা অনুসারে, ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যাকসেসরিজ ব্যান্ডেড পণ্যের মার্কেট শেয়ারে সুপার স্টার ২৯ শতাংশ, ওয়ালটন ১৭ শতাংশ, ক্লিক ১৭ শতাংশ, এনার্জি প্যাক ৯ শতাংশ, ওসাকা শতাংশ এবং ব্লিঙ্ক, এমইপি ও লাক্সারি প্রত্যেকে ৩ শতাংশ করে বাজার দখল করে আছে। অন্যদিকে ব্রান্ডেড লাইটিং পণ্যের মার্কেট শেয়ারে সুপার স্টার ২৫.৫৯ শতাংশ, ক্লিক ১৩ শতাংশ, ওয়ালটন ১২ শতাংশ, ট্রান্সটেক ১০ শতাংশ, এনার্জি প্যাক ৮ শতাংশ এবং ফিলিপস ৭ শতাংশ বাজার দখল করে আছে।

এই শিল্পের অগ্রগতির পেছনে মূলত গত ২৫ বছরে ব্যাপক বিদ্যুতায়ন, অব্যাহত জিডিপি প্রবৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান আয়, দ্রুত ও পরিকল্পিত নগরায়ণ, গ্রামীণ উন্নয়ন এবং সরকারের গৃহীত সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ামক হিসাবে কাজ করেছে।

অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, দুর্দান্ত সম্ভাবনাময় এই শিল্পের প্রবৃদ্ধির জন্য গ্রে-মার্কেটের কার্যক্রম হ্রাসে সরকারের তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। একই সাথে দেশীয় কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করার জন্য সরকারের বিদ্যমান ট্যাক্স পদ্ধতির আমূল পরিবর্তন করতে হবে যাতে কোম্পানিগুলো কম ব্যয়ে পণ্যের কাঁচামাল আমদানি করতে পারে। পাশাপাশি এ সমন্ত শিল্পের ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ গড়ে তোলার জন্য সরকার ও ব্যবসায়ীদের সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি জনগণের মধ্যে নিরাপদ ও মানসম্মত বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি ব্যবহারে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন