রমনা থেকে সাতরাস্তা যাওয়ার জন্য বের হয়েছিলেন ইমন রহমান। কিন্তু মগবাজার ফ্লাইওভারে ওঠেই গাড়ির জটে পড়েন। সেখানে আটকে থাকেন বেশকিছু সময় ধরে। অন্যদিকে আসার সময় সেই ভোগান্তি তাকে পোহাতে হয়নি। সাতরাস্তা থেকে মগবাজার আসার পথে ফ্লাইওভার ছিল পুরোপুরি ফাঁকা। ফলে স্বল্প সময়ে তাকে বহনকারী গাড়িটি মৌচাক মোড়ে নেমে পড়ে।
রমজানের প্রথম দিন কিছুটা ভোগান্তি আর স্বস্তির কথা এভাবে বলছিলেন বেসরকারি এই চাকরিজীবী। তার মতে, গেল কয়েকটি রমজানেও আজকের মতো ঢাকার চিত্র তিনি পাননি। তার মতে, ঢাকায় গাড়ির চাপ ছিল। তাও দুপুরের পর। বিকেল হতে সেটা কমে থাকে। তবে কিছু সড়কে ও ফ্লাইওভারে কোনো চাপই ছিল না। ফলে সাঁইসাঁই করে গাড়ি ছুটেছে গন্তব্যে।
বিজ্ঞাপন
মগবাজার, রমনা ও সাত রাস্তা ছাড়াও হাতিরঝিল, গুলশান এলাকাতেও একই চিত্র দেখা গেছে।
এবার আসন্ন রমজান মাসে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে নানা পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে ডিএমপি। তার মধ্যে বিকেল ৩ থেকে ৭টা পর্যন্ত বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হবে। সেই বিশেষ ব্যবস্থার সুফল প্রথম দিন কিছুটা মিললো কিনা তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে বেশির ভাগ মানুষই জানিয়েছেন, আজ ঢাকার বুকে কিছু সড়কে স্বস্তি মিললো, আবার কিছু সড়কে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে।
তবে ভিন্ন চিত্র ছিল কিছু সড়কে। তার মধ্যে গাবতলি, মিরপুর, ফার্মগেট, ধানমন্ডি ও রামপুরা সড়ক ছাড়াও যাত্রাবাড়ি এলাকায় গাড়ির চাপ ছিল।
বিজ্ঞাপন
সদরঘাট থেকে নিয়মিত পল্টন এলাকায় যাতায়াত করেন বাহার উদ্দিন। তিনি আজ সকালে পল্টন আসার সময় ও বিকেল চারটায় যাওয়ার সময় কোনো ধরনের গাড়ির জট বা চাপ অনুভব করেননি। তাকে বহনকারী বাসটি বিকেলে পল্টন মোড় থেকে যাত্রা শুরু করে ২০ মিনিটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে পৌঁছে। তার মতে, এত কম সময়ে তিনি কখনো ঢাকায় যাতায়াত করেননি। আজ ছিল ব্যতিক্রম। তিনি বলছিলেন, রমজানের প্রথম দিন হলেও পুরান ঢাকার বংশাল ও তাঁতিবাজারের সড়কে কোনো গাড়ির জট ছিল না। তবে মূল সড়ক ফাঁকা থাকলেও নগরীর বিভিন্ন গলিগুলোতে ছিল মানুষের ভিড়। অনেকে ইফতার সামগ্রী কিনতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। প্রতিটি অলিগলিতে বসেছে রকমারি ইফতারের দোকান।
অপরদিকে ধানমন্ডি ৩২, ১৮, জিগাতলা ও মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বেড়িবাঁধ পর্যন্ত গাড়ির জট থাকায় থমকে ছিল বিভিন্ন যানবাহন। তবে সংকর এলাকার দুই প্রধান সড়কে গাড়ির চাপ থাকলেও জট ছিল না।
এদিকে মহাখালী থেকে বিমানবন্দরের সড়কে তেমন চাপ ছিল না। অন্যদিনগুলোতে যানজটে নাকাল হলেও আজ স্বস্তি ছিল জনমনে।ফার্মগেট থেকে দুপুরের পর খুব সহজে বিমানবন্দর এলাকায় পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। অন্যদিকে আসার পথেও তেমন কোনো ঝক্কিঝামেলা ছিল না।
সোমবার (১১ মার্চ) এক অনুষ্ঠানে ডিএমপি কমিশনার ঘোষণা দিয়েছিলেন তারা রমজানে বিকেল ৩টা থেকে ৭টা পর্যন্ত বিশেষ ব্যবস্থা রাখবেন। একই সময়ে রাস্তায় তাদের বিশেষ ডিপ্লোমেন্ট থাকবে যাতে করে মানুষ ঘরে গিয়ে ইফতার করতে পারে। মার্কেটসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ট্রাফিক সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে ডিএমপির ট্রাফিক ও ক্রাইমের অফিসাররা।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, রমজানে মানুষ যেন বাসায় গিয়ে প্রিয়জনের সঙ্গে ইফতার করতে পারেন সে লক্ষ্যে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি ক্রাইম বিভাগও কাজ করবে। বিকেল ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত আমাদের বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। একই সময়ে রাস্তায় আমাদের বিশেষ ডিপ্লোমেন্ট থাকবে যাতে করে মানুষ ঘরে গিয়ে ইফতার করতে পারে। মার্কেটসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ট্রাফিক সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করবে আমাদের ট্রাফিক ও ক্রাইমের অফিসাররা।
হাবিবুর রহমান বলেন, আসন্ন রমজান মাসের আমাদের বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর মধ্যে সব বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ট্রাফিক।
তবে রমজানের প্রথম দিন নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে তেমন গাড়ি পার্কিং দেখা যায়নি।
এমআইকে/এমএইচটি