রোববার, ৫ মে, ২০২৪, ঢাকা

বাসের ভেতরেও ‘আগুন’ ঝরে

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৩৯ পিএম

শেয়ার করুন:

বাসের ভেতরেও ‘আগুন’ ঝরে

রাজধানীসহ সারাদেশে চলছে তৃতীয় দফার টানা ‘হিট অ্যালার্ট’। তীব্র গরম ও হিটস্ট্রোকের ঝুঁকিতে বিপর্যস্ত জনজীবন। বিশেষ করে জীবিকার তাগিদে রাজধানীর লোকাল বাসে যাতায়াত করা যাত্রীদের যেন ত্রাহি অবস্থা। বাসের ফ্যানে গরম বাতাস, ছায়ার মধ্যেও অস্বস্তির তৈরি করছে। বাতাসের পরিবর্তে ফ্যান থেকে যেন আগুন ঝরছে।

সাধারণ অবস্থায় ঢাকার লোকাল বাসগুলোতে সচল ফ্যানগুলোর নিচে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের অবস্থান করতে দেখা যায়। গরম থেকে স্বস্তির আশায় ফ্যানের নিচে জটলা হয়ে দাঁড়ান তারা। তবে চলতি বছরের গরমে ফ্যান থেকে দূরে থাকতে পারলেই নিজেকে ভাগ্যবান ভাবছেন যাত্রীরা।


বিজ্ঞাপন


বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সরজমিনে রাজধানীর মহাখালী গুলিস্তান, বাড্ডা-যাত্রাবাড়ি রুটের একাধিক বাসে ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।

গুলিস্তান থেকে গাজীপুরগামী বলাকা পরিবহনের একটি বাসের মোট চারটি ফ্যানের মধ্যে তিনটি চালু অবস্থায় দেখা যায়। তবে অন্য সময়ের মতো ফ্যানের নিচে যাত্রী লক্ষ্য করা যায়নি। উল্টো দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের ফ্যান এড়িয়ে দাঁড়াতে দেখা গেছে। যাত্রীরা বলছেন, তীব্র গরমে বাসের ভেতর ভয়াবহ অবস্থা। মাথার উপর যেন জ্বলন্ত কড়াই রয়েছে। আর ফ্যান সেই তাপ নিচে নামাচ্ছে। ফলে ফ্যানের নিচে অধিক গরম ও অস্বস্তিকর অবস্থা।

4

মহাখালীর কাঁচাবাজারের উদ্দেশে বাসে উঠা যাত্রী জাহিদুল ইসলাম ঢাকা মেইলকে বলেন, গরমের মধ্যে দুপুর বেলা বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমাদের মতো কর্মজীবীদের পক্ষে তো তা সম্ভব হয় না। জীবিকার তাগিদে বের হতেই হয়। যথাসম্ভব ছায়ায় থাকার চেষ্টা করি। কিন্তু বাসে সেই ছায়াতেও অস্বস্তি। মনে হচ্ছে আজাবখানায় আছি। সিট সব ফুল থাকায় দাঁড়িয়ে আছি, কিন্তু মাথার উপর আগুন জ্বলছে মনে হচ্ছে। ফ্যান সেই আগুন নিচে নামাচ্ছে।


বিজ্ঞাপন


এ সময় কুর্মিটোলাগামী এক যাত্রীকে অজ্ঞান হয়ে যেতে দেখা যায়। বাসের সামনের সিটে বসা ওই যাত্রী গুলিস্তান থেকে উঠেছেন বলে জানায় গাড়িটির হেলপার। তখন অন্য যাত্রীরা মুখে ও মাথায় পানি ঢেলে তাকে সুস্থ করার চেষ্টা করেন।

একই অবস্থা অন্যান্য বাসেও। বাড্ডা থেকে গুলিস্তানগামী ভিক্টর ক্লাসিক বাসের সত্তরঊর্ধ্ব যাত্রী আব্দুল হালিম বলেন, বাসে উঠে সিট পাইনি। গরম থেকে বাঁচতে ফ্যানের নিচে দাঁড়িয়েছি। এখানে আরও বেশি গরম। উপর থেকে আগুন নামছে।

bus1

দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের মতো সিটে বসা যাত্রীদেরও স্বস্তি নেই। তীব্র ও ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল তারাও। বিশেষ করে যারা রোদের পাশে বসেছেন। 

যাত্রীদের মতো গরমে অতিষ্ঠ চালক ও তার সহযোগীও। বলাকা বাসের চালক গফুর মিয়া ঢাকা মেইলকে বলেন, যাত্রীরা তো কিছুক্ষণ পরেই বাস থেকে নেমে অফিসে বা বাসায় যাবে। আমরা তো সারাদিনই বাসে। মাথার উপর যে ফ্যান চলছে তাতে শরীর ঠান্ডা হয় না, উল্টো অস্বস্তি লাগে। কিন্তু বন্ধ করলেও অবস্থা খারাপ হয়ে যায়।

গফুরে সহকারী ঝলক বলেন, গরমে জান যায় যায় অবস্থা। এর মাঝে যাত্রীদের ভিড়ে ভাড়া তুলতে আরও কষ্ট হয়। সবার মেজাজ গরম। কথা বললেই চিল্লাপাল্লা লেগে যায়। 

এমএইচ/এএস

ঢাকা মেইলের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ
জনপ্রিয়

সব খবর