সাধারণত এসএসসি বা এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের দিনে মিষ্টির দোকনগুলোতে ভিড় বেশি দেখা যেত। মিষ্টি কিনতে সিরিয়াল ধরে অপেক্ষা করতে হত। বিশেষ করে এসএসসির রেজাল্টের দিনে ভিড় হত বেশি। বছরের যে কয়েকদিন ভালো বেচাবিক্রি হয় তার মধ্যে অন্যতম এসএসসির ফলাফলের দিন। কিন্তু আজ ভিন্ন চিত্র রাজধানীর মিষ্টির দোকানগুলোতে। এসএসসির ফলাফল ঘোষণার পর দুপুর গড়ালেও তেমন ভিড় নেই মিষ্টির দোকানে। বিক্রেতারা বলছেন, এখন আর আগের মতো রেজাল্টের আমেজ নেই। দুই তিন বছর ধরে পরীক্ষার ফলাফলের দিনে দোকানে আগের মতো আর ভিড় হয় না।
রোববার (১২ মে) রাজধানীর বাড্ডা এলাকার কয়েকটি মিষ্টির দোকান ঘুরে দেখা যায় থরে থরে বাহারি আইটেমের মিষ্টি সাজানো থাকলেও খুব একটা ক্রেতা নেই। স্বাভাবিক দিনের মতোই দু-একজন করে আসছে-যাচ্ছে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেও চোখে পড়েনি কোনো এসএসসি ফল পাওয়া কোনো শিক্ষার্থী বা অভিভাবককে।
বিজ্ঞাপন
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিষ্টির দোকানের এক বিক্রেতা বলেন, রেজাল্টের দিনে একটা সময় শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা হাসিমুখে এসে কেজি কেজি মিষ্টি নিয়ে যেত। আমরাও আগে থেকেই সেভাবে প্রস্তুতি নিয়ে বেশি করে মিষ্টি বানাতাম। এখন আর তেমন নেই। রেজাল্টকে ঘিরে যে উৎসবের আমেজ তৈরি হতো সেটি মনে হয় হারিয়ে গেছে।
পাশেই আরেক দোকানদার বলেন, আপনারাই তো দেখতেছেন কি অবস্থা। অন্যান্য দিনের মতোই মিষ্টি বিক্রি স্বাভাবিক রয়েছে। কয়েকবছর আগেও রেজাল্ট ভালো হলে মিষ্টিমুখ করানোর জন্য যে উৎসবের আমেজ তৈরি হতো সেটি নাই। দুই তিন বছর ধরেই এই অবস্থা।
এই এলাকায় অনেক নামী-দামী ব্র্যান্ডের মিষ্টির দোকানের আউটলেট রয়েছে। প্রায় সবগুলোতেই একই অবস্থা দেখা যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর প্রায় অধিকাংশ এলাকাতেই একই অবস্থা।
এদিকে কয়েক বছরে মিষ্টির বা মিষ্টান্ন আইটেমের দাম বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ। সাড়ে তিনশ টাকার নিচে কোনো মিষ্টি নেই বললেই চলে। এছাড়াও রসগোল্লা, স্পঞ্জ, ছানার মিষ্টি চমচম কিনতে গুনতে হবে সাড়ে চারশ টাকার উপরে। রসমালাই বা একটু বাহারি আইটেমের মিষ্টি কিনতে গুনতে হবে পাঁচশ টাকার উপরে। যে ২-৩ বছর আগেও প্রায় অর্ধেক দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বিজ্ঞাপন
প্রসঙ্গত, রোববার সকালে চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। এ বছর নয়টি সাধারণ, মাদরাসা ও কারিগরি বোর্ডে গড় পাসের হার ৮৩.০৪ শতাংশ। এবার ঢাকা বোর্ডে পাসের হার ৮৯ দশমিক ৩২ শতাংশ, রাজশাহীতে ৮৯ দশমিক ২৫ শতাংশ, যশোরে ৯২ দশমিক ৩২ শতাংশ, কুমিল্লায় ৭৯ দশমিক ২৩ শতাংশ, চট্টগ্রামে ৮২ দশমিক ৮০ শতাংশ, বরিশালে ৮৯ দশমিক ১৩ শতাংশ, দিনাজপুরে ৭৮ দশমিক ৪০ শতাংশ, সিলেটে ৭৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ, ময়মনসিংহে ৮৪ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
এছাড়া মাদরাসা শিক্ষাবোর্ডে পাসের হার ৭৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ এবং কারিগরি বোর্ডে পাসের হার ৮১ দশমিক ৩৮। এবার যশোর বোর্ডে পাসের হার সবচেয়ে বেশি। আর সর্বনিম্ন পাসের হার সিলেট বোর্ডে।
টিএই/এএস

